চুরি হচ্ছে মার্কিন সামরিক বাহিনীর অস্ত্র

|

এক দশকে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনীর প্রায় ২ হাজার অস্ত্র চুরি হয়েছে। এসব ভয়ংকর মারণাস্ত্র এখন অপরাধীদের হাতে হাতে। খুন-ডাকাতি-অপহরণের মতো অপরাধে নিয়মিত ব্যবহৃত হচ্ছে অস্ত্র। বার্তা সংস্থা এপি’র অনুসন্ধানে উঠে এসেছে চাঞ্চল্যকর এই তথ্য। বিষয়টিকে জননিরাপত্তার জন্য ঝুঁকিপূর্ণ মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

২০১৮ সালে নিউইয়র্কের আলবেনিতে এক সন্ত্রাসীর হাতে দেখা যায় একটি নাইন এমএম বেরেটা পিস্তল। অথচ এই অস্ত্রটি থাকার কথা ৬শ’ মাইল দূরে নর্থ ক্যারোলাইনার সামরিক ঘাঁটিতে। ফোর্ট ব্র্যাগ ঘাঁটি থেকে এটি কিভাবে আলবেনিতে পৌঁছালো সে তথ্য নেই মার্কিন সেনাবাহিনীর কাছে।

অল্প সময়ের ব্যবধানে, যুক্তরাষ্ট্রে মোট চারটি অপরাধের ঘটনায় ‘নাইন এমএম বেরেটা’ ব্যবহারের নজির পাওয়া যায়। এ প্রসঙ্গে আলবেনি কাউন্টির ডিসট্রিক্ট অ্যাটর্নি ডেভিড সোরস বলেছেন, এটা ভয়ঙ্কর বিষয়। সামরিক ঘাঁটি থেকে অস্ত্র চুরি হওয়াটা খুবই আশঙ্কাজনক। এ বিষয়ে প্রতিটি সেনা ঘাঁটিতে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নিশ্চিত করা উচিত। একটা অস্ত্র অসংখ্য অঘটন জন্ম দিতে পারে।

মার্কিন সামরিক বাহিনীর বরাতে বার্তা সংস্থা এপি জানিয়েছে, মার্কিন সামরিক বাহিনীর কাছ থেকেই চুরি হচ্ছে বিভিন্ন মারণাস্ত্র। সেনা ঘাটি, অস্ত্র বহনকারী গাড়ি, যুদ্ধজাহাজ, কারখানা এমনকি গোপন ভল্ট থেকেও অস্ত্র চুরির রেকর্ড রয়েছে। বেশিরভাগ চুরির ঘটনা হয় নজরদারীতে দুর্বলতা আর ভুলের জেরে।

পেন্টাগন মুখপাত্র জন কিরবি জানিয়েছেন, লাখ লাখ অস্ত্র ভল্ট পর্যন্ত পৌঁছাতে অনেকবার হাত বদল হয়। এই প্রক্রিয়াটিকে সবসময় সর্বোচ্চ গুরুত্বের সাথে দেখা হয়। তবে ভুল হয় না এমন না। কিছু কিছু হারানোর ঘটনা অগোচরেই থেকে যায়। তবে অস্ত্রের সুরক্ষায় নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা নিশ্চিতে সেনাদের নিয়মিত প্রশিক্ষণ দেয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন তিনি।

হারিয়ে যাওয়া আগ্নেয়াস্ত্রের কিছু উদ্ধার হলেও হদিস মেলেনা বেশিরভাগের। কিছুক্ষেত্রে প্রশিক্ষণার্থীর মাধ্যমেও অস্ত্র চুরির প্রমাণ মিলেছে। এম ফোর কার্বাইন, এম ইলেভেন সেমি অটোমেটিক হ্যান্ডগান চুরি করে পালানোর পর গ্রেফতার হয় জেমস মোরালেস নামের এক প্রশিক্ষণার্থী। চারটি রাইফেল ও দু’টি হ্যান্ডগানসহ গ্রেফতার হলেও বাকি অস্ত্রগুলো গায়েব হয়ে যায়। পরে বোস্টনে এক ডাকাতিতে ব্যবহৃত হয় সে অস্ত্র।

মার্কিন নিরাপত্তা সংস্থা এনসিআইএস এর সাবেক ডেপুটি ডিরেক্টর মার্ক রিডল বলেছেন, যত কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থাই থাকুক, ভেতরে থেকে, সবকিছু জেনে কেউ যদি নিরাপত্তা ভাঙতে চায় তখন সিস্টেমের দুর্বলতা নজরে আসবেই। অস্ত্র সরবরাহের সময়ই আমাদের নিয়ন্ত্রণ ও নিরাপত্তা জোরদার করতে হবে।

এপির প্রতিবেদন প্রকাশের পর সিনেটের আর্মড সার্ভিস কমিটিতে তোলপাড় সৃষ্টি করেছে বিষয়টি।
ইতোমধ্যেই অস্ত্র চুরি বন্ধে জবাবদিহিতা ও নিয়মিত প্রতিবেদন প্রকাশের তাগিদ দিয়েছে কমিটি।


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply