ভিক্ষা করে ঘুষ দিয়েও সরকারি ঘর না পাওয়ার অভিযোগ দুই প্রতিবন্ধীর

|

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি:

কুড়িগ্রাম জেলার উলিপুরের ধরণিবাড়ী ইউনিয়নে দুই শারীরিক প্রতিবন্ধীর কাছ থেকে পর্যায়ক্রমে ২৫ হাজার টাকা ঘুষ নিয়েও তাদেরকে সরকারি আশ্রয়ণ প্রকল্পে ঘর বরাদ্দ না দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে এক ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তার (তহলিশদার) বিরুদ্ধে। ওই দুই শারীরিক প্রতিবন্ধী জানান, তারা ভিক্ষা করে জমানো টাকা ও সাহায্য থেকে পাওয়া বাছুর বিক্রি করে স্থায়ী ঠিকানা পাওয়ার আশায় ধরণিবাড়ী ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তা মাসুদ রানাকে টাকা দিয়েছিলেন কিন্তু ঘর পাননি। সাথে। কিন্তু অনেক ঘুরে ঘর না পেয়ে ওই দুই প্রতিবন্ধী সুবিচার চেয়ে মঙ্গলবার (২৯ জুন) উলিপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসারের দফতরে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।

অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, রংপুরের তারাগঞ্জ উপজেলার ডাঙ্গীরহাট ইউনিয়নের দুই শারীরিক প্রতিবন্ধী এছোব আলী ও মাহমুদা বেগম একটি স্থায়ী ঠিকানার জন্য যোগাযোগ করেন তাদের মামার বাড়ির এলাকা ধরণিবাড়ী ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তা মাসুদ রানার সাথে। তাদের কাছে প্রতিটি ঘরের জন্য ২০ হাজার টাকা করে দাবী করেন এই কর্মকর্তা এবং টাকার কথা কাউকে বলতে নিষেধ করেন। পরে এছোব আলী তার ভিক্ষার জমানো সঞ্চয় ভেঙে ১০ হাজার টাকা তহশিলদার মাসুদ রানাকে প্রদান করেন। অপরদিকে মাহমুদা বেগম ব্র্যাক থেকে পাওয়া একটি গরু (বাছুর) ১২ হাজার টাকায় বিক্রি করেন এবং তার ভিক্ষাবৃত্তির জমানো ৩ হাজার টাকাসহ ১৫ হাজার টাকা মাসুদ রানাকে দেন। দুইজন মিলে ২৫ হাজার টাকা দিলেও ঘর পাননি। পরে টাকা ফেরত চাইলে তাদের সাথে দেখা করেননি ওই ভূমি কর্মকর্তা।

অভিযোগকারীর মামা সাহিদুল ইসলাম জানান, দুই শারীরিক প্রতিবন্ধী এছোব আলী ও মাহমুদা বেগম তার আপন ভাগ্নে ও ভাগ্নি। দুজনের পায়ে সমস্যা। হাঁটতে পারে না। ভিক্ষা করে চলে তাদের জীবন। ধরণিবাড়ী ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তা মাসুদ রানা সরকারি ঘর দেয়ার কথা বলে দুজনের কাছ থেকে ২৫ হাজার টাকা ঘুষ নেয়। কিন্তু তাদের ঘর বুঝিয়ে দেয়নি।

এ ব্যাপারে ধরণিবাড়ী ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তা মাসুদ রানা ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ওই দুই প্রতিবন্ধীকে বুঝিয়েছি তারা পরের কিস্তিতে ঘর পাবে। কিন্তু ধৈর্য নেই তাদের। আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ করেছে।

উলিপুর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা ও আশ্রয়ণ প্রকল্প কর্মসূচীর সদস্য সচিব সিরাজদৌল্লা বলেন, ইউএনওসহ আমরা প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটি। আর উপকারভোগী নির্বাচন করেছেন এসিল্যান্ড অফিসের নেতৃত্বে ইউনিয়ন তহশিলদার। অনিয়মের অভিযোগ হয়েছে শুনেছি।

এ ব্যাপারে উলিপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও প্রকল্পের সভাপতি নূর-এ-জান্নাত রুমি অভিযোগ পাওয়ার কথা স্বীকার করে জানান, বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply