ভৈরব প্রতিনিধি:
ভৈরবে শিশুশ্রমের শিকার হাসান নাহিদের (১০) বিষয়ে ৫ সচিব, ডিসি, পুলিশ সুপারসহ ২১ জনের বিরুদ্ধে ২ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ চেয়ে উচ্চ আদালতে রিট পিটিশন দায়ের করেছে শিশুর পিতা মো. নিয়ামুল হোসেন (আনোয়ার)। আদালত ৩০ দিনের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন হাইকোর্টের রেজিস্টারের মাধ্যমে আদালতে দাখিল করার আদেশ দিয়েছেন।
মামলার দুজন বিবাদি ভৈরব উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও কিশোরগঞ্জের পুলিশ সুপার আজ মঙ্গলবার উচ্চ আদালতের আদেশটি অফিসিয়ালভাবে পেয়েছেন বলে জানিয়েছেন।
গত বছরের ২৮ সেপ্টেম্বর ভৈরব শহরের কমলপুর এলাকার হাজী ইয়াকুব আলীর ওয়ার্কশপের মেশিনে হাসান নাহিদ (১০) নামের এক শিশুর হাত কনুই পর্যন্ত কেটে যায়। পরে ডাক্তারগণ তাকে বাঁচাতে শিশুটির ডান হাতের কনুই পর্যন্ত কেটে ফেলে। শিশুটির চিকিৎসায় ঢাকার একটি হাসপাতালে ৩ লাখ ৭০ হাজার টাকা বিল হয়। দরিদ্র পিতা নিয়ামুল হোসেন হাসপাতালের বিল দেড় লাখ টাকা পরিশোধ করলেও বাকী টাকা এখনও পরিশোধ করতে না পারায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এখনও শিশুটিকে হাসপাতাল ছাড়ার ছাড়পত্র দিচ্ছে না বলে শিশুর বাবার অভিযোগ।
শিশুটির বাবার বাড়ি আশুগঞ্জের আড়াইসিধা গ্রামে হলেও তারা ভৈরব শহরের ভাড়া বাড়িতে থাকতো। ঘটনার দিন ওয়ার্কশপ মালিক ইয়াকুব আলীর ম্যানেজার রাজু মিয়া জোর করে শিশুটিকে মেশিন চালাতে বাধ্য করলে ঘটনাটি ঘটে বলে জানা গেছে। পরে শিশুর বাবা ভৈরব থানায় ওয়ার্কশপ মালিকসহ ৫ জনকে আসামি করে একটি মামলা করে।
এরপর গত ২৭ ডিসেম্বর শিশুর বাবা ২ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ চেয়ে ২১ জনের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে রিট পিটিশন দায়ের করলে গত ১৪ জানুয়ারি আদালতে শুনানি শেষে এই আদেশ দেন।
রিট পিটিশনে যাদেরকে বিবাদি করা হয় তারা হলেন শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, নারী ও শিশু মন্ত্রণালয়, সমাজ কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সচিবগণ, পুলিশের আইজিপি ও ডেপুটি আইজিপি, ঢাকা ও কিশোরগঞ্জের জেলা প্রশাসক, কিশোরগঞ্জের পুলিশ সুপার ও সিভিল সার্জন, ঢাকার আল-বারাকা হাসপাতালের এমডি, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ডিজি, ভৈরব উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও থানার অফিসার ইনচার্জ, ওয়ার্কশপ মালিক, ম্যানেজার ও তাদের তিন কর্মচারী।
এ বিষয়ে কিশোরগঞ্জের পুলিশ সুপার মাশরুকুর রহমান খালেদ (বিপিএম/বার) আদালতের আদেশটি পেয়েছেন বলে জানান, আদালতের নির্দেশনা মোতাবেক আমরা বিষয়টির সত্যতা যাচাই পূর্বক ঘটনার তদন্ত প্রতিবেদন অফিসিয়ালভাবে যথাসময়ে দাখিল করব।
ভৈরব উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা লুবনা ফারজানা বলেন, বিষয়টি জেলা প্রশাসকের সাথে আলোচনা করে আইন অনুযায়ী আদালতের নির্দেশ পালন করবো।
Leave a reply