Site icon Jamuna Television

সড়ক দুর্ঘটনায় ছাত্রীর মৃত্যু, থানায় অপহরণ ও হত্যা মামলা দায়ের

নীলফামারী প্রতিনিধি:

নীলফামারীর কচুকাটা ইউনিয়নের তালুক মানুষমারা গ্রামের নিজ বাড়ি থেকে প্রাইভেট পড়ার কথা বলে বের হয়ে বন্ধুর সাথে বেড়াতে গিয়ে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হয় রুবাইয়া ইয়াসমিন রিমু নামের এক কলেজ শিক্ষার্থী। তবে রিমুর পরিবারের দাবি, পূর্ব পরিকল্পিতভাবে রিমুকে অপহরণের পর হত্যা করেছে বন্ধু ফয়জুল করিম ফয়সাল।

এ ব্যাপারে জলঢাকা থানায় অপহরণ ও হত্যার অভিযোগে ফয়সাল ও তার বন্ধু রিজভির নামে মামলা দায়ের করা হয়েছে। তবে পুলিশ বলেছে তদন্ত শেষে ঘটনার রহস্য উন্মোচন করা হবে।

নিহত রুবাইয়া ইয়াসমিন রিমু রংপুর কারমাইকেল কলেজের বাংলা বিভাগের ২য় বর্ষের ছাত্রী ও কচুকাটা ইউনিয়নের তালুক মানুষমারা গ্রামের আব্দুর রাজ্জাকের মেয়ে। তার বন্ধু ফায়জুল করিম ফয়সাল একই গ্রামের আব্দুল্লাহ মিয়ার ছেলে। সে হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী।

এলাকাবাসী জানায়, গতকাল সোমবার নীলফামারী-জলঢাকা সড়কের রাজারহাট নামক স্থানে মোটর সাইকেল নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে আহত হয় রিমু আর ফয়সাল। স্থানীয়রা আহত অবস্থায় তাদের উদ্ধার করে জলঢাকা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এ ভর্তি করায়। রিমুর অবস্থা সংকটাপন্ন হওয়ায় তাকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পর চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।

রিমুর বাবার দেয়া অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, প্রভাষক রশিদুল ইসলামের বাড়ি থেকে প্রাইভেট শেষে সকাল সাড়ে ১০টার দিকে টেংগনমারী বাজারের রজনীগন্ধা হোটেলের একশোগজ পশ্চিমে অভিযুক্ত ফয়সাল ও তার বন্ধুরা রিমুকে জোরপূর্বক মোটর সাইকেলে তুলে জলঢাকা অভিমুখে রওনা দেয়।

অভিযোগে বলা হয়, কিন্তু রাজারহাটে যাওয়ার আগেই ফয়সাল ইচ্ছাপূর্বক নিজ মোটরসাইকেল ইটভর্তি ট্রলির সাথে ধাক্কা লাগিয়ে রিমুকে গুরুতর আহত অবস্থায় ফেলে রেখে পালিয়ে যায়। রিমুকে গুরুতর আহত অবস্থায় স্থানীয়রা উদ্ধার করে জলঢাকা উপজেলা হাসাপাতালে নিয়ে যায়। সেখান থেকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে রিমু মারা যায়।

রিমুর মা লিলি বেগম অভিযোগ করে জানান, আমার মেয়েকে জোরপূর্বক অপহরণ করা হয়েছে। অপহরণের পর তাকে ইচ্ছাপূর্বক মোটর সাইকেল থেকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিয়ে মেরে ফেলা হয়েছে। আমি আমার মেয়ের হত্যার বিচার চাই।

এদিকে রিমুর বান্ধবী নীলফামারী সরকারি মহিলা কলেজের ইতিহাস বিভাগের ২য় বর্ষের ছাত্রী নুরী আক্তার জানান, আমরা টেংগনমারী বাজারে রশিদুল স্যারের কাছে ইংরেজি প্রাইভেট পড়ি। গতকাল সোমবার আমি, রিমুসহ চার জন একসাথে প্রাইভেট পড়তে যাই। টেংগনমারী বাজারে যাওয়ার সময়ে হঠাৎ রিমুর ফোনে কল আসলে সে প্রাইভেট পড়বে না জানিয়ে চলে যায় এবং বলে প্রাইভেট শেষ হলে তাকে ফোন দিতে। প্রাইভেট শেষ করে তাকে কল ও মেসেজ পাঠালে তার কোন উত্তর পাওয়া যায়নি।

নীলফামারী সদরের কচুকাটা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আব্দুর রউফ চৌধুরী বলেন, ২৪ ঘণ্টা অতিবাহিত হলেও আমাকে কোন পক্ষ থেকে আমায় অবহিত করেনি। ফয়সালের সঙ্গে নিহত রিমুর প্রেমের সম্পর্ক ছিল বলে লোকমুখে জানতে পেরেছি।

জলঢাকা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, নিহত রিমুকে অপহরণের পর হত্যা করা হয়েছে মর্মে রিমুর বাবা থানায় মামলা করেছে। আমরা তদন্ত করছি। তদন্ত শেষে বিস্তারিত জানাবো।

Exit mobile version