সারা পৃথিবীতে করোনার টিকা সহজলভ্য করতে ভ্যাকসিনের পেটেন্ট আইন শিথিল করা প্রয়োজন। মঙ্গলবার (১ জুন) উঠতি অর্থনীতির দেশগুলোর সংগঠন ব্রিকসের সম্মেলনে এ পরামর্শ দেন নেতারা। তাদের মতে, প্রযুক্তি বিনিময় হলে নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় টিকা উৎপাদনের ক্ষমতা পাবে অনেক দেশ। এদিকে ব্রিকসের সদস্য ব্রাজিলের সাথে প্রযুক্তি বিনিময় চুক্তি করেছে অ্যাস্ট্রাজেনেকা। ফলে এবার নিজেই ভ্যাকসিনের কাঁচামাল তৈরি করতে পারবে ব্রাজিল।
করোনায় প্রাণহানির দিক থেকে বিশ্বে ২য় অবস্থানে থাকা ব্রাজিলে ভ্যাকসিনের টানাটানি চলছে শুরু থেকেই। বিশাল দেশটিকে টিকার জন্য নির্ভর করতে হচ্ছে আমদানির উপর। একটি কোম্পানি অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা উৎপাদনের অনুমতি পেলেও কাঁচামালের অভাবে সুবিধা করতে পারেনি। এ সমস্যা এড়াতে অ্যাস্ট্রাজেনেকার সাথে প্রযুক্তি বিনিময় চুক্তি করেছে ব্রাজিল।
সমঝোতা অনুসারে অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকার মূল কাঁচামাল এপিআই উৎপাদন করতে পারবে ব্রাজিলের প্রতিষ্ঠান ফায়োক্রুজ। মিলবে রফতানির সুযোগও।
ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট জাইর বোলসোনারো বলেন, প্রযুক্তি বিনিময় চুক্তি আমাদের নিজস্ব উৎপাদনের ক্ষমতা দেবে। এখন থেকে এপিআই উৎপাদন করবে ব্রাজিল। ব্রাজিলের জন্য এটা অনেক বড় পদক্ষেপ। প্রাথমিকভাবে ৬শ’ মিলিয়ন ডোজের বেশি টিকা উৎপাদনের লক্ষ্য আমাদের। আশা করছি শিগগিরই রফতানিও করতে পারবো।
টিকার বণ্টন নিয়ে আলোচনায় মঙ্গলবার ভার্চুয়াল সভা করে ব্রিকসের ৫ সদস্য ব্রাজিল, রাশিয়া, ভারত, চীন ও দক্ষিণ আফ্রিকা। সভাপতিত্ব করেন ভারতীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুব্রামনিয়াম জয়শঙ্কর। সভায় মহামারি মোকাবেলায় পারস্পরিক সহযোগিতার ওপর গুরুত্ব দেন নেতারা।
চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই বলেছেন, আমাদের সহযোগিতার ক্ষেত্র প্রতিনিয়ত বাড়ছে। কারণ অর্থনীতি, বাণিজ্য, নিরাপত্তা সব ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক প্রভাব বাড়ছে। কেবল ৫ দেশের জন্য নয়, পুরো বিশ্বের মহামারি মোকাবেলায় পারস্পরিক সহযোগিতার হাত প্রসারিত করতে হবে।
ব্রাজিলের মতোই টিকার মেধাসত্ত্ব আইন সহজ করার তাগিদ ব্রিকসের বাকি দেশগুলোরও। এরই মধ্যে ডব্লিউটিওকে এ বিষয়ক প্রস্তাব দিয়েছে বলে জানায় ভারত ও দক্ষিণ আফ্রিকা।
দক্ষিণ আফ্রিকার পররাষ্ট্রমন্ত্রী নালেদি পান্দর বলেন, ভারত ও দক্ষিণ আফ্রিকা ডব্লিউটিও’র কাছে প্রস্তাবনা দিয়েছে, যাতে মেধাসত্ত্ব থাকা প্রযুক্তি ব্যবহারের সুযোগ তারা পায়। অস্থায়ীভাবে প্রযুক্তি ব্যবহারের সুবিধা পেলেও দরিদ্র দেশগুলো টিকা উৎপাদনের সুযোগ পাবে।
মহামারি ছাড়াও আন্তর্জাতিক ও আঞ্চলিক উত্তেজনা, উন্নয়ন ও পর্যটন নিয়ে আলোচনা হয় ব্রিকস নেতাদের মধ্যে।
Leave a reply