দক্ষিণ আফ্রিকার রাজনীতিতে চলছে অস্থিরতা। প্রেসিডেন্ট জ্যাকব জুমাকে পদত্যাগের জন্য ৪৮ ঘণ্টা সময় বেঁধে দিয়েছে ক্ষমতাসীন- এএনসি পার্টি। এরমাঝে তিনি সরে না দাঁড়ালে পার্লামেন্টে আস্থা ভোটের মুখোমুখি হতে হবে জুমাকে। সেখানে তার পরাজয়ের শতভাগ সম্ভাবনা রয়েছে বলে ইঙ্গিত দিচ্ছেন বিশ্লেষকরা।
প্রেসিডেন্ট জ্যাকব জুমা’র পদত্যাগের দাবিতে বেশ কিছুদিন ধরেই উত্তাল দক্ষিণ আফ্রিকা। সোমবার ৭৫ বছর বয়সী এই রাজনীতিকের ভবিষ্যৎ নির্ধারণে বৈঠকে বসে ক্ষমতাসীন দল- এএনসি।
দীর্ঘ ১৩ ঘণ্টার আলোচনা-বিতর্ক শেষে চূড়ান্ত ফয়সালা আসে- পদত্যাগ করতে হবে প্রেসিডেন্টকে। এজন্য জ্যাকব জুমাকে ৪৮ ঘণ্টা সময় বেঁধে দেয় তার দল। সিদ্ধান্ত মেনে না নিলে- পার্লামেন্টে অনাস্থা প্রস্তাবের মুখোমুখি হবেন জুমা।
এএনসি প্রেসিডেন্ট সিরিল রামাফোসা বলেন, আফ্রিকান ন্যাশনাল কংগ্রেস প্রশাসনিক রদবদল, বিশেষভাবে বললে- প্রেসিডেন্টের পদ নিয়ে আলোচনা চালাচ্ছে। খুব শিগগিরই বড় ধরণের পরিবর্তন আসতে যাচ্ছে দক্ষিণ আফ্রিকায়। তবে কারো ব্যক্তিস্বার্থ নয় বরং নাগরিকদের অধিকার রক্ষা-ই আমাদের মূল লক্ষ্য। জাতীয় কল্যাণের জন্যেই জ্যাকব জুমা’র ব্যাপারে এধরণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে এএনসি।
এমন পরিস্থিতিতে পার্লামেন্ট ভেঙ্গে দিয়ে আগাম নির্বাচনের আহ্বান জানিয়েছে বিরোধীরা। ডেমোক্র্যাটিক অ্যালায়েন্স নেতা মুসি মাইমান বলেন, সংবিধান লঙ্ঘনের দায়ে প্রেসিডেন্ট জুমার অনেক আগেই পদত্যাগ করা উচিৎ ছিলো। ভোটাভুটির মাধ্যমে তাকে অপসারনের জন্য দ্রুত অধিবেশন ডাকার আহ্বান জানিয়েছি পার্লামেন্ট কমিটিকে। আমরা আগাম নির্বাচন চাই। এরজন্য প্রেসিডেন্টের পদত্যাগের পাশাপাশি পার্লামেন্ট ভেঙ্গে দেয়াটাও দরকার।
বিশ্লেষকরা বলছেন, আপোষে ক্ষমতা না ছাড়লে পার্লামেন্টের আস্থা ভোটে বিপুল পরাজয় বরণ করতে হবে জ্যাকব জুমাকে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষক উইলিয়াম গুমেরে বলেন, প্রেসিডেন্টকে যেকোন সময় পদচ্যুত করার এখতিয়ার আছে এএনসি’র। কিন্তু, প্রেসিডেন্ট স্বেচ্ছায় সরে না দাঁড়ালে তাকে গলাধাক্কা দিয়ে বের করার উপায় নেই। সেক্ষেত্রে পার্লামেন্টকে গণতান্ত্রিক হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করবে ক্ষমতাসীনরা। গণভোট হলে লজ্জাজনক হার অপেক্ষা করছে জুমা’র।
২০০৯ সালে, তৎকালীন প্রেসিডেন্ট থাবো এমবিকি’কে উৎখাতের মাধ্যমে দক্ষিণ আফ্রিকার ক্ষমতায় আসেন জ্যাকব জুমা। টানা ১০ বছরের শাসনকালে তার বিরূদ্ধে রয়েছে সংবিধান লঙ্ঘন, ব্যক্তি স্বার্থে রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান ব্যবহার ও সরকারি আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে লুটপাটের মতো অভিযোগ।
Leave a reply