নবীনগরে যুবদলের সভায় পুলিশের লাঠিচার্জে আহত ২৫

|

ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি:

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলায় পুলিশের বাধাঁয় পণ্ড হয়ে গেছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী যুবদলের নবীনগর উপজেলা কমিটি সাংগঠনিক সভা। এই নিয়ে যুবদল নেতাকর্মীদের সঙ্গে পুলিশের ধাওা-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে।

শুক্রবার বিকেলে উপজেলার আলীয়াবাদ গ্রামে এই ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় যুবদলের কেন্দ্রীয় কমিটি সহ-সভাপতি টিম প্রধান জাকির হোসেন সিদ্দিকী ও জেলা যুবদলের সভাপতি শামীম মোল্লা, সহ-সভাপতি রাশেদুল হক রাশেদ, তাজুল ইসলাম বাবুল, সাধারণ সম্পাদক ইয়াছিন মাহমুদসহ অন্তত ২৫ জন নেতাকর্মী আহত হয়েছে বলে দাবি উপজেলা যুবদলের।

পুলিশের ব্যাপক মারধর করার কারণে সাংগঠনিক সভাটি ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়।

জানা যায়, জেলার নবীনগর উপজেলা যুবদলের সাংগঠনিক কর্মকাণ্ডকে চাঙ্গা করার লক্ষে উপজেলা যুবদলের আহবায়ক মফিজুর রহমান মুকুলের নেতৃত্বাধীন একটি গ্রুপ বিএনপির দলীয় কার্যালয়ে এবং উপজেলা যুবদলের এক নম্বর যুগ্ম আহবায়ক আশরাফ হোসেন রাজুর নেতৃত্বাধীন অপর গ্রুপটি নবীনগর মহিলা কলেজে পৃথক দু’টি সাংগঠনিক সভা আহবান করে। কিন্তু বৃহষ্পতিবার রাতে যুবদলের কেন্দ্রীয় নেতাদের উপস্থিতিতে স্থানীয় জেলা পরিষদ ডাক বাংলোতে পুলিশি বাঁধায় আজকের সভা করা নিয়ে নেতাকর্মীদের মাঝে উত্তেজনা দেখা দেয়।

যুব দলের নেতাকর্মীরা জানান, নবীনগর উপজেলা যুবদলের সম্মেলনকে কেন্দ্র করে শুক্রবার সকালে উপজেলা যুবদলের সাংগঠনিক সভা ডাকা হয়। এই সভায় যোগ দিতে বৃহস্পতিবার রাতে যুবদলের কুমিল্লা অঞ্চলের সাংগঠনিক টিমের দায়িত্বে থাকা বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী যুবদলের কেন্দ্রীয় কমিটি সহ-সভাপতি জাকির হোসেন সিদ্দিকীর নেতৃত্বে ঢাকা থেকে একটি টিম আসে। কিন্তু অনুমতি না নেয়ার অজুহাতে নবীনগর থানা পুলিশ সভা করতে বাঁধা দেয়।

পুলিশের বাঁধার পর যুবদলের দ্বিধা বিভক্ত নেতাকর্মীরা দিনভর ঘরোয়া বৈঠক শেষে বিকেলে পৌর এলাকার আলীয়াবাদ গ্রামে সাবেক বিএনপি নেতা মরহুম মদন মিয়া মেম্বারের বাড়িতে দুই গ্রুপ একত্রিত হয়ে কেন্দ্রীয় নেতাদের উপস্থিতিতে সাংগঠনিক সভায় মিলিত হয়।

খবর পেয়ে বিপুল সংখ্যক পুলিশ উপস্থিত হয়ে ব্যাপক লাঠিচার্জ শুরু করে। মুহুর্তের মধ্যে সভায় অংশ নেয়া নেতাকর্মীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়। এসময় শুরু হয় পুলিশ ও যুবদলের নেতাকর্মীদের মধ্যে ব্যাপক ধাওয়া, পাল্টা ধাওয়া।

মুহুর্তের মধ্যে সমস্ত ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে পড়ে। এসময় পুলিশ লাঠিচার্জ শুরু করে। একপর্যায়ে পুলিশের সঙ্গে যুবদল নেতাকর্মীদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া হয়। এ সময় যুবদল নেতাকর্মীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল ছুঁড়তে থাকে। এ ঘটনায় যুবদলের অন্তত ২৫ জন নেতাকর্মী আহত হয়।

উপজেলা যুবদলের আহবায়ক মফিজুর রহমান মুকুল বলেন, কোন সভা করিনি। কিন্তু পুলিশ আমাদের কর্মীদেরকে বেধড়ক পেটায়। এতে কেন্দ্রীয় নেতা জাকির হোসেন সিদ্দীকিসহ ও জেলা ও উপজেলার আমাদের কমপক্ষে ২৫ জন কর্মী আহত হয়েছেন। পুলিশের হামলায় সাবেক বিএনপি নেতা মরহুম মদন মিয়া মেম্বারের বাড়ি লণ্ডভণ্ড হয়ে যায়। এসময় উত্তেজিত যুবদল কর্মীরা পুলিশের একটি গাড়ি ভাংচুর করে।

জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক ইয়াছিন মাহমুদ বলেন, আমরা শান্তিপূর্ণভাবে সাংগঠনিক সভা করতে চেয়েছিলাম। কিন্তু পুলিশের বাঁধায় করতে পারিনি। বিকেলে আমাদের এক নেতার বাসায় বসে কারা কারা প্রার্থী-তাদের তালিক তৈরি করার সময় পুলিশ এসে অতর্কিতভাবে হামলা করে।

নবীনগর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) রুহুল আমীন বলেন, সভা করার কোন অনুমতি না থাকার পরও এই করোনাকালে যুবদলের নেতারা বিকেলে একটি বাড়িতে সাংগঠনিক সভা করায় পুলিশ বাঁধা দিয়েছে।

তবে নবীনগর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মকবুল হোসেন বলেন, গোপনে এক বাড়িতে তারা (যুবদল নেতাকর্মী) বসছিল। পুলিশ নিরাপত্তার স্বার্থে সেখানে যায়। পুলিশ দেখেই তারা ছত্রভঙ্গ হয়ে সেখান থেকে চলে যায়।

এদিকে খবর পেয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা বিএনপির সভাপতি হাফিজুর রহমান মোল্লা কচি ও সাধারণ সম্পাদক জহিরুল হক খোকনসহ বিএনপিও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা আহতদের দেখতে হাসপাতালে ছুটে যান।

এসময় জেলা বিএনপি অভিযোগ করে বলে, পুলিশ অতর্কিতভাবে আমাদের নেতাকর্মীদের উপর হামলা চালায়। এ সময় লাঠিচার্জ ও গুলিবর্ষণ করলে কমপক্ষে ২৫ জন নেতাকর্মী আহত হয়।


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply