ঘটনাটি বেশিদিন আগের নয়; এক বছরের জন্য নিষিদ্ধ হলেন বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান। এমন অপ্রত্যাশিত খবরে স্তব্দ পুরো বাংলাদেশ। একদিকে দলের সেরা খেলোয়াড়কে হারানোর শূন্যতা; অন্যদিকে বড় প্রশ্ন, কে সামলাবেন টেস্ট ও টি-টোয়েন্টির অধিনায়কত্বের দায়িত্ব? এমন সংকটে ত্রাতা হয়ে দলের হাল ধরতেই পারতেন মুশফিকুর রহিম। বিসিবিও চেষ্টার ত্রুটি করেনি; তবুও মন গলেনি মুশির। দলের দায়িত্ব নেয়ার প্রস্তাবে সরাসরি না করে দেন মিস্টার ডিপেন্ডেবল।
কোনো উপায়ন্ত না দেখে মুমিনুল হককেই দায়িত্ব দেয়া হয় টেস্ট দলের। প্রথমবারের মতো গোলাপি বলে দিবারাত্রির টেস্টে ভারতের বিপক্ষে দাঁড়াতেই পারেনি বাংলাদেশ। এই হারের দায় হয়তো মুশফিকের নয়, তবে এমন কঠিন সফরে মুমিনুলের মতো তরুণের কাঁধে গুরু দায়িত্ব তুলে দেয়ার পেছনে যে বড় ভূমিকা রেখেছে মুশফিকের সেই প্রত্যাখ্যান!
এরপরই ঢাকা লিগে আবাহনীর দায়িত্ব নিয়েছিলেন মুশফিক। এতেই ক্রিকেট পাড়ায় শুরু হয় নতুন গুঞ্জন। তবে কি জাতীয় দলের দায়িত্বের চাইতে একটি ক্লাবের দায়িত্ব নেয়াই বেশি গুরুত্বপূর্ণ বা সম্মানের মনে করছেন মুশি? নাকি এর পেছনে কাজ করছে গভীর কোনো অভিমান?
প্রিমিয়ার লিগে অধিনায়কত্বে ফিরতে দেখেই হয়তো প্রেসিডেন্টস কাপে মুশফিককে একটি দলের দায়িত্ব দিতে চেয়েছিল বিসিবি কিন্তু সে প্রস্তাবও ফিরিয়ে দেন এই উইকেট কিপার ব্যার্টসম্যান। প্রেসিডেন্টস কাপে নাজমুল হোসেন শান্তর দলে খেলেছিলেন একজন সাধারণ খেলোয়াড় হিসেবেই।
মঙ্গলবার থেকে শুরু হতে যাওয়া বঙ্গবন্ধু টি-টোয়েন্টি কাপ ক্রিকেটে আবারও অধিনায়কের ভূমিকায় মুশি। এবার দায়িত্ব নিয়েছেন ঢাকা দলের। এতেই আবারও গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে, তাহলে কি জাতীয় দলের হয়ে অধিনায়কত্বের বিষয়টি নতুন করে ভাবছেন মুশি?
এমন গুঞ্জন উড়িয়ে দিয়েছেন মুশফিক। গণমাধ্যমে নিজের অবস্থান ব্যাখ্যা করার চেষ্টা করেছেন এই সুপারস্টার। বলেছেন, জাতীয় ক্রিকেট দলের অধিনায়ক হবার কোনো সুযোগ আর নেই তার সামনে। যদি জুনিয়র বা যাদের সামনে জাতীয় দলের নেতৃত্ব দেয়ার সম্ভাবনা রয়েছে তাদের দিয়ে এই ধরনের ফ্রাঞ্চাইজি লিগগুলোতে অধিনায়কত্ব করানো হয় তাহলে সেটি ভবিষ্যতে জাতীয় দলের জন্য ভালো হবে।
তাহলে এই লিগে তিনি কেনো হলেন ঢাকার অধিনায়ক? এমন প্রশ্নের জবাবে মিস্টার ডিপেন্ডেবল বলেছেন, টিম ম্যানেজমেন্ট চেয়েছে বলেই ক্যাপ্টেনের দায়িত্ব নিয়েছি। চেষ্টা করবো অধিনায়কের সব দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করতে।
মুশফিকের এমন ব্যাখ্যায় অবশ্য মিলছে না সব প্রশ্নের উত্তর। বিসিবির প্রস্তাব সরাসরি প্রত্যাখ্যান করলেও করপোরেট ব্যবস্থাপনায় থাকা দলগুলোর প্রস্তাব তিনি বিনাবাক্যে মেনে নিচ্ছেন- আসল কারণ কী? ঘুরে ফিরেই আসছে সেই অভিমান তত্ত্বের কথা। মুশি যে ভীষণ আবেগী সেটি কার না জানা?
অবশ্য, নিন্দুকেরা একে মুশির দ্বিচারিতা হিসেবেই দেখছেন। তাদের ব্যাখ্যা, সাকিবের অবর্তমানে জাতীয় দলে অধিনায়কত্ব পেলেও তা দীর্ঘদিন ধরে রাখা মুশির জন্য কষ্টই হতো। স্বল্প মেয়াদে দায়িত্ব নিয়ে কোনো ধরনের ঝুঁকি নিতে চাননি তিনি। কিন্তু করপোরেট লিগের হিসেব আলাদা, সেখানে অধিনায়কত্বে ঝুঁকি কম, লাভ বেশি!
Leave a reply