‘একজন মা গাইবান্ধার একটি ক্লিনিকে সন্তান জন্ম দিয়ে মেডিকেল বিল পরিশোধ করার জন্য ১৬ হাজার টাকায় তার সন্তানকে বিক্রি করেছেন।’ শনিবার একটি ইংরেজি দৈনিকে এমন খবর প্রকাশিত হলে তা আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হকের নজরে আসে। বিষয়টি নজরে আসার পরপরই তিনি তাৎক্ষণিকভাবে গাইবান্ধার জেলা প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করেন এবং উক্ত টাকা ফেরত দিয়ে নবজাতককে তার মায়ের কোলে ফিরিয়ে দেওয়ার অনুরোধ জানান।
আইনমন্ত্রীর অনুরোধে গতকালই গাইবান্ধা জেলা প্রশাসন নবজাতকে জেলার সাদুল্যাপুর উপজেলা থেকে উদ্ধার করে মা আঞ্জুলা বেগমের কোলে ফেরত দেয়। সেই সঙ্গে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে আঞ্জুলা বেগমকে ২০ কেজি চাল, ২ কেজি ডাল, ২ লিটার সয়াবিন তেল, একটি শাড়ী, একটি লুঙ্গি এবং নগদ দুই হাজার টাকা দেওয়া হয়।
এছাড়া ক্লিনিকের বিল পরিশোধ করার জন্য যে টাকা গ্রহণ করা হয়েছিল তা ফেরত দেওয়ার জন্য আজ (রোববার) আইনমন্ত্রীর ব্যক্তিগত তহবিল থেকে গাইবান্ধার জেলা প্রশাসন বরাবর ১৬ হাজার টাকা পাঠানোর ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
আজ আঞ্জুলা বেগমের বোনের ছেলে ছানারুল ইসলাম জানান, আঞ্জুলা বেগমের স্বামী শাহজাহান মিয়া ছোট বেলায় গাইবান্ধার সদর উপজেলার সোলাগাড়ী গ্রামে আসেন এবং সেখানেই বসবাস করতে থাকেন। এরপর একই গ্রামের আঞ্জুলা বেগমকে বিয়ে করেন। ইতোপূর্বে তাদের ২ ছেলে ও ১ মেয়ে সন্তান হয়। তাঁদের নিজস্ব কোন জমি ও বাড়ি নেই। শাহজাহান মিয়া অন্যের বাড়িতে কাজ করেন। স্ত্রী ও সন্তান সহ পাঁচ জনের পরিবারে খুব অভাব অনটন তাঁর।
গাইবান্ধার যমুনা ক্লিনিকের মালিক ফরিদুল হক সোহেল জানান, গত ১৫ সেপ্টেম্বর রাত সোয়া বারটার দিকে চতুর্থ সন্তান জন্মদানের জন্য আঞ্জুলা বেগম তাঁর ক্লিনিকে ভর্তি হন এবং রাত একটার দিকে সিজারের মাধ্যমে তিনি একটি পুত্র সন্তান জন্ম লাভ করেন। অনেক চেষ্টায় বিল পরিশোধ করে ১৭ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় ক্লিনিক থেকে রিলিজ নেন আঞ্জুলা।
Leave a reply