স্টাফ রিপোর্টার, যশোর:
হ্যামিলনের বাঁশিওয়ালার গল্প কে না জানে। তার বাঁশির সুরে গর্ত থেকে বের হয়ে এসেছিল শহরের সব ইঁদুর। কিন্তু মাহাতাবের বাঁশির সূর শুনে ঝাঁকে ঝাঁকে মৌমাছি তার শরীরে এসে বসে। মৌমাছির ভিড়ে দেখা যায়না তার শরীর। এই অভূতপূর্ব দৃশ্য দেখতে উৎসুক মানুষ ভিড় জমাচ্ছে তার বাড়িতে।
মাহাতাব মোড়লের বাড়ি যশোরের কেশবপুর উপজেলার হাসানপুর ইউনিয়নের মোমিনপুর গ্রামে। সবাই তাকে চেনে ‘মৌমাছি মাহাতাব’ নামে। মাহাতাব ছোটবেলা থেকেই মৌচাক থেকে মধু আহরণ করেন।
বালতিতে শব্দ করে চাক থেকে মৌমাছি দূরে সরিয়ে দেওয়ার কৌশলও রপ্ত করেন অনেক আগেই। তারপর টিনের থালায় শব্দ শুনে মৌমাছি চাক ছেড়ে তার কাছে আসতে শুরু করে। কাছে আসার এমন দৃশ্য থেকে মধু সংগ্রহকারী এ পতঙ্গের প্রতি তার ভালোবাসা জন্মায়।
কেন মৌমাছি মাহাতাবের শরীরে বসছে এমন প্রশ্নের জবাবে যশোর সরকারি মহিলা কলেজের প্রাণীবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক নার্গিস শিরীন বলেন, বাঁশির সুরে মৌমাছি আকৃষ্ট হয়ে মানুষের গায়ে উড়ে এসে বসার কোনো সুযোগ নেই। মৌমাছিরা তো মধুর প্রতি আকৃষ্ট হয়, তাই কেউ যদি তার শরীরে মধু, হরমোনযুক্ত সুগন্ধি স্প্রে করে তখন উড়ে এসে মৌমাছিরা বসতে পারে। ঘামের জন্য আকৃষ্ট হয়ে মৌমাছি মাহাতাব মোড়লের গায়ে পড়ার যে দাবি তিনি
করেছেন, তা অসম্ভব বলে মনে করেন তিনি।
যদিও মাহাতাব মোড়ল বলেন, বাঁশি বাজালে তার সুরে আকৃষ্ট হয়েই মৌমাছি এসে শরীরে বসে। এর বাইরে কোনো রহস্য নেই। যদিও কিছুক্ষণ পরেই তিনি বলেন, তিনি মৌমাছি গায়ে বসানোর কৌশল হিসেবে গায়ে সুগন্ধি মেখে নেন। তিনি আরও বলেন, মধু ভাঙ্গার সময় মধু গায়ে লেগে থাকলে এক-দুটা মৌমাছি এসে গায়ে বসত। সেই অভিজ্ঞতা থেকে তিনি কখনও ফুলের ঘ্রাণ, কখনও সুগন্ধি গায়ে মেখে বাঁশি বাজান। তখন বেশি পরিমাণে মৌমাছি গায়ে এসে বসে। তবে গায়ে ঘাম থাকলেও বাঁশি বাজালে মৌমাছি এসে বসে বলে দাবি করেন তিনি।
২০ বছর ধরে মাহাতাব মধু সংগ্রহ করেন। তার বাবার নাম মৃত কালাচাঁদ মোড়ল। সুন্দরবনসহ সাতক্ষীরা, খুলনা ও যশোর অঞ্চলে মৌচাক থেকে মধু সংগ্রহ করেন তিনি। মধু বিক্রি করেই চলে তার সংসার
Leave a reply