স্বেচ্ছায় ক্ষমতা ছেড়ে গণতান্ত্রিক সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করা উচিত মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর। এমন আহ্বান জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। সহিংসতা পরিহার করে মানবাধিকার ও বাকস্বাধীনতা রক্ষার তাগিদ দিয়েছে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদও। এদিকে, অভ্যুত্থানের প্রতিবাদে, সেনাবাহিনীর চোখরাঙানি উপেক্ষা করেই প্রতীকী পার্লামেন্ট অধিবেশন করেছেন মিয়ানমারের কয়েকজন আইনপ্রণেতা। গ্রেফতার হয়েছেন সু চি’র ঘনিষ্ঠ সহযোগী উইন তেইন।
মিয়ানমারে সেনা অভ্যুত্থানের বিরুদ্ধে বৃহস্পতিবার টানা তৃতীয় দিন চলে শব্দ আন্দোলন। নিজ নিজ জায়গা থেকে ক্ষোভ প্রদর্শনে নানাভাবে বিকট শব্দ করে অসন্তোষ জানায় সাধারণ মানুষ।
এদিন, রাজধানী ছাড়তে সেনাবাহিনীর নির্দেশ অমান্য করে নেইপিদোর সরকারি অতিথি ভবনে প্রতীকী পার্লামেন্ট অধিবেশনে অংশ নেন প্রায় ৭০ জন আইনপ্রণেতা। বলেন, সেনাবাহিনী নয় তারাই জনগণের বৈধ প্রতিনিধি।
মিয়ানমার ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসির আইনপ্রণেতা খিন সোয়ে সোয়ে কি বলেন, “এটি অভ্যুত্থান নয়, সরকার ও দেশের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ। দেশের জনগণের মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন এটি। এর চেয়ে বড় রাষ্ট্রদ্রোহিতা আর কিছু হতে পারে না।”
১ ফেব্রুয়ারির অভ্যুত্থানের পর প্রথম আনুষ্ঠানিক বিবৃতিতে এদিন, অং সান সু চি’সহ মিয়ানমার সরকারের শীর্ষ কর্মকর্তাদের আটকে রাখার ব্যাপারে উদ্বেগ জানায় জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ। সেনাবাহিনীকে স্বেচ্ছায় গণতান্ত্রিক সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরের আহ্বান যুক্তরাষ্ট্রের।
জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের প্রেসিডেন্ট বারবারা উডওয়ার্ড বলেন, “সহিংসতা পরিহার করে মানবাধিকার, বাকস্বাধীনতা এবং আইনের শাসনের পূর্ণ চর্চায় ফেরা উচিত সেনাবাহিনীর। রোহিঙ্গাদের স্বেচ্ছা প্রত্যাবাসন নিশ্চিতে রাখাইন সংকটের মূল কারণ চিহ্নিত করার ওপরও জোর দিতে হবে।”
জো বাইডেন বলেন, “গণতান্ত্রিকভাবে পরিচালিত দেশে সুষ্ঠু একটি নির্বাচনের ফল উপেক্ষা করে এবং জনতার ইচ্ছের বিরুদ্ধে শক্তি প্রয়োগ কখনোই গ্রহণযোগ্য নয়। সেনাবাহিনীর উচিত অবিলম্বে দখলদারিত্ব ছেড়ে আটক প্রত্যেকের মুক্তি নিশ্চিত করা এবং সহিংসতার পথ ত্যাগ করা।”
অন্যদিকে, সেনাবাহিনীর ওপর একতরফা দায় না চাপিয়ে সব পক্ষের সাথে আলোচনার মাধ্যমে সংকট সমাধানের আহ্বান চীনের।
চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ওয়াং ওয়েনবিন বলেন, “শান্তিপূর্ণভাবে মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ সংকট সমাধানের পরিবেশ তৈরিতে কাজ করতে হবে বিশ্ব সম্প্রদায়কে। আরও জটিলতা এড়াতে দেশটির রাজনৈতিক ও সামাজিক স্থিতিশীলতা রক্ষায় মনোযোগী হওয়া উচিত নিরাপত্তা পরিষদের।”
সামরিক অভ্যুত্থানের বিরুদ্ধে, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে জনতার ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ও অসহযোগ আন্দোলনের পরিকল্পনা রুখতে, দু’দিন ধরে বন্ধ রয়েছে ফেসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যম।
Leave a reply