মিলারদের কারসাজিতে নীরবে বাড়ছে চালের দাম

|

দেশে চালের পর্যাপ্ত মজুদ থাকার পরও মিলার সিন্ডিকেট কারসাজি করে নীরবে চালের দাম বাড়াচ্ছে। সাতদিনে মিল পর্যায় প্রতি বস্তা (৫০ কেজি) চালের দাম সর্বোচ্চ ২০০ টাকা বাড়ানো হয়েছে। পেঁয়াজের পাশাপাশি চালের পর্যাপ্ত মজুদ থাকার পরও দাম বাড়ায় রাজধানীর পাইকারি ও খুচরা বাজারে প্রভাব পড়ছে। এছাড়া খুচরা বাজারে ভোজ্যতেল, মসুর ডাল, প্যাকেটজাত ময়দা, শুকনা মরিচ ও রসুন বাড়তি দরে বিক্রি হচ্ছে। নিত্যপণ্যের দাম বৃদ্ধিতে ভোক্তারা হিমশিম খাচ্ছে।

খাদ্য মন্ত্রণালয়ের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী (২১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত) দেশে খাদ্যশস্যের সরকারি মোট মজুদ ১৪ লাখ ১৮ হাজার টন। এর মধ্যে চাল ১১ লাখ ১৪ হাজার টন এবং গম ৩ লাখ ৪ হাজার টন। খাদ্য মন্ত্রণালয় বলছে দেশে খাদ্যশস্যের মজুদ সন্তোষজনক।

বুধবার রাজধানীর নয়াবাজার, মালিবাগ কাঁচাবাজার ও জিঞ্জিরা বাজারের খুচরা চাল বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, প্রতিকেজি মিনিকেট চাল বিক্রি হয়েছে ৫৬-৫৮ টাকা, যা সাতদিন আগে বিক্রি হয়েছে ৫৪-৫৫ টাকা। বিআর ২৮ চাল বিক্রি হয়েছে ৫০ টাকা, যা সাতদিন আগে বিক্রি হয়েছে ৪৬-৪৭ টাকা। মোটা চালের মধ্যে স্বর্ণা জাতের চাল প্রতিকেজি বিক্রি হয়েছে ৪৬-৪৭ টাকা, যা সাতদিন আগে বিক্রি হয়েছে ৪৫-৪৬ টাকা।

মালিবাগ কাঁচাবাজারের খালেক রাইস এজেন্সির মালিক ও খুচরা চাল বিক্রেতা মো. দিদার হোসেন বলেন, সবাই যখন পেঁয়াজের ঝাঁজে অতিষ্ঠ, ঠিক তখন মিলারদের সিন্ডিকেট নীরবে চালের দাম বাড়াচ্ছে। এ কারণে পাইকারি বাজারে দাম বেড়েছে। এর প্রভাব পড়েছে খুচরা বাজারেও। একই দিন রাজধানীর সর্ববৃহৎ পাইকারি আড়ত বাদামতলী ও কারওয়ান বাজারে পাইকারি চাল বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, পাইকারি পর্যায়ে প্রতি বস্তা (৫০ কেজি) মিনিকেট চাল বিক্রি হয়েছে ৫৪ টাকা, যা সাতদিন আগে বিক্রি হয়েছে ৫১-৫২ টাকা। বিআর ২৮ চাল বিক্রি হয়েছে ২৩৫০ টাকা, যা সাতদিন আগে বিক্রি হয়েছে ২২০০ টাকা। আর স্বর্ণা জাতের চাল বিক্রি হয়েছে ২২৫০ টাকা, যা সাতদিন আগে বিক্রি হয়েছে ২০৫০ টাকা।

কারওয়ান বাজারের আল্লাহর দান রাইস এজেন্সির মালিক ও পাইকারি চাল ব্যবসায়ী সিদ্দিকুর রহমান বলেন, নীরবে মিলাররা প্রতি বস্তা চালে ২০০ টাকা পর্যন্ত বাড়িয়েছে। পাইকারি বাজারে চালের দাম বেড়েছে। তিনি জানান, কোনো অজুহাত পেলেই মিলাররা দাম বাড়ায়। এবার সরকার বোরো ধান সংগ্রহ ঠিকমতো করতে পারেনি। মিলাররা যে যেভাবে পেরেছে ধান কিনেছে। তাই বাজার এখন তাদের নিয়ন্ত্রণে। এ কারণে মিলাররা সিন্ডিকেট করে সব ধরনের চালের দাম বাড়িয়েছে।

অন্যদিকে নওগাঁ, দিনাজপুর, বগুড়া অঞ্চলের মিল পর্যায়ে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এ দিন প্রতি বস্তা মিনিকেট চাল বিক্রি হয়েছে ২৭০০ টাকা, যা সাতদিন আগে বিক্রি হয়েছে ২৫০০ টাকা। নাজিরশাইল প্রতি বস্তা বিক্রি হয়েছে ২৬০০ টাকা, যা সাতদিন আগে বিক্রি হয় ২৩৫০ টাকা। বিআর-২৮ জাতের চাল বিক্রি হয়েছে ২৩৫০ টাকা, যা সাতদিন আগে বিক্রি হয়েছে ২১৫০ টাকা। এছাড়া মোটা চালের মধ্যে স্বর্ণা জাতের চাল বিক্রি হয়েছে ২২৫০ টাকা, যা সাতদিন আগে বিক্রি হয়েছে ২০২৫ টাকা।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক নওগাঁর এক মিল মালিক বলেন, চালের দাম কিছুটা বেড়েছে। কারণ কৃষকরা এখনও ধান ধরে রেখেছে। তাই মিল পর্যায়ে ধানের সরবরাহ কমেছে। এ কারণে একটু বেশি দর দিয়ে ধান কিনতে হচ্ছে। তাই দাম কিছুটা বাড়িয়ে বিক্রি করতে হচ্ছে।


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply