অভিসংশিত হচ্ছেন কি প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প? মেয়াদ পূর্ণের মাত্র ১৩ দিন আগে জোরালো হলো রাষ্ট্রপ্রধান হিসেবে তাকে অপসারণের দাবি। বুধবার সন্ধ্যায়, কংগ্রেস বরাবর চিঠি দিয়েছেন উভয়কক্ষের ডেমোক্র্যাট আইনপ্রণেতারা। মুখ্য দাবি- ২৫তম সংশোধনী প্রয়োগের মাধ্যমে অবিলম্বে সরানো হোক যুক্তরাষ্ট্রের জন্য হুমকি বিবেচিত প্রেসিডেন্টকে।
ক্ষমতা গ্রহণের প্রথম দিন থেকেই অসংলগ্ন আচরণ, উসকানিমূলক কথাবার্তা এবং কাণ্ডজ্ঞানহীন সিদ্ধান্তের মাধ্যমে নিজেকে অযোগ্য প্রমাণ করে আসছেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। সর্বশেষ তার উসকানিমূলক বক্তব্যের জেরে, ক্যাপিটল হিলে চালানো হামলাকে ‘স্পষ্ট গণতন্ত্রের অবমাননা’ আখ্যা দিচ্ছেন দল-মত নির্বিশেষে সবাই। ফলে ক্ষমতার মেয়াদ পূর্ণের আগেই বলপ্রয়োগের মাধ্যমে তার অপসারণ চাইছেন ডেমোক্র্যাটরা।
হাউস স্পিকার ন্যান্সি পেলোসি বলেন, মন্ত্রিসভার সদস্যের প্রতি প্রশ্ন- আগামী ১৩ দিন কি আপনারা ভয়াবহ এ মানুষটিকে সহ্য করবেন? গণতন্ত্র নিয়ে লাঞ্ছনার সুযোগ তৈরি করে দিবেন? ২৫তম সংশোধনীর প্রয়োগ ঘটিয়ে এবার অযোগ্য প্রেসিডেন্টকে অপসারণের সময় এসেছে। ডোনাল্ড ট্রাম্প যে মানসিকভাবে অসুস্থ- সেটা স্পষ্ট করেছেন তিনি। যদিও মেয়াদের মাত্র ১৩ দিন বাকি। কিন্তু, প্রত্যেকটা দিন হবে যুক্তরাষ্ট্রের জন্য ভীতিকর। সুতরাং- একটাই পথ খোলা; সেটা হলো- অভিসংশন!
মার্কিন সংবিধানের ২৫তম সংশোধনী অনুসারে, কোন প্রেসিডেন্ট শারীরিক বা মানসিকভাবে দায়িত্ব পালনে অক্ষম হলে মেয়াদ শেষের আগেই তাকে অপসারণের বিধান রয়েছে। ৪ নম্বর ধারা অনুযায়ী- প্রেসিডেন্ট ক্ষমতা হস্তান্তরে অসম্মতি জানালে, ভাইস প্রেসিডেন্ট এবং মন্ত্রিসভার সদস্যরা তাকে সরানোর পদক্ষেপ নিতে পারেন। সেক্ষেত্রে, ভাইস প্রেসিডেন্টের নেতৃত্বে হতে হবে ভোটাভুটি। উভয়কক্ষে পড়তে হবে দুই-তৃতীয়াংশ ভোট। নিষ্পত্তি ঘটলে, ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রপ্রধাণের দায়িত্ব পালন করবেন ভাইস প্রেসিডেন্ট।
সিনেটে মুখ্য ডেমোক্র্যাট নেতা চাক শুমার বলেন, পানির মতো স্পষ্ট এবং পরিষ্কার- ডোনাল্ড ট্রাম্পের উসকানিতেই হয়েছে ক্যাপিটল হিলে হামলা। তাকে আর একটা দিনও প্রেসিডেন্ট হিসেবে দেখতে চাই না। ক্ষমতার বাকি ১৩ দিন, মার্কিন গণতন্ত্র এবং দেশবাসীর জন্য সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ। ভাইস প্রেসিডেন্টের প্রতি অনুরোধ, শিগগিরই ২৫তম সংশোধনী কার্যকর করুন। মন্ত্রিসভার সদস্যদের সমর্থন এবং পার্লামেন্টের উভয়কক্ষে ভোটাভুটির মাধ্যমে অপসারণ করুন দাঙ্গা-সন্ত্রাসবাদকে সমর্থনকারী এ রাষ্ট্রপ্রধানকে।
১৯৬৭ সালে মার্কিন সংবিধানে এ সংশোধনী আনা হলেও আজ পর্যন্ত প্রয়োগ ঘটেনি। প্রতিনিধি পরিষদে এর আগে ডোনাল্ড ট্রাম্প একবার অভিসংশিত হলেও সিনেটে সেই প্রস্তাব খারিজ হয়ে যায়।
Leave a reply