বিশ্বচ্যাম্পিয়নদের সাথে চ্যাম্পিয়নের মতো খেলে শেষ ষোলোয় উঠলো পর্তুগাল

|

নাটকীয়তা, বিতর্কিত সিদ্ধান্ত আর পেনাল্টিতে ২-২ গোলে ড্র হয়েছে বর্তমান ইউরো চ্যাম্পিয়ন পর্তুগাল ও বর্তমান বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ফ্রান্সের গ্রুপ অব ডেথের হাই অক্টেন ম্যাচ। গ্রুপ এফ থেকে ফ্রান্স ও পর্তুগাল যথাক্রমে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন ও গ্রুপ রানার্স আপ হিসেবে উঠে গেল দ্বিতীয় রাউন্ডে। এই ম্যাচ কেবল দুই দলেরই নয়, পরীক্ষা নিয়েছে সময়ের অন্যতম সেরা রেফারি আন্তোনিও মাতেও লাহোজেরও।

বিতর্কিত দুটি পেনাল্টির সিদ্ধান্তে প্রথমার্ধ শেষে ফ্রান্স ও পর্তুগালের মধ্যে বিরাজ করেছে সমতা। তবে সিদ্ধান্ত দুটি একপাশে সরিয়ে রাখলে সেরা সাইড ছিল গতবারের চ্যাম্পিয়ন ও এই ম্যাচে অনেকের চোখেই আন্ডারডগ পর্তুগাল। ফেভারিট ফ্রান্সকে প্রেসিং ও পাসিং দিয়ে এমনই হতাশ দর্শক বানিয়ে রেখেছিল রেনাতো সানচেজরা যে, ৩০ মিনিটের মধ্যে ফ্রান্স দেখছে তিনটি হলুদ কার্ড!

কর্নার থেকে আসা বল ক্লিয়ার করতে গিয়ে ফরাসি গোলরক্ষক হুগো লরিসের ফিস্ট গিয়ে আঘাত করে পর্তুগীজ সিডিএম দানিলোকে। রিপ্লেতে যদিও দেখা যায় লরিস আগে বলেই চার্জ করেছিলেন, তবু রেফারি বাজান পেনাল্টির বাঁশি। ৩০ মিনিটে পেনাল্টি থেকে গোল করে দলকে এগিয়ে নেন ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো।

এই গোলের আগে ও পরে, দু’ সময়েই খেলায় ছিল পর্তুগীজ আধিপত্য আর জার্সির পেছনে নাম ও নাম্বার ছাড়া চেনার খুব বেশি উপায় ছিল না বিখ্যাত সব ফরাসি খেলোয়াড়কে। রেনাতো সানচেজ ও বার্নাদো সিলভার অনবরত প্রেসিং এ খেই হারানো পগবা আর তোলিসো বলও হারাচ্ছিলেন সমান তালে। খুঁজে পাওয়া যায়নি এনগোলো কান্তেকেও। ওয়ান ওয়ান পজিশনে রুই প্যাট্রিসিওর হাতে বল তুলে দিয়েছেন কিলিয়ান এমবাপ্পে।

প্রথমার্ধের শেষ মিনিটে খেলার স্রোতের বিপরীতে পেনাল্টি পায় ফ্রান্স। নেলসন সেমেদোর আলতো ছোঁয়াতেই কিলিয়ান এমবাপ্পে ডি-বক্সের মধ্যে পড়ে গেলে রেফারি মাতেও লাহোজ দেন পেনাল্টির সিদ্ধান্ত। রুই প্যাট্রিসিওকে পরাস্ত করে ফ্রান্সকে ম্যাচে ফেরান ৬ বছর পর জাতীয় দলে ফেরা রিয়াল মাদ্রিদ ফরোয়ার্ড কারিম বেনজেমা।

এখানেই ঘুরে যায় খেলার মোড়। দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই মাঝমাঠ থেকে বাড়ানো পল পগবার ডিফেন্স চেরা পাস পেয়ে প্লেসিং শটে বল জালে জড়ান মিনিট দুয়েক আগে ইউরোতে নিজের প্রথম গোলের দেখা পাওয়া বেনজেমা। কিন্তু ফ্রান্স এই অগ্রগামীতা বেশি সময় ধরে রাখতে পারেনি। ম্যাচে সমতা ফিরিয়ে আনতে আবার হাজির পেনাল্টি! তবে ৬০ মিনিটে ডি-বক্সে ফরাসি ডিফেন্ডারের হ্যান্ডবল নিয়ে আর বিতর্ক চলে না। আবারও লরিসকে ডজ দিয়ে পেনাল্টিতে গোল করার মাধ্যমে আন্তর্জাতিক ফুটবলে আলী দাইয়ের রেকর্ড ১০৯ গোলকে স্পর্শ করেন পর্তুগীজ ক্যাপ্টেন ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো।

এরপর ম্যাচে আর কোনো গোল হয়নি। হতে দেননি অবশ্য রুই প্যাট্রিসিও। হঠাৎ করেই পর্তুগালকে টুর্নামেন্টে টিকিয়ে রাখার সকল দায় নিজের কাঁধে নিয়ে অবিশ্বাস্য ডাবল সেভ করেন তিনি। ডি-বক্সের বাইরে থেকে পগবার দুর্দান্ত শটকে ফিরিয়ে দিয়ে এ টুর্নামেন্টের সেরা সেভটা করেই দায়িত্ব শেষ ভাবলেন না। বরং ফিরতি বলে আতোয়ান গ্রিজমানের শটও দারুণ দক্ষতায় রুখে দিয়ে নিশ্চিত করলেন, পর্তুগাল যাচ্ছে রাউন্ড অব সিক্সটিনে।


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply