যুদ্ধজাহাজকে ধাওয়ার ঘটনা ঘিরে উত্তেজনা ছড়িয়েছে রাশিয়া ও ব্রিটেনের মধ্যে। গত বুধবার (২৩ জুন) জলসীমা লঙ্ঘন করে রয়েল নেভির ডেস্ট্রয়ার ‘এইচএমএস ডিফেন্ডার’- এমনটাই অভিযোগ রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের। যদিও এ অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে লন্ডন। তাদের জোরালো দাবি, আন্তর্জাতিক জলসীমাতেই ছিল জাহাজ।
রয়েল নেভির যুদ্ধজাহাজ এইচএমএস ডিফেন্ডারকে তাড়া করার একটি ভিডিও প্রকাশ করেছে রুশ প্রতিরক্ষা বাহিনী। মস্কোর অভিযোগ, বুধবার জলসীমার ৩ কিলোমিটার ভেতরে প্রবেশ করে ডেস্ট্রয়ারটি। গুলি ছুঁড়ে সতর্ক করার পরও না মানায় যুদ্ধবিমান থেকে ফেলা হয় ৪টি বোমা।
ক্রিমিয়ার কেপ ফায়োলেন্ট এলাকার ঘটনাটিকে স্পষ্ট উসকানিমূলক আচরণ হিসেবে আখ্যা দিচ্ছে রাশিয়া। তারা অভিযোগ করেছে, প্রভাব বিস্তারের উদ্দেশ্যেই অঞ্চলটিতে টহল মহড়া বাড়িয়েছে ন্যাটো।
রাশিয়ার ডেপুটি পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই র্যাবকভ বলেন, আমরা সাধারণ বিচার বুদ্ধি ছাড়া আর কীইবা আশা করতে পারি। আমরা চাই তারা আন্তর্জাতিক আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হবে। কিন্তু তাতেও যদি কাজ না হয়, আমাদের সহকর্মীরা যদি আমাদের কথা বুঝতে না পারে সেক্ষেত্রে জানিয়ে রাখতে চাই, আমরা কেবল অনুপ্রবেশকারীর পথেই নয়, যেকোনো লক্ষ্যবস্তুতেই বোমা ছুঁড়তে পারি।
রাশিয়ার চিফ অব জেনারেল স্টাফ, ভ্যালেরি গেরাসিমভ বলেন, রুশ জলসীমায় ইচ্ছাকৃতভাবে তৎপরতা বৃদ্ধি করছে ন্যাটো। নিয়মিত বিরতিতে কৃষ্ণ ও বাল্টিক সাগরে মহড়া চালাচ্ছে রণতরী, দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র, যুদ্ধবিমান আর ড্রোন। যুক্তরাষ্ট্র-ব্রিটেন আর মিত্র দেশগুলোর এ পদক্ষেপ স্পষ্টভাবে উসকানিমূলক। তাদের বলবো- সাবধান হন, অন্যথায় উত্তেজনা বাড়বে।
রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মারিয়া জাখারভ জানান, ব্রিটিশ যুদ্ধজাহাজের বিপজ্জনক আচরণের মোক্ষম এবং পেশাদারী জবাব দিয়েছে রুশ প্রতিরক্ষা বাহিনী। ঘটনাটি খুবই অশোভন আর উসকানিমূলক। যা আন্তর্জাতিক সমুদ্র আইন এবং রাশিয়ার বিধিমালার স্পষ্ট লঙ্ঘন। উপযুক্ত পদক্ষেপ গ্রহণে ব্রিটিশ রাষ্ট্রদূতকে তলব করা হয়েছিল।
অবশ্য অভিযোগটি সাফ অস্বীকার করেছে ব্রিটেন। প্রতিরক্ষামন্ত্রী বেন ওয়ালেস তার বক্তব্যে বলেন, আন্তর্জাতিক জলসীমাতেই ছিল জাহাজ। আর রাশিয়ার পক্ষ থেকেও আসেনি সতর্কতা।
বেন ওয়ালেস বলেন, ওডেসা থেকে জর্জিয়ায় যাচ্ছিলো এইচএমএস ডিফেন্ডার। রুটটি সাবেক ক্রিমিয়ার অংশ। এই রুট ব্যবহারের অনুমতি রয়েছে আন্তর্জাতিক জলসীমা আইনেও। পথটি অতিক্রমের সময় অনুসরণ করে রুশ জাহাজ। তবে কোন সর্তক সংকেত দেয়নি তারা। বরং কৃষ্ণ সাগরে নিয়মিত মহড়া চালাচ্ছিল রাশিয়ার প্রতিরক্ষা বাহিনী। যার আওয়াজ শুনতে পাচ্ছিলেন রয়েল নেভির ক্রুরা।
উল্লেখ্য, ২০১৪ সালে গণভোটের মাধ্যমে ইউক্রেন থেকে রাশিয়ার সাথে সংযুক্ত হয় ক্রিমিয়া। এরপরই বিভিন্ন সময় অঞ্চলটির সীমানা ঘিরে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সাথে সৃষ্টি হচ্ছে উত্তেজনা।
রাশিয়া বলেছে, তারা লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে সক্ষম
Leave a reply