স্টাফ রিপোর্টার:
ধর্ষণের পর সপ্তম শ্রেণির এক ছাত্রীকে হত্যার প্রতিবাদে ও বিচার দাবিতে নেত্রকোণার কেন্দুয়া উপজেলায় মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। রোববার দুপুরে কেন্দুয়া উপজেলা পরিষদ চত্বরে নারী নির্যাতন প্রতিরোধ কমিটির উদ্যোগে মানবন্ধনের আয়োজন করা হয়।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক ভিত্তিক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন হেল্পলাইন কেন্দুয়া’র সহযোগিতায় ঘন্টাব্যাপী মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন, নারী নির্যাতন প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি রহিছ উদ্দিন মাস্টার, সাধারণ সম্পাদক নারীনেত্রী কল্যাণী হাসান, হেল্পলাইন কেন্দুয়া’র এডমিন মামুনুল কবীর খান, ইলিয়াস ইবনে মতিউর ও স্কুলছাত্রী (সাদিয়া আক্তারের)বাবা মজিবুর রহমান।
কেন্দুয়া উপজেলা নারী নির্যাতন প্রতিরোধ কমিটির সাধারণ সম্পাদক কল্যাণী হাসান বলেন, সাদিয়াকে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে। এর যথেষ্ট প্রমাণও আমাদের হাতে আছে। কিন্তু পুলিশ এখনো ধর্ষক ও হত্যাকারী আরিফকে গ্রেফতার করতে পারছে না। আমরা চাই সাদিয়ার মতো আর কোনো মেয়েকে যেন এরকম ঘটনার শিকার হতে না হয়। আজ আমরা সাদিয়ার হত্যার ন্যায় বিচারের দাবি নিয়ে রাস্তায় নেমেছি। আশা করি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।
স্কুলছাত্রী সাদিয়ার বাবা রিকসা চালক মজিবুর রহমান বলেন, গত ১৬ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যা রাতে আমার মেয়ে স্থানীয় নোয়াদিয়া নিম্নমাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী সাদিয়া আক্তারকে বাড়িতে একা পেয়ে তাকে জোর করে ধরে নিয়ে বাড়ির পাশের জঙ্গলে ধর্ষণ করে প্রতিবেশী আরিফ।
আমি সারাদিন রিকসা চালিয়ে রাতে বাড়িতে যাওয়ার পর ঘটনাটি জানতে পারি। বিষয়টি আরিফের পরিবারের লোকজনকে জানালে তারা উল্টো ক্ষিপ্ত হয়ে আমাকে মারধর করে। পরে ১৭ ফেব্রুয়ারি সকালে আমার ঘরের বারান্দার ধর্নার সাথে আমার মেয়ের লাশ ঝুলতে দেখে প্রতিবেশীরা। ওই সময় আমি এবং আমার স্ত্রী কেউ-ই বাড়িতে ছিলাম না। এই সুযোগে আরিফ ও তার পরিবারের লোকজন আমার মেয়েকে হত্যা করে লাশ ঝুলিয়ে রেখে চলে যায়।
তিনি আরও বলেন, এ ঘটনায় আমি থানায় আরিফসহ ৭ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছি। কিন্তু আরিফকে এখনও গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। এছাড়া অন্য আসামিরাও জামিনে চলে এসেছে। স্কুল পড়ুয়াকে মেয়েকে ধর্ষণের পর হত্যার এ ঘটনায় অবিলম্বে মূল হোতা আরিফকে গ্রেফতার এবং ন্যায় বিচার দাবি করেন তিনি।
এ বিষয়ে কথা হলে কেন্দুয়া থানা পুলিশেরে ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাজী শাহ নেওয়াজ জানান, এ ঘটনায় আগেই ৭ জনের বিরুদ্ধে থানায় মামলা হয়েছে। আসামিদের মধ্যে একজনকে গ্রেফতার করে জেলে পাঠানো হয়েছে এবং ৫ জন আদালতে হাজিরা দিতে জামিনে এসেছে। আসামি আরিফ এখনো পলাতক রয়েছে। তাকে গ্রেফতারে জোর তৎপরতা চলছে।
এদিকে মানববন্ধন শেষে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করা হয়।
Leave a reply