ব্যাটসম্যানদের নিলামে তেমন কোন সাড়া ছিলো না ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলোর। তবে যখন অলরাউন্ডারদের নাম ডাকা শুরু হয় সাথে সাথেই ঝাঁপিয়ে পড়ে ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলো।অলরাউন্ডারদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি আগ্রহ ছিল সাকিব আল হাসানকে ঘিরে।
এবারের আইপিএল যেহেতু ভারতেই হচ্ছে তাই সাকিবের মতো একজন অলরাউন্ডারের প্রয়োজন সবারই। যেকোনো দলে সাকিবের মতো অলরাউন্ডাররা ভারসম্য এনে দেবেন বলে মনে করেছিলেন হার্শা ভোগলে ও আশিষ নেহরা।
তার যে মূল্য ওঠার কথা ছিলো সেটা ওঠেনি। তারা বলেন অলরাউন্ডারদের মধ্যে সাকিবেরই মূল্যই সবচাইতে কম। অন্যদিকে অস্ট্রেলিয়ান বা ইংল্যান্ডের অলরাউন্ডারদের দিকে তাকালে বোঝা যায় সাকিবের সাথে যা করা হয়েছে সেটি আসলেই অযুক্তিক।
অলরাউন্ডারের জন্য মরিয়া চেন্নাই ও বেঙ্গালুরু ম্যাক্সওয়েলের দামটাকে নিয়ে গেছে ১৪ কোটিতে। শেষ পর্যন্ত বেঙ্গালুরু ১৪ কোটি ২৫ লাখে নিজেদের দলে নাম খেলান ম্যাক্সওয়েলের। তবে গেল আসরে এত খারাপ পারফর্মেন্সের পরও ১৪ কোটি ২৫ লাখ রুপি দাম পেলেন এই অজি।
এরপরের ডাকটাই ছিলো সাকিবের। তাকে নিয়ে বেশ টানাটানি হওয়ার কথা থাকলেও অদ্ভুত ভাবে শুধু কেকেআরই আগ্রহ দেখালো সাকিবকে নিয়ে। পরে পাঞ্জাব কিংস ডাকলেও শেষ পর্যন্ত কলকাতাই মাত্র ৩ কোটি ২০ লাখ রুপিতেই পেয়ে গেলো সাকিবকে। তবে ম্যাক্সওয়েলকে ৫ লক্ষ পর্যন্ত ডেকেছিলো কলকাতা।
এরপর ইংলিশ অলরাউন্ডারের মঈন আলীর চাইতে অনেক এগিয়ে সাকিব তবে আইপিএল আর তা মানলো কোই? মঈন আলীকে দলে নিতে পাঞ্জাবের সাথে লড়াইয়ে যোগ দেয় চেন্নাই। এই অফ স্পিনিং অলরাউন্ডারকে পেতে দুই দল কতটা আগ্রহী, তা টের পাওয়া যায় মুহূর্তের মধ্যেই ৫ কোটি ছাড়িয়ে যাওয়াতেই। এভাবে একের পর এক বিডে ৬ কোটি ৭৫ লাখ রুপি দাম ওঠে মঈনের। তবে শেষে যেয়ে ৭ কোটি রুপি খরচ করে মঈন আলীকে দলে নেয় মহেন্দ্র সিং ধোনির ফ্র্যাঞ্চাইজি।
এর পরের ডাক ওঠে শিবাব দুবের। ভারতীয় এই অলরাউন্ডারে ভিত্তিমূল্য ছিল ৫০ লাখ। সানরাইজার্স হায়দরাবাদ, রাজস্থান রয়্যালস ও দিল্লি ক্যাপিটালসের ত্রিমুখী লড়াই জয় পায় রাজস্থান রয়্যালস। ৪ কোটি ৪০ লাখ রুপিতে তাকে দলে ভেড়ায় রাজস্থান।
ভালো অলরাউন্ডার পেতে দলগুলো কতটা ব্যাকুল ছিলো তা বোঝা যায় ক্রিস মরিসের ক্ষেত্রে। অন্যদের ক্ষেত্রে দাম বসে তাকলেও মরিসের ক্ষেত্রে নিলামকারী দর হাঁকারও সময় পাচ্ছিলেন না। ৭৫ লাখ রুপি ভিত্তিমূল্য ছিল এই দক্ষিণ আফ্রিকানের। ‘সেভেনটি ফাইভ’ বলে থামার আগেই দেখা যাচ্ছে ‘ওয়ান হানড্রেড’ হয়ে গেছে। সেটা মিনিটেই দুই কোটি হয়ে গেছে। ‘টু হানড্রেড’ বলে থামতে না থামতেই ‘টু হানড্রেড টোয়েন্টি’র জন্য আরেক দল হাত তুলেছে। তাদের নাম বলার আগেই অন্য কোনো ফ্র্যাঞ্চাইজি হাত তুলেছে।
বেঙ্গালুরু ও মুম্বাই ইন্ডিয়ানস মিলে কিছু বুঝে ওঠার আগেই মরিসের দাম ১০ কোটি তুলে ফেলল। গত মৌসুমেই নিজেদের দলে থাকা মরিসকে ছেড়ে দিয়েছে বেঙ্গালুরু। তাঁকে পেতে আবার ১০ কোটি খরচ করা বাড়াবাড়ি ভেবে সেখানেই থামল তারা। কিন্তু মুম্বাইয়ের ভাগ্য ফেরেনি। বেঙ্গালুরু হাল ছাড়তে নিলামে নেমেছে রাজস্থান রয়্যালস! রাজস্থান-মুম্বাইয়ের দড়ি টানাটানি ১৩ কোটি ছাড়িয়ে গেল। সাড়ে ১৩ কোটিতে নিলামে ঢুকে পড়ল পাঞ্জাবও।
এর আগে সাকিব ও মঈন আলীর জন্য আগ্রহ দেখানো দলটির যে অলরাউন্ডার দরকার। মঈন আলীর জন্য যে দর (৭ কোটি ২৫ লাখ) হাঁকাতে রাজি হয়নি তারা, মরিসের জন্য ১৬ কোটির প্রস্তাব দেয় প্রীতি জিনতার দল! আইপিএলের ইতিহাসে বিদেশি কোনো ক্রিকেটারের জন্য নিলামে এত অর্থ খরচ করেনি কোনো দল। গতবারই কামিন্সের জন্য ১৫ কোটি ৫০ লাখ রুপি খরচ করেছে কলকাতা।
তবে হাল ছাড়েনি রাজস্থান ১৬ কোটি ২৫ লাখ রুপির দর হাঁকায় রাজস্থান। আইপিএলের ইতিহাসে বিদেশি কোনো ক্রিকেটারের জন্য সবচেয়ে বেশি অর্থ খরচের রেকর্ড গড়ার পরই নিলামটা শেষ হলো। নতুন কোনো রেকর্ড গড়ার আগ্রহ দেখায়নি কেউ। ১৬ কোটি ২৫ লাখে রাজস্থানে গেলেন মরিস। আর অলরাউন্ডারদের এমন কাড়াকাড়ির মধ্যে শুধু সাকিবের জন্যই আগ্রহটা কম টের পাওয়া
Leave a reply