এবার ‘বাংলাওয়াশে’র তালিকায় নাম উঠবে লঙ্কানদের?

|

১৯৮৬ সালের ৩১ মার্চ প্রায় ৩৬ বছর আগে শ্রীলঙ্কায় অনুষ্ঠিত এশিয়া কাপে পাকিস্তানের এক ঝাঁক তারকা ক্রিকেটারের বিপক্ষে মাঠে নামে বাংলাদেশ। ইমরান খান, জাভেদ মিয়াদাদ, রমিজ রাজাসহ ওয়াসিম আকরামদের নিয়ে গড়া প্রতাপশালী সেই দলের বিপক্ষেই ওয়ানডে ক্রিকেটে অভিষেক হয় বাংলাদেশের। ১৯৯৭ সালে আইসিসি ট্রফি জিতে ওয়ানডে স্ট্যাটাস পাওয়ার পর অনেকদিন পর্যন্ত  ৯৯’র বিশ্বকাপে পাকিস্তানের বিপক্ষে দুর্দান্ত জয়টিই ছিল বাংলাদেশের জন্য সেরা সাফল্য। এরপর অবশ্য ছোট ছোট সাফল্যের পালক জমা হতে থাকে টাইগারদের মুকুটে। ২০০৫ সালে কেনিয়ার বিপক্ষে ৩ ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজের সবকটি ম্যাচ জিতে প্রথমবারের প্রতিপক্ষেকে হোয়াইটওয়াশ করার স্বাদ পায় বাংলাদেশ। সে সময় কেনিয়াই ছিল বাংলাদেশের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী।

২০০৬ সালে খর্বশক্তির জিম্বাবুয়েকে হারিয়ে প্রথমবারের মতো কোনো টেস্ট খেলুড়ে দলকে হোয়াইটওয়াশ করার স্বাদ পায় বাংলাদেশ। ঘরের মাটিতে ৫ ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজের সবকটি ম্যাচেই সহজ জয় তুলে নেয় টাইগাররা। তাতে আত্মপ্রসাদ কতটা এসেছে তারচেয়ে বড় কথা আত্মবিশ্বাসের পালে হাওয়া লেগেছে টাইগারদের। অবশ্য, এর আগেই কার্ডিফ মহাকাব্য, অজি-বধের উপাখ্যান রচনা করেছে টাইগাররা। ২০১০ সালে ব্ল্যাক ক্যাপসদের ৪-০ ব্যবধানে হোয়াইটওয়াশ করে ক্রিকেট বিশ্বকে তাক লাগিয়ে দেয় বাংলাদেশ।

তার আগে, ২০০৬-২০০৭ সালে স্কটল্যান্ড, বারমুডা ও কানাডার বিপক্ষে দুই ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজে ২-০তে জিতে আরও হোয়াইটওয়াশের স্বাদ পায় বাংলাদেশ। ২০০৭-৮ মৌসুমে বাংলাওয়াশের শিকার হয় আয়ারল্যান্ড। 

২০০৯ সালে আবারও কোনো টেস্ট খেলুড়ে দলকে হোয়াইটওয়াশের ফাঁদে ফেলে বাংলাদেশ। উইন্ডিজের বিপক্ষে সিরিজ জেতে ৩-০ ব্যবধানে। তবে বাংলাদেশের হোয়াইটওয়াশের ইতিহাসে সবচাইতে বড় সাফল্য পাকিস্তানকে দেশের মাটিতে বাংলাওয়াশ করা। ২০১৫ সালে বাংলাদেশ সফরে আসে পাকিস্তান। সেবার ১৬ বছর পর পাকদের বিরুদ্ধে দ্বিতীয় জয় তুলে নেয় টাইগাররা। শুধু তাই নয়, হেসে খেলে জিতে নেয় তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজের সবকটি ম্যাচ।

২০১৫ সালের পর থেকে নতুন কোনও টেস্ট খেলুড়ে দলকে হোয়াইটওয়াশ করতে পারেনি বাংলাদেশ। পুরোনো দলগুলোকে একাধিকবার ধবলধোলাই করতে পারলেও এখনও সেই ‘বাংলাওয়াশের’ বাইরে রয়ে গেছে অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ড, দক্ষিণ আফ্রিকা ভারত ও শ্রীলঙ্কা। তবে এবার লঙ্কানদের বাগে পেয়েছে বাঘেরা। তিন ম্যাচের সিরিজের প্রথম দুই ম্যাচ জিতে ইতিমধ্যেই লঙ্কানদের বিপক্ষে প্রথমবারের মতো সিরিজ জয়ের স্বাদ নিয়েছে বাংলাদেশ।  শুক্রবার সিরিজের তৃতীয় ওয়ানডেতে জিততে পারলেই নিজেদের ক্রিকেট ইতিহাসে আরও একটি পালক যুক্ত করবে বাংলাদেশের। সেক্ষেত্রে ২০০৭ সালে কানাডা ও বারমুডার বিপক্ষে আনঅফিসিয়াল সিরিজ দুটি বাদ দিলে অষ্টম দল হিসেবে ‘বাংলাওয়াশের’ তিক্ত অভিজ্ঞতা পাবে লঙ্কানরা। 

প্রতিপক্ষমৌসুমফলাফল ভেন্যু
কেনিয়া ২০০৫-০৬৪-০বাংলাদেশ
কেনিয়া ২০০৬৩-০কেনিয়া
জিম্বাবুয়ে ২০০৬-০৭৫-০বাংলাদেশ
স্কটল্যান্ড ২০০৬-০৭২-০বাংলাদেশ
বারমুডা, কানাডা ২০০৭২-০ওয়েস্ট ইন্ডিজ
আয়ারল্যান্ড ২০০৭-০৮৩-০বাংলাদেশ
ওয়েস্ট ইন্ডিজ ২০০৯৩-০ওয়েস্ট ইন্ডিজ
নিউজিল্যান্ড ২০১০-১১৪-০বাংলাদেশ
নিউজিল্যান্ড২০১৩-১৪৩-০বাংলাদেশ
জিম্বাবুয়ে২০১৪-১৫৫-০বাংলাদেশ
পাকিস্তান২০১৫-১৬৩-০ বাংলাদেশ


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply