উদ্দেশ্যমূলকভাবে চিকিৎসক সমাজকে হেয় প্রতিপন্ন করতে সরকারি বিধিনিষেধ চলাকালে মুভমেন্ট পাসের নামে চিকিৎসকদের হেনস্তা করা হচ্ছে বলে দাবি করেছে বাংলাদেশ স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদ (স্বাচিপ)।
রোববার রাজধানীতে একজন নারী চিকিৎসকের সঙ্গে পুলিশের বাকবিতণ্ডার ঘটনা নিয়ে সোমবার আলাদাভাবে বিবৃতি দিয়ে ওই ঘটনায় দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার দাবি করেছেন সংগঠনের নেতারা।
সোমবার স্বাচিবের সভাপতি অধ্যাপক ডা. এম ইকবাল আর্সলান ও মহাসচিব অধ্যাপক ডা. এমএ আজিজ আলাদা বিবৃতি দেন।
স্বাচিবের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, চলমান সংকটজনক পরিস্থিতিতে প্রধানমন্ত্রীর আহ্বানে ও নেতৃত্বে দেশের চিকিৎসকরা যখন সম্মুখ সারিতে জীবনের চরম ঝুঁকি নিয়ে কোভিড মোকাবেলায় নিবেদিত, তখন নিজ কর্মস্থল থেকে বাসায় ফেরার পথে পুলিশ বাহিনীর কয়েকজন সদস্যের মাধ্যমে একজন সিনিয়র নারী চিকিৎসককে অযাচিতভাবে অপমানজনক পরিস্থিতির মুখোমুখি করে হেনস্তা করা হয়েছে।
বিবৃতিতে বলা হয়, গতকাল (১৮ এপ্রিল) দুপুরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের রেডিওলোজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. সাঈদা শওকত জেনি কর্মস্থল থেকে বাসায় ফেরার পথে রাজধানীর এলিফ্যান্ট রোডে একদল পুলিশ সদস্য গাড়ি থামিয়ে তার কাছে মুভমেন্ট পাস দাবি করেন। এ সময় গাড়ির সামনে লাগানো বিএসএমএমইউয়ের লোগো সম্বলিত স্টিকার এবং বিএসএমএমইউ পরিচালক কর্তৃক সম্মুখ সারির স্বাস্থ্যকর্মী চলাচলসংক্রান্ত প্রত্যয়নপত্র এবং বিএসএমএমইউয়ের লোগোসহ চিকিৎসকের নামাঙ্কিত অ্যাপ্রোন প্রদর্শন করে নিজের পরিচয় প্রদান করেন।
কিন্তু সব কিছুকেই ভুয়া উল্লেখ করে কর্তব্যরত পুলিশ সদস্যরা অন্যায়ভাবে তার কাছে মুভমেন্ট পাস দাবি করেন ও অশোভন আচরণ করেন। পুরো ঘটনাটি উদ্দেশ্যমূলক, চিকিৎসক সমাজকে হেয় প্রতিপন্ন করার অপকৌশল এবং দেশের চিকিৎসক সমাজ ও পুলিশ বাহিনীকে মুখোমুখি দাঁড় করিয়ে দেয়ার একটি হীন প্রচেষ্টা বলে আমরা মনে করি।
বিবৃতিতে নেতারা আরও বলেন, করোনার চলমান দ্বিতীয় ঢেউ মোকাবিলায় দেশব্যাপী কঠোর লকডাউন কর্মসূচির প্রথম দিনেও দেশের বেশ কিছু জায়গায় কর্মস্থলে আসা-যাওয়ার পথে চিকিৎসকদের বাধা ও নিগৃহীত হওয়ার অভিযোগ ওঠেছে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে আমরা চিকিৎসকদের কর্মস্থলে যাতায়াত নির্বিঘ্ন ও নিরাপদ করার দাবি জানালে পুলিশ প্রশাসন গণমাধ্যমে ‘চিকিৎসকদের যাতায়াতে কোনো মুভমেন্ট পাস প্রয়োজন হবে না’ মর্মে বিবৃতি প্রদান করে।
এরপরও গতকাল এলিফেন্ট রোডে দেশের একজন সিনিয়র চিকিৎসকের সঙ্গে যে ভাষায় মুভমেন্ট পাস দাবি করা হয়েছে তা কোনো বিবেচনায়ই গ্রহণযোগ্য নয়।
আরও বলা হয়, লকডাউন চলাকালে রাস্তায় কর্তব্যরত আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের পবিত্র দায়িত্ব হচ্ছে যারা রাষ্ট্রের জরুরি সেবা দানে নিয়োজিত ও আত্মনিবেদিত তাদের মুভমেন্টে সাহায্য করা। তাদের কাজ সহজতর ও নিরাপদ করা। কিন্তু গুটিকয়েক পুলিশ সদস্য তা না করে এর বিপরীতে অবস্থান নিয়ে হীন মানসিকতা প্রদর্শন করছেন। যা পুরো বাহিনীর ভূমিকা ও আচরণকে প্রশ্নবিদ্ধ করে তুলেছে। এ ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণে জোর দাবি জানিয়েছেন সংগঠনের নেতারা।
Leave a reply