কুপ্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় ক্ষিপ্ত হয়েই গৃহবধূকে বিবস্ত্র করে নির্যাতন চালানোর কথা প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেছে গ্রেফতারকৃত দেলোয়ার ও তার সহযোগীরা।
সোমবার দুপুরে র্যাবের এক ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানানো হয়। র্যাব জানায়, ভূক্তভােগী নারীর সাথে তার স্বামীর বনিবনা না থাকার সুযোগকে কাজে লাগিয়ে মাদক ব্যবসায়ী দেলােয়ার ও তার ৩/৪ জন সহযােগী ওই নারীকে কুপ্রস্তাব দেয়। ভুক্তভোগী তাদের কুপ্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় ক্ষিপ্ত হয়ে তাকে বিবস্ত্র করে মারধর এবং শারিরীক নির্যাতন চালায় আসামিরা। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আসামিরা অপরাধের কথা স্বীকার করেছে।
র্যাব-১১ এর অধিনায়ক লে. কর্নেল খন্দকার সাইফুল আলম বলেন, ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকসহ বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়লে ভুক্তভোগী ওই নারী বাদি হয়ে একটি মামলা দায়ের করেন। পাশাপাশি ভিডিও ছড়িয়ে দেয়ার জন্যেও একটি মামলা করা হয়। এরপরই তদন্তে নামে র্যাব।
গতকাল রাত ২টা ৩০ মিনিটের সময়ে নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জ থানার চিটাগং রোড এলাকায় বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে দেলোয়ার বাহিনীর প্রধান দেলোয়ারকে একটি পিস্তল, ম্যাগজিন, এবং ২ রাউন্ড গুলিসহ গ্রেফতার করে র্যাব।
পরবর্তীতে তার দেয়া তথ্যর ভিত্তিতে ভোর ৫টার দিকে কামরাঙ্গীচরের একটা প্লাস্টিক কারখানা থেকে গ্রেফতার করা হয় প্রধান আসামি মো. নুর হোসেন ওরফে বাদলকে।
আসামিদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, গত ২ সেপ্টেম্বর রাতে গ্রেফতারকৃত দেলোয়ার বাহিনীর কয়েকজন মিলে ভুক্তভোগীর ঘরে প্রবেশ করে এবং তাকে বিবস্ত্র করে নির্যাতন চালায়। এসময় তাদেরই এক সহযোগী এটির ভিডিও ধারণ করে। এরপরে ভিডিও দেখিয়ে ওই নারীর কাছে টাকা দাবি করে ও তাকে কুপ্রস্তাব দেয়।
পরে গত ৪ অক্টোবর ওই ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে দেশব্যাপী চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। জানা যায়, দেলোয়ার বাহিনী ওই এলাকায় দীর্ঘদিন যাবত নানা ধরণের সহিংসতা, চাঁদাবাজিসহ নানান সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের সাথে জড়িত। সে এলাকায় একজন অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী হিসেবেও পরিচিত।
র্যাব আরও জানায়, হাইকোর্টের আদেশে ওই ভিডিওটি সামাজিক মাধ্যম থেকে সরিয়ে ফেলার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এছাড়া এর সাথে সংশ্লিষ্ট সকলকে আইনের আও্তায় আনার জন্য চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে র্যাব। এর মধ্যে প্রধান আসামি নুর হোসেনকে নোয়াখালির বেগমগঞ্জ থানায় প্রেরণ করা হবে। আর অস্ত্রসহ গ্রেফতার দেলোয়ারকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ শেষে সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় প্রেরণ করা হবে।
ভিডিওটি এতদিন পরে কেন আপলোড করা হলো এমন প্রশ্নের উত্তরে র্যাব জানায়, আমরা গত রাতেই তাদের গ্রেফতার করেছি। ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদে পরবর্তীতে বিশদ জানা যাবে। তবে এতদিন পরে ভিডিওটি ভাইরাল করার পেছনে কাদের হাত আছে সে বিষয়ে আমরা এখনও পুরোপুরি নিশ্চিত নই।
ঘটনার দিন সেখানে কতজন উপস্থিত ছিলো এমন প্রশ্নে র্যাব জানায়, নির্দিষ্ট কোন তথ্য সে বিষয়ে এখনও জানা যায়নি। তবে মামলার এজাহারে নয় জনের নাম উল্লেখ আছে। আমরা পূর্ণ জিজ্ঞাসাবাদ শেষে এটা জানাবো।
মামলার এজাহারে দেলোয়ারের নাম নেই, দেলোয়ার কীভাবে সেখানে সম্পৃক্ত ছিলো এমন প্রশ্নের উত্তর র্যাব জানায়, দেলোয়ার ওই এলাকার চিহ্নিত সন্ত্রাসী। এছাড়া তাকে অস্ত্রসহ গ্রেফতার করা হয়েছে। তবে ভিডিও দেখে যাদের চিহ্নিত করা গেছে তারা সবাই দেলোয়ার বাহিনীর লোক।
Leave a reply