ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি:
টিকা কার্ড করে দেওয়ার কথা বলে অভিনব কায়দায় ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগরে একটি বেসরকারি হাসপাতাল থেকে চুরি হওয়া ৪৭ দিনের শিশু ওবায়েদ সরকারকে অবশেষে পাওয়া গেছে।
রোববার বিকালে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা শহরের হালদারপাড়ায় সড়কের পাশ থেকে নূরজাহান আক্তার নামে এক কলেজ ছাত্রী শিশুটিকে পেয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানায় নিয়ে আসে। পরে পুলিশ চিকিৎসার জন্য ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর হাসপাতালে প্রেরণ করে।
খবর পেয়ে রাত ৯টার দিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর হাসপাতালে ছুটে আসেন শিশুর মা সাবিনা আক্তার। এই সময় এক হৃদয় বিধায়ক পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়। ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানা পুলিশ ও নবীনগর থানা পুলিশের উপস্থিতিতে
শিশুটিকে তার মা সাবিনা আক্তারে কাছে তুলে দেওয়া হয়। তবে অজ্ঞাত প্রতারক নারীকে এখনো পুলিশ সনাক্ত কিংবা গ্রেফতার করতে পারেনি।
এর আগে রবিবার দুপুরে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলার সদরের আহমদ মেডিকেল হাসপাতালে থেকে শিশুটি চুরি হয়। নবজাতক ওবায়েদ সরকার উপজেলার মাঝিকাড়া গ্রামের কাউসার মিয়ার ছেলে।
শিশুটির মা সাবিনা আক্তার জানা্, গত বুধবার সকালে শিশুটি টিকা কার্ড করার কথা বলে তার বাড়িতে যায় অজ্ঞাত ওই নারী। এসময় তিনি জানিয়ে দিয়ে যান, খবর দিলে শিশুটিকে নিয়ে নবীনগর যাওয়ার জন্য। রোববার সকালে সে ফোন করে শিশুটিকে নিয়ে দ্রুত নবীনগর সদরের আহমদ হাসপাতালে আসার জন্য বলে। আসার পর তাকে ফ্রি আল্ট্রাসনোগ্রাফি করার পরামর্শ দেয়। হাসপাতালে আল্ট্রাসনোগ্রাফি কক্ষে ঢোকার আগে সাবিনা আক্তার তার শিশু সন্তানকে ওই নারীর কোলে দিয়ে ভেতরে যান। আল্ট্রাসনোগ্রাফি কক্ষ থেকে বের হয়ে দেখেন নবজাতক শিশুসহ প্রতারক নারী উধাও।
এর পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকসহ গণমাধ্যমে চারদিকে শিশুটি ছবি ছড়িয়ে পড়ে। বিকালে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা শহরের হালদার পাড়ায় সড়কের পাশ থেকে তোয়ালে দিয়ে জড়ানো অবস্থায় পড়ে থাকা শিশুটিকে উদ্ধার করে নূরজাহান আক্তার নামে এক কলেজ ছাত্রী।
পড়ে শিশুটিকে থানায় নিয়ে আসলে পুলিশ ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর জেনারেল হাসপাতালে প্রেরণ করে। ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর হাসপাতালে জরুরী বিভাগের চিকিৎসক ডা. ফাইজুর রহমান ফয়েজ জানান শিশুটির শারীরিক পরীক্ষা করা হয়েছে। এখন তার অবস্থা ভাল আছে।
এই ব্যাপারে সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এমরানুল ইসলাম বলেন বিকেলে শিশুটিকে জেলা শহরের হালদার পাড়ায় একটি সড়কের পাশে পড়ে থাকতে দেখে কলেজ ছাত্রী নূরজাহান আক্তার তাকে উদ্ধার করে। শিশুটিকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসার পর জেলা সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছিল।
এখন নবীনগর থানা পুলিশের মধ্যস্থতায় তার মা সাবিনা আক্তারের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। আইনি বিষয়গুলো নবীনগর থানা পুলিশ দেখবে বলে জানান তিনি।
Leave a reply