জুয়েলারির দোকানে তালা ঝোলানোর অভিযোগ আ’লীগ নেতা ও ছেলের বিরুদ্ধে

|

পটুয়াখালী প্রতিনিধি:

পটুয়াখালীর বাউফলে স্বর্ণ ব্যবসায়ীর কাছ থেকে দাবিকৃত অর্থ না পেয়ে আর. আর জুয়ের্লাস নামে একটি প্রতিষ্ঠানে তালা লাগিয়ে দিয়েছে প্রভাবশালী পিতা-পুত্র। পিতা বাউফল উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও বাউফল উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল মোতালেব হাওলাদার। ছেলে সাবেক ছাত্রলীগ নেতা ও বগা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাহামুদ হাসান। এক সংবাদ সম্মেলনে এমন অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী।

অভিযোগে বলা হয়, প্রতিষ্ঠানটি তালাবদ্ধের পর থেকে আজও উদ্ধার করতে পারেনি ভুক্তভোগীরা। সংশ্লিষ্ট থানা পুলিশ তো দূরের কথা, স্থানীয় সপ্তম সাংসদসহ গণ্যমান্যরা অসহায় ওই বাপ-ছেলের সন্ত্রাস রাজ্যের কাছে। কোন উপায়ান্তর না পেয়ে শনিবার পটুয়াখালী প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেন ভুক্তভোগী গোপাল কর্মকার। ঘটনার পর থেকে এলাকা ছাড়া গোপাল ও তার পরিবার।

ভুক্তভোগীর অভিযোগ-বাউফল উপজেলার বগা বন্দরের ইউনিয়ন পরিষদ সংলগ্ন তার মালিকানা সম্পত্তিতে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান উঠিয়ে দীর্ঘ ১৪ বছর জুয়েলারি ব্যবসা করে আসছেন গোপাল কর্মকার। ২০১৯ সালের ৩০ অক্টোবর বাউফল উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোতালেব হাওলাদার ও তার ছেলে মাহামুদ হাসানের নেতৃত্বে জসিম মুন্সি, মালেক মুন্সি, সবুজ মুন্সি গং বাসায় ঢুকে হামলা চালিয়ে নগদ ৬ লক্ষ টাকা দাবি করে বসে গোপালের কাছে। দাবিকৃত অর্থ না দিলে গোপাল কর্মকারের সম্পত্তি ওই আওয়ামী লীগ নেতার নামে দলিল দিয়ে ভারতে চলে যেতে হুমকি দেয়া হয়।

এ ঘটনার পর গোপাল কর্মকার ভীত-সন্ত্রস্ত হয়ে স্থানীয় জনৈক আব্দুল মালেক খানের কাছে তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান চুক্তি ভিত্তিক ভাড়া দিয়ে এলাকা ত্যাগ করেন। এঘটনার পর ২০২০ সালের ১৫ জানুয়ারি প্রভাবশালী পিতা-পুত্র ভাড়াটিয়া মালেক খানকে ঘর থেকে জোরপূর্বক বের করে প্রতিষ্ঠানের মালামাল লুট করে তালা লাগিয়ে দেয়। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী প্রধানমন্ত্রীসহ সংশ্লিষ্ট দফতরগুলোতে আইনী সহায়তা চাইলেও কোন প্রতিকার পাননি।

এ ঘটনায় একাধিকবার সংশ্লিষ্ট থানা পুলিশের কাছে সহায়তা চাওয়া হলেও থানা পুলিশ উদাসীন ছিল বলে অভিযোগ। সর্বশেষ গত বছরের ১১ নভেম্বর ভুক্তভোগী গোপাল তার শ্বশুর বাড়ি যাওয়ার পথে আওয়ামী নেতা ভাড়াটে বাহিনী দিয়ে গোপালকে পাকড়াও করে ওই আওয়ামী লীগ নেতার স্নেহধন্য মালেক মুন্সির বাড়িতে গোপালকে অবরুদ্ধ করে পরিবারের কাছ থেকে অলিখিত চেক ও স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর নিয়ে নেয়।

আরও অভিযোগ করা হয়, এর আগে গত বছরের ১৭ মার্চ উপজেলা পরিষদ কক্ষে ভুক্তভোগীদের উপস্থিতি এবং অভিযোগের প্রেক্ষিতে স্থানীয় পটুয়াখালী-০২ বাউফলের সাংসদ আ.স.ম ফিরোজ, অভিযুক্ত উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আব্দুল মোতালেব হাওলাদার, উপজেলা নির্বাহী অফিসার এবং বাংলাদেশ মাইনরিটি ওয়াসের সভাপতি রবীন্দ্র ঘোষসহ উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা বিষয়টি সমধানের উদ্যোগ নিয়েও ব্যর্থ হন।

এ প্রসঙ্গে সাংসদ আ.স.ম ফিরোজ বলেন, গোপাল আমার কাছে একাধিবার আসছিল। বিষয়টি কেন যে সমাধান হলো না আমারও বোধগম্য নয়। দেখি কী করা যায়।

সর্বশেষ সম্প্রতি অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে পটুয়াখালী সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা দায়ের করেন। আদালত অভিযোগ আমলে নিয়ে সংশ্লিষ্ট থানা পুলিশ তদন্ত পূর্বক প্রতিবেদন দিতে বলেন।

এ প্রসঙ্গে অভিযুক্ত আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুল মোতালেব হাওলাদার বলেন, আমি ও আমার ছেলে এ ঘটনার সাথে জড়িত না। আমি জানি গোপালের কাছে এলাকার লোকজন ও ব্যাংক বহু টাকা পায়, তারাই তালা মারছে। ওকে এসে লোকজনের টাকা দিয়ে দোকান খুলে ব্যবসা করতে বলেন। আমরা সহযোগিতা করবো।


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply