বিখ্যাত ব্যক্তিত্ব ও ঐতিহাসিক দিনকে স্মরণ করার জন্য গুগল তাদের হোমপেজে প্রকাশ করে বিশেষ লোগো, যাকে বলা হয় ডুডল। বৃহস্পতিবার জন্মদিনে ডুডলে স্থান পেয়েছেন অবিভক্ত বাংলার প্রথম মুসলিম নারী চিকিৎসক অধ্যাপক জোহরা বেগম কাজী।
সার্চ ইঞ্জিন জায়ান্টটির হোমপেজে প্রবেশ করলেই দেখা যাচ্ছে বিশেষ ডুডলটি। এতে গুগলের অক্ষরগুলোকে সাজানো হয়েছে বিশেষভাবে। যেখানে দেখা যাচ্ছে জোহরা বেগম কাজীর গলায় স্টেথসস্কোপ ও মাথার ওপর গাছের ছায়া। গায়ে জড়ানো হলুদ রঙের একটি পোশাক।
ডা. জোহরা বেগম কাজী ১৯১২ সালের ১৫ অক্টোবর ব্রিটিশ ভারতের মধ্য প্রদেশের রাজনান গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা ডা. কাজী আব্দুস সাত্তার ও মায়ের নাম মোসাম্মদ আঞ্জুমান নেসা। তার আদি পৈতৃক নিবাস বাংলাদেশের মাদারীপুর জেলার কালকিনি থানার গোপালপুর গ্রামে।
জোহরা কাজী ১৯২৯ সালে আলিগড় মুসলিম মহিলা স্কুল থেকে প্রথম বাঙালি মুসলিম হিসেবে এসএসসি পাশ করেন। ২৩ বছর বয়সেই দিল্লির লেডি হাডিং মেডিকেল কলেজ থেকে ১৯৩৫ সালে প্রথম শ্রেণিতে প্রথম স্থান অধিকার করে এমবিবিএস পাস করেন। অর্জন করেন ভাইসরয় পদক।
এমবিবিএস ডিগ্রি লাভ করার বছরেই জোহরা বেগম কাজী কর্মজীবনে প্রবেশ করেন। প্রথমে ইয়োথমাল ওয়েমেন্স (পাবলিক) হাসপাতালে যোগ দেন। এরপর বিলাসপুর সরকারি হাসপাতালে যোগ দেন। পরবর্তীকালে মহাত্মা গান্ধীর সেবাগ্রামে অবৈতনিকভাবে কাজ করেন। এছাড়া তিনি ভারতের বিভিন্ন বেসরকারি ও সরকারি প্রতিষ্ঠানে কাজ করেছেন।
১৯৪৭ সালে দেশ ভাগের পর তিনি ঢাকায় চলে আসেন। পরের বছর ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যোগ দেন। সেখানে কর্মরত অবস্থায় অবসর সময়ে তিনি সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে অনারারি কর্নেল হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন। মিটফোর্ড মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গাইনোকলজি বিভাগের প্রধান ও অনারারি প্রফেসর ছিলেন জোহরা বেগম কাজী। ১৯৭৩ সালে চাকরি থেকে অবসর নেওয়ার পর বেশ কিছু বছর হলিফ্যামিলি রেডক্রিসেন্ট হাসপাতালে কনসালট্যান্ট হিমেবে চিকিৎসা সেবা প্রদান করেন। পরবর্তীকালে তিনি বাংলাদেশ মেডিকেলে অনারারি অধ্যাপকের দায়িত্ব পালন করেন।
জোহরা বেগম কাজী তখমা-ই-পাকিস্তান (১৯৬৪), একুশে পদক (২০০৮) ও বেগম রোকেয়া পদক (২০০২) অনেক স্বীকৃতি ও পুরস্কার পেয়েছেন।
তিনি ২০০৭ সালের ৭ নভেম্বর মারা যান।
Leave a reply