সম্প্রতি টিকটক হৃদয়সহ ভারতে নারী পাচার করা একটি চক্রের কার্যকলাপ নিয়ে অনুসন্ধান করতে গিয়ে এর সঙ্গে রিসোর্টগুলোর সংশ্লিষ্টতা পেয়েছে পুলিশ। এসব রিসোর্ট পুলপার্টির নামে অবৈধ ও অশ্লীল কার্যক্রম চালাতো বলে জানা গেছে।
যমুনা টেলিভিশনের এক অনুসন্ধানে দেখা যায়, পুল পার্টিতে উঠতি তরুণদের আকৃষ্ট করতে ব্যবহার করা হয় তরুণীদের। ডিজে বা পুলপার্টির নামে এসব জায়গায় চলে তরুণ-তরুণীদের অবাধ মেলামেশা; উচ্চ শব্দের ডিস্কো জকির তালে সুইমিংপুলে উদ্দাম নাচানাচি; উচ্ছ্বলতার নামে উশৃঙ্খলতা, আনন্দের আড়ালে চলে নগ্নতা। সুইমিং পুলে উন্মত্ততার মাঝেই মেয়েদের সান্নিধ্যে আসে উঠতি তরুণরা। তারপর একসময় জড়িয়ে পড়ে অবৈধ কার্যকলাপে। পরিচয় গোপন করে ফোন করলে রিসোর্ট কর্তৃপক্ষের এক দালাল জানায়, একান্তে ব্যবহারের জন্য রুম চাইলে তাও পাওয়া যাবে।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে লাইভ করে চলে পুল পার্টির টিকিট বিক্রি। প্রতিজনের জন্য হাজার টাকায় পাওয়া যায় টিকিট। তবে যুগলদের জন্য রয়েছে ডিসকাউন্ট। ১৬শ টাকায় দুটি টিকিটি পাওয়া যায় সেখানে।
সম্প্রতি আলোচনায় আসা টিকটক হৃদয় এভাবেই পা বাড়ায় অপরাধ জগতে। পুলপার্টির আড়ালে নারী পাচার সিন্ডিকেটের অন্যতম হোতায় পরিণত হয় হৃদয়। পুলিশের অনুসন্ধানে জানা যায়, গাজীপুরের নির্জন আফরিন রিসোর্টে নিয়মিতই চলতো হৃদয় বাবুর পুলপার্টি। পরিচয়-বন্ধুত্বের পর একসময় উচ্চাভিলাষী তরুণীদের পাচার করে দিতো ভারতে। পালিয়ে আসা এমন এক ভুক্তভোগী সম্প্রতি যমুনা টেলিভিশনের সাথে একান্ত সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন, লালনের মাজারে নিয়ে যাবার কথা বলে তাকে পাচার করা হয়েছিলো ভারতে।
প্রথমে টিকটক সুপার স্টার বানানোর প্রলোভন দিয়ে ঘনিষ্ঠতা; তারপর ভালো চাকরির কথা বলে একসময় পাচার করে দেওয়া হয় তরুণীদের। এভাবেই পাচার সিন্ডিকেটের খপ্পরে পড়ে যায় বখাটে কিশোরীরা।
তেজগাও বিভাগের ডিসি মো. শহিদুল্লাহ্ জানান, ভারতে পাচার করার পর মেয়েদের অশ্লীল ভিডিও ধারণ করে তাদের জিম্মি করা হতো। তারপর বিভিন্ন মেয়াদের চুক্তিতে আবাসিক হোটেলে পাঠিয়ে বাধ্য করা হতো যৌনজীবিকায়।
সম্প্রতি নারী পাচারকারী চক্রের হোতা হৃদয় ও তার কয়েকজন সহযোগীকে গ্রেফতার করার পর অনুসন্ধানে নামে। পুলিশ জানায় পুলপার্টির আয়োজক ও টিকটক লাইকির নামে অশ্লীলতা করে এমন অন্তত ৫শ জন বখাটের তালিকা নিয়ে মাঠে নেমেছেন তারা।
Leave a reply