কক্সবাজার প্রতিনিধি :
সদ্য ঘোষিত কক্সবাজার জেলা ছাত্রলীগের কমিটিকে বিতর্কিত, অবাঞ্ছিত ও পকেট কমিটি আখ্যা দিয়ে বুধবার জেলা ব্যাপী সকাল সন্ধ্যা হরতালের ডাক দিয়েছে পদবঞ্চিত ছাত্রলীগের নেতা কর্মীরা। সোমবার (২ নভেম্বর) রাতে আনুষ্ঠানিকভাবে তারা এই হরতাল ডেকেছে।
হরতালকে স্বতঃস্ফূর্তভাবে সফল করতে সকল স্তরের নেতাকর্মীদের আহ্বান জানিয়েছেন গত কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মারুফ ইবনে হোসাইন।
মারুফ ইবনে হোসাইন বলেন, জনদুর্ভোগ আমরা চাইনি। কিন্তু পরিস্থিতি বাধ্য করেছে। তিনি বলেন, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ দক্ষিণ এশিয়ার বৃহত্তম ছাত্র সংগঠন। এই সংগঠনে অনিয়ম অনুপ্রবেশ করলে ভবিষ্যৎ রাজনীতি নেতৃত্ব শূন্য হয়ে পড়বে।
এসময়, প্রধানমন্ত্রীর ও ছাত্রলীগের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতাদের নির্দেশনা না পাওয়া পর্যন্ত ঘোষিত নতুন কমিটির বিরুদ্ধে আন্দোলন চালিয়ে যাবে বলেও জানিয়েছে বিক্ষুব্ধ ছাত্রলীগ নেতারা।
সূত্র মতে, প্রায় ৬ বছরের মাথায় সোমবার (২ নভেম্বর) কক্সবাজার জেলা ছাত্র লীগের নতুন কমিটি ঘোষণা দেন কেন্দ্রীয় সংসদের সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় ও সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য। এতে বর্তমান কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক সাদ্দাম হোসাইন সভাপতি এবং শিক্ষা ও পাঠচক্র বিষয়ক উপ-সম্পাদক আবু মোঃ মারুফ আদনান সাধারণ সম্পাদক মনোনীত হয়েছেন। ১৪ সদস্য বিশিষ্ট কমিটিতে সহ-সভাপতি হিসেবে রয়েছেন মোঃ মইন উদ্দিন, কাইসার উল আলম মুন্না চৌধুরী, বোরহান উদ্দিন খোকন ও নরিমা জাহান। যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পদে আনোয়ার হোসেন, শাখাওয়াত হোসেন, সাজ্জাদুল হক ও মোঃ শওকত হোসেন।
সাংগঠনিক সম্পাদক পদে চারজন রাখা হয়েছে। তারা হলেন- ওয়াসিফ কবির, কামারুজ্জামান হিরু, এহসানুল হক মিলন ও গাজী নাজমুল হক।
এই কমিটি ঘোষণার পরপরই বিক্ষোভে ফেটে পড়ে পদবঞ্চিত নেতাকর্মীরা। সোমবার সন্ধ্যায় কক্সবাজার শহরের ফজল মার্কেট এলাকায় টায়ার জ্বালিয়ে প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ মিছিল করে পদ বঞ্চিতরা। মারুফ ইবনে হোসাইন ও মইন উদ্দিনের নেতৃত্বে এই বিক্ষোভ মিছিল করা হয় বলে জানা গেছে।
তাছাড়া ঘোষিত কমিটিকে অবৈধ ও অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেছেন কক্সবাজার জেলা ছাত্রলীগের সদ্য বিদায়ী সভাপতি ইশতিয়াক আহমেদ জয় ও সাধারণ সম্পাদক (ভারপ্রাপ্ত) মোর্শেদ হোসাইন তানিম।
২০১৪ সালের ১৩ ডিসেম্বর কক্সবাজার সাংস্কৃতিক কেন্দ্রে জেলা ছাত্রলীগের দ্বি-বার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সম্মেলনের একমাস পর ২০১৫ সালের ১০ জানুয়ারি ইশতিয়াক আহমেদ জয়কে সভাপতি ও ইমরুল হাসান রাশেদকে সাধারণ সম্পাদক করে একটি কমিটি ঘোষণা করা হয়। সাধারণ সম্পাদক ইমরুল হাসান রাশেদ ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ার প্রায় ৬মাস পর ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পান প্রথম যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মোরশেদ হোসেন তানিম।
২০১৯ সালের বছরের ২০ সেপ্টেম্বর জেলা ছাত্রলীগের সম্মেলনের তারিখ ঘোষণা করেন তৎকালীন কেন্দ্রীয় সভাপতি রেজুয়ানুল হক চৌধুরী শোভন এবং সাধারণ সম্পাদক গোলাম রব্বানী। কেন্দ্রীয় সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছিল, কক্সবাজার জেলা ছাত্রলীগ নির্দিষ্ট তারিখে সম্মেলন করতে ব্যর্থ হলে কমিটি বিলুপ্ত বলে গণ্য হবে। কিন্তু হঠাৎ কেন্দ্রীয় কমিটির দায়িত্ব থেকে শোভন-রাব্বানী অব্যাহতি নেওয়ার কারণে সেবারও সম্মেলন করা সম্ভব হয়নি।
Leave a reply