ভারতে শনাক্ত হওয়া করোনাভাইরাস এর নতুন ধরন নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে পুরো এশিয়ায়। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে ডাবল মিউট্যান্ট ভাইরাসটি অনেক বেশি সংক্রামক। ভারতে হঠাৎ করে সংক্রমণ অনেক বেড়ে যাওয়ার জন্যও দায়ী করা হচ্ছে করোনার এ প্রজাতিকে। দুটি ভিন্ন প্রজাতির মিশ্রণে জন্ম নেয়া এ ভাইরাস পাশ কাটাতে সক্ষম মানুষের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে।
ভারতে প্রাণঘাতী করোনার বিস্তার কতোটা ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে তা টের পাওয়া যায় হাসপাতালগুলোতে। চিকিৎসার জন্য রোগীদের দীর্ঘ লাইন। কিন্তু কোথাও খালি নেই বেড, সংকট অক্সিজেন সরবরাহ আর জীবনরক্ষাকারী সরঞ্জামের। রাজধানী নয়াদিল্লীসহ প্রায় প্রতিটি শহরের চিত্র একই।
এক জরুরি পরিসেবা কাজে নিযুক্ত কর্মকর্তা জানান, ভারতের পরিস্থিতি খুবই ভয়াবহ। আমি জরুরি পরিসেবা কাজে নিযুক্ত না থাকলে ঘর থেকে বেরই হতাম না।
অপর একজন বলেন, হঠাৎ করেই চাহিদা অনেক বেড়েছে অক্সিজেনের। কোন হাসপাতালেই পর্যাপ্ত মিলছে না। আগে এমন সংকটের মুখোমুখি হতে হয়নি কখনও।
চলতি বছরের প্রথম দুই মাসে ভারতে অনেকটাই কমে যায় সংক্রমণ। কিন্তু মার্চে হঠাৎই বাড়তে শুরু করে শনাক্তের হার। ফেব্রুয়ারিতে যেখানে দৈনিক গড় সংক্রমণ ছিলো ১৫ হাজার, এপ্রিলে এসে সেই সংখ্যা এক লাফে প্রায় দেড় লাখ। সংক্রমণ বাড়ার পাশাপাশি গেলো এক সপ্তাহ ধরে রেকর্ড প্রাণহানি দেখছে ভারত।
জ্যামিতিক হারে সংক্রমণ বাড়ার কারণ হিসেবে অনেক বিশেষজ্ঞ দায়ী করছেন করোনার নতুন ভেরিয়েন্টকে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, ভারতে নতুন যে ডাবল মিউট্যান্ট শনাক্ত হয়েছে কয়েক গুণ দ্রুত বিস্তারে সক্ষম। কয়েক ধাপে বিবর্তন এবং দুটি প্রজাতির সংমিশ্রণে তৈরি বলে এর সামনে অকার্যকর হয়ে পড়ছে মানুষের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা। কাজে লাগছে না ভ্যাকসিনের সুরক্ষাও।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার টেকনিক্যাল লিড ডা. মারিয়া ভ্যান কেরখভ জানান, সময়ের সাথে ভাইরাসটির বিবর্তন-পরিবর্তন ঘটছে, শক্তি বাড়ছে। E484Q এবং L452R, বিশ্বের দুই প্রান্তে দেখা দেয়া এই দুই প্রজাতির মিশ্রণ ভারতের ডাবল মিউট্যান্ট ভাইরাস। ভারতের বেশ কয়েকটি রাজ্যে এর দ্রুত বিস্তারের প্রমাণ পাওয়া গেছে।
১৪০ কোটি মানুষের দেশ ভারতে এ পর্যন্ত সাত হাজারের বেশি প্রজাতির করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। তবে বিশেষজ্ঞরা বেশি ভীত নতুন এই ডাবল মিউট্যান্ট ভাইরাস নিয়ে। এশিয়ার অন্যান্য দেশেও এর সংক্রমণ ছড়াতে পারে বলে আশঙ্কা তাদের।
Leave a reply