করোনায় বেসামাল ভারত। দৈনিক বেড়েই চলেছে সংক্রমণ ও মৃত্যুর সংখ্যা। এই মহামারি রোধের একমাত্র উপায় মাস্ক পরিধান করা, এ কথা বলছেন চিকিৎসক থেকে প্রশাসনের যেকোন কর্মকর্তা। তবে এরমাঝে অনেকে এই সতর্কবাণীকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে মেতে উঠেছেন নিয়ম ভাঙার খেলায়। এদিকে মাস্ক পরা নিয়ে যখন কেউ কেউ খোড়া অজুহাত দিচ্ছেন তখন অন্য চিত্র দেখা দক্ষিণ দিনাজপুরের হরিরামপুরে।
হরিরামপুরের এক ছোট্ট গ্রাম ছোটকড়ি। সেখানকার মানুষের জীবিকার নির্বাহের উপায় কৃষিকাজ আর পশুপালন। ফলে স্পষ্টই চোখে পরে দারিদ্রতার ছাপ। গ্রামে মাস্ক ছাড়াই অনেকে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। সেখানকার মানুষ মাস্ক পরার চেয়ে সেই টাকায় পেটের জ্বালা মেটানোকে প্রাধান্য দেন। এদিকে কোনও পরিবারের সদস্য সংখ্যা ৭ জন, কোনও পরিবারের ৯ জন। অথচ মাস্কের সংখ্যা কোথাও ১ বা বড়জোর ২।
এমনই একটি পরিবারের সদস্য নবম শ্রেণির এক ছাত্রী জানায়, তারা চার বোন। বাড়িতে সদস্য সংখ্যা ৭। কিন্তু তাদের মাস্ক মাত্র একটি।
ওই ছাত্রী আরও জানায়, এই একটি মাস্ক আমরা সবাই ব্যবহার করি। কখনো আমার বড় বোন পরে, কখনও আমি পরে বাইরে যায়। আবার যদি দুইজন একসাথে বাইরে যায়, তাহলে একজনই পরতে পারি। এবিপি নিউজের একটি প্রতিবেদনে এমনই তথ্য উঠে এসেছে।
একইরকম চিত্র দেখা আরও অনেক বাড়িতে। কোনও বাড়িতে দুটো মাস্ক, সদস্য সংখ্যা ৯ জন। রোগ থেকে বাঁচতে সেখানেও পালা করে মাস্ক পরেন পরিবারের সদস্যরা।
এক গৃহকর্তা বলেন, আমার ছোট্ট মুরগির ফার্ম, কোথা থেকে কিনব মাস্ক, কেনার সামর্থ্য নেই আমার।
অপর এক বাসিন্দা জানান, তার বাড়িতেও একটিই মাস্ক রয়েছে। একাধিকবার ব্যবহার হয়েছে তা। এখন ধুয়ে রেখে দিয়েছেন। কোনও বিয়ে বা অনুষ্ঠানে গেলে তখন মুখে ওঠে মাস্ক। একাধিকবার ব্যবহারে ফুটো হয়ে গেছে মাস্ক। তবে নতুন কেনার ক্ষমতা নেই, তাই বাধ্য হয়েই একই মাস্ক ব্যবহার করতে হয়।
এই চিত্র চোখে পরে ওই গ্রামের প্রায় সকল বাড়িতেই। এদিকে গ্রামের রাস্তায় যাদের মাস্ক ছাড়া দেখা গেছে, তাদের প্রত্যেকেরই দাবি দারিদ্রতার কারণে তারা কিনতে পারছেন না মাস্ক।
Leave a reply