নড়াইল সদর হাসপাতালের ৪৮ লাখের বেশি টাকা আত্মসাতের ঘটনায় হিসাবরক্ষকের বিরুদ্ধে সদর থানায় মামলা হয়েছে। বুধবার দুপুরে সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক বাদি হয়ে এ মামলা করেছেন।
এ ঘটনায় গঠিত তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে ৩৪টি জাল চালানের অস্তিত্ব উল্লেখ এবং ৪৮ লাখ ১৭ হাজার ৯১২ টাকা আত্মসাৎ হয়েছে বলে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে এবং এর জন্য হাসপাতালের হিসাবরক্ষক জাহান আরা খানম লাকিকে দায়ী করা হয়েছে।
এদিকে টাকা আত্মসাতের ঘটনায় নতুন করে বিভাগীয় তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, জাহান আরা খানম লাকির বিরুদ্ধে ২০১৯ সালের ১৮ জুলাই থেকে গত মার্চ মাস পর্যন্ত হাসপাতালের ইউজার ফিয়ের (রোগী ভর্তি ফি, ওটি চার্জ, চিকিৎসা ফি, প্যাথলজি, অ্যাম্বুলেন্স, কেবিন ফিসহ বিভিন্ন খাতের) ২১ মাসের ৭০ লাখ টাকা সোনালী ব্যাংকে জমা না দেয়ার অভিযোগ ওঠে। বিষয়টি তদন্তের জন্য সদর হাসপাতালের ৫ চিকিৎসককে সদস্য করে গত ৭ এপ্রিল একটি তদন্ত কমিটি গঠিত হয়।
পরে তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে ৪৮ লক্ষাধিক টাকা আত্মসাতের ঘটনা ঘটেছে বলে জানানো হয়েছে। প্রসঙ্গত ইতিপূর্বে সদর হাসপাতালে ১ কোটি ৭০লাখ টাকার ইউজার ফি আত্মসাতের ঘটনায় পূর্বের হিসাবরক্ষক মাহফুজুর রহমানের বিরুদ্ধে মামলাটি দুদকে বিচারাধীন রয়েছে।
নড়াইল সোনালী ব্যাংকের ম্যানেজার মো. আবু সেলিম জানান, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ আমাদের কাছে যে ৪৩টি চালান প্রদর্শন করেন তার মধ্যে ৯টি চালান সঠিক এবং বাকি চালানের সিল ও স্বাক্ষর জাল। এসব চালানে মোট ১৩ লাখ ১২ হাজার ৫২০ টাকা ব্যাংকে জমা পড়েছে। বিষয়টি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে গত সোমবার লিখিতভাবে জানানো হয়েছে।
এ ব্যাপারে তদন্ত কমিটির সদস্য সচিব ডাঃ আ.ফ.ম মশিউর রহমান বাবু বলেন, তদন্ত প্রতিবেদনে ৩৪টি জাল চালান এবং ৪৮ লাখ ১৭ হাজার ৯১২টাকা আত্মসাৎ হয়েছে বলে প্রমাণ পাওয়া গেছে এবং এ ঘটনায় হাসপাতালের হিসাবরক্ষক জাহান আরা লাকিকে দায়ী করা হয়েছে।
সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. আব্দুর শাকুর বলেন, ৪৮ লাখ ১৭ হাজার ৯১২টাকা আত্মসাতের ঘটনায় হিসাবরক্ষক জাহান আরা খানম লাকির বিরুদ্ধে বুধবার দুপুরে সদর থানায় একটি মামলা হয়েছে। মামলা নং-৬৫৩। তিনি আরও বলেন, এ ঘটনায় মাগুরা সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. স্বপন কুমার কুণ্ডুকে প্রধান করে ৩ সদস্যের একটি নতুন কমিট গঠন করা হয়েছে। আগামী ১৯ এপ্রিলের মধ্যে এ কমিটি তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করবেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে সদর থানার ওসি মোঃ ইলিয়াছ হোসেন জানান, সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক টাকা আত্মসাতের ঘটনায় একটি অভিযোগ করেছেন। আমরা অভিযোগটিকে জিডি হিসেবে গ্রহণ করে দুদকে পাঠিয়েছি।
Leave a reply