সম্প্রতি যে ১৩টি দেশের নাগরিকদের ভিসা দেওয়ার ক্ষেত্রে সংযুক্ত আরব আমিরাত বিধিনিষেধ আরোপ করেছে তার মধ্যে প্রায় সবগুলোই মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ। এই নিষেধাজ্ঞা নিয়ে আলোচনা চলছে এমন এক সময়, যখন বৃহস্পতিবার দেশটির সঙ্গে ইসরায়েলের সরাসরি বিমান যোগাযোগ প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। এমনটাই উঠে এসেছে বিবিসি বাংলার এক বিশ্লেষণি প্রতিবেদনে।
রয়টার্স জানায়, ১৩টি দেশের নাগরিকদের জন্য আমিরাতে ভিসা নিষেধাজ্ঞা শুধু ভ্রমণ ভিসার বেলায় নয় বরং সব ধরণের ভিসার ক্ষেত্রে এ নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।
আমিরাতের ভিসা নিষেধাজ্ঞার আওতায় থাকা দেশগুলো হলো ইরান, তুরস্ক, সিরিয়া, সোমালিয়া, আলজেরিয়া, কেনিয়া, ইরাক, লেবানন, পাকিস্তান, তিউনিসিয়া, আফগানিস্তান, লিবিয়া ও ইয়েমেন। এর মধ্যে কেনিয়া ছাড়া প্রত্যেকটি দেশই মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ। কিছু কিছু দেশের সঙ্গে রয়েছে ইরানের সঙ্গে খুবই বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক।
তবে কোন প্রেক্ষিতে সংযুক্ত আরব আমিরাত এই নিষেধাজ্ঞা সে ব্যাপারে আনুষ্ঠানিকভাবে কিছুিই জানায়নি দেশটির সরকার।
নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা ধারণা করছেন, এর পেছনে হয়তো নিরাপত্তা সংক্রান্ত উদ্বেগ কাজ করছে। কারণ এমন সব দেশের বিরুদ্ধে ভিসা নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছে যাদের বেশির ভাগ মধ্যপ্রাচ্যে ইরানের ঘনিষ্ঠ মিত্র বলে পরিচিত।
এছাড়াও এই ১৩টি দেশের মধ্যে ১১টি দেশ ইসরায়েলের সঙ্গে সংযুক্ত আরব আমিরাতের সম্পর্ক স্বাভাবিকীকরণের সমালোচনা করেছে। ফলে নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা ধারণা করছেন ইসরায়েলি পর্যটক ও ইসরায়েলি বাণিজ্যিক সংস্থাগুলোর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতেই এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে আমিরাত সরকার।
নিরাপত্তা বিশ্লেষক জেনারেল মুনীরুজ্জামান বিবিসি বাংলাকে বলেন, অনেকেই ধারণা করছেন, এই সিদ্ধান্তের পেছনে ইসরায়েলের একটা প্রভাব আছে। অতি সম্প্রতি ইউএই যখন ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপন করেছে, তারপর থেকে তাদের সম্পর্ক খুব দ্রুত গভীর হচ্ছে। এক্ষেত্রে ইসরায়েল ইউএইর ওপর প্রভাব বিস্তার করে তাদের সুনজরে নেই এমন দেশের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা করাচ্ছে কি না, সেটা একটা সম্ভাবনা। তবে সুনির্দিষ্টভাবে কোন কিছু বলা সম্ভব নয়।
ইউএই যে ইসরায়েলের সঙ্গে কেবলমাত্র কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন করেছে তা নয়। একই সঙ্গে তারা বিমান চলাচল, পর্যটন, নিরাপত্তা, ব্যবসা-বাণিজ্য এবং দুই দেশের নাগরিকদের ভিসা ছাড়া পরস্পরের দেশে ভ্রমণের মতো সহযোগিতার দিকে যাচ্ছে।
ইসরায়েল মনে করছে, যদি আমিরাতে সঙ্গে সম্পর্কের ক্ষেত্রে তারা সাফল্য দেখাতে পারে, তাহলে অন্যান্য মুসলিম দেশকেও তারা আকৃষ্ট করতে পারবে। বিশেষ করে যদি অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে এই সম্পর্ক সফল হয়।
মুনীরুজ্জামান আরও বলেন, ইরানকে একঘরে করার জন্য ইসরায়েল সব সময় কাজ করে এসেছে। যেখানেই সম্ভব সেখানেই তাদের এক ঘরে করছে।
Leave a reply