গাইবান্ধা প্রতিনিধি:
গাইবান্ধায় স্ত্রীর দায়ের করা যৌতুকের মামলায় পুলিশ কনস্টেবল স্বামী নবীদুল ইসলামকে এক বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একইসাথে তাকে পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা ও অনাদায়ে এক মাসের কারাদণ্ডের আদেশ দেয়া হয়।
রোববার দুপুরে গাইবান্ধার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক উপেন্দ্র চন্দ্র দাস আসামি নবীদুল ইসলামের অনুপস্থিতিতে এ রায় ঘোষণা করেন।
দণ্ডপ্রাপ্ত নবীদুল ইসলাম রাজশাহী রেঞ্জে পুলিশ সদস্য (কনস্টেবল) হিসেবে কর্মরত। তার বাড়ি গাইবান্ধার ফুলছড়ি উপজেলার মধ্য কুড়িয়া গ্রামে। নবীদুল ওই গ্রামের মৃত রফিকুল ইসলামের ছেলে।
বিষয়টি নিশ্চিত করে বাদিপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, ২০১৭ সালের ২ সেপ্টেম্বর নবীদুল ইসলাম ফুলছড়ির পূর্ব ছালুয়া গ্রামের আকবর আলীর মেয়ে লিপি আক্তারকে বিয়ে করেন। পারিবারিকভাবে বিয়েতে সাত লাখ টাকা দেনমোহর নির্ধারণ করা হয়।
কিন্তু বিয়ের কিছুদিন পর তার বাবার কাছ থেকে যৌতুকের টাকা নিয়ে দেওয়ার জন্য নবীদুল ইসলাম স্ত্রী লিপিকে চাপ দেন। লিপির বাবার যৌতুক দিতে অস্বীকার করলে প্রায়ই স্ত্রী লিপিকে মারধরসহ নির্যাতন করতো নবীদুল। পরে নির্যাতন সইতে না পেরে বাবার বাড়িতে চলে আসে লিপি বেগম।
এ নিয়ে ২০১৮ সালের ১৪ জানুয়ারি নবীদুল ইসলামের বিরুদ্ধে নির্যাতন ও যৌতুক আইনে ফুলছড়ি আমলি আদালতে মামলা করেন স্ত্রী লিপি বেগম। মামলায় পুলিশ কনস্টেবল নবীদুল ২০১৯ সালের ৬ মার্চ আদালতে আত্মসমর্পণ করলে বিচারক তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
পরবর্তীতে ছয়দিন কারাভোগের পর দেনমোহরের সাত লাক্ষ টাকা পরিশোধের শর্তে নবীদুলকে জামিন দেন আদালত।
অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর হোসেন আরও জানান, আদালতের বেঁধে দেয়া সময়ে দেনমোহরের টাকা পরিশোধ করেনি নবীদুল ইসলাম। এমনকি নবীদুল আর আদালতেও হাজিরা দেননি। এরপর বাদিসহ স্বাক্ষীদের সাক্ষ্য প্রমাণের ভিত্তিতে আদালতে কয়েক দফা শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। দীর্ঘ শুনানি শেষে আদালত রোববার এ মামলায় আসামি নবীদুলকে এক বছরের কারাদণ্ডের আদেশ দেন। একই সঙ্গে তাকে পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও এক মাসের কারাদণ্ডের আদেশ দেন বিচারক।
রায় ঘোষণার সময় আসামি নবীদুল ইসলাম আদালতে অনুপস্থিত থাকায় তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন আদালত। গ্রেফতারের পর থেকে তার বিরুদ্ধে সাজার মেয়াদ শুরু হবে বলেও জানান অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর হোসেন।
Leave a reply