‘বাঘে ছুঁলে এক ঘা আর পুলিশে ছুঁলে ১৮ ঘা’ পুলিশ সম্পর্কে সাধারণ মানুষের নেতিবাচক ধারণা থেকেই হয়তো এই প্রবাদ চালু। এই ভাবমূর্তি কিছুটা হলেও পাল্টাতে ব্যতিক্রমী উদ্যোগ নিয়েছেন চট্টগ্রাম জেলা পুলিশের রাঙ্গুনিয়া সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) আনোয়ার হোসেন শামীম।
প্রায় এক মাসের বেশি সময় ধরে তার আওতাধীন রাঙ্গুনিয়া মডেল থানা, রাউজান থানা, জেলা স্পেশাল ব্রাঞ্চ এবং ট্রাফিক পুলিশ সদস্যদের প্রাক্টিক্যাল ক্লাস নিচ্ছেন। মানুষের সাথে ভালো আচরণ এবং উন্নত পেশাদারিত্বের কলাকৌশল শেখাচ্ছেন।
মূলত: গত মে মাস থেকে ভিন্নধর্মী এ কার্যক্রম শুরু করেন এএসপি শামীম। রীতিমতো বই, কাগজ-কলম, হোয়াইট বোর্ড, মার্কার ইত্যাদি ব্যবহার করে ভিন্ন ভিন্ন পরিস্থিতিতে জনগণের সঙ্গে পুলিশের আচরণ এবং পুলিশ-জনতা সম্পর্ক বিষয়ে বিস্তারিত পাঠদান করছেন। শেখাচ্ছেন সংবিধানে উল্লেখিত মৌলিক অধিকার, রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতি, মানবাধিকার সহ আইন প্রয়োগের বিভিন্ন দিক। ভালো আচরণের গুরুত্ব এবং অসদাচরণের নেতিবাচক দিক সম্পর্কে ধারণা দিচ্ছেন। পাঠদানের সুবিধার্থে রয়েছে সিলেবাসও।
স্কুল কলেজে যেভাবে প্রাক্টিক্যাল ক্লাস হয়, ঠিক সেভাবেই চলছে পাঠদান। থানার পুলিশ সদস্যদের কয়েকটি গ্রুপে ভাগ করা হয়। কেউ হন ডিউটি অফিসার, কেউ সাজেন থানায় আগত সেবাপ্রার্থী তথা সাধারণ জনগণ। কীভাবে কথাবার্তা বলতে হবে, ভালো আচরণ করে সেবা দিতে হবে, তা শেখানো হয় হাতেকলমে।
শেখানোর পর তা সঠিকভাবে প্রয়োগ করা হচ্ছে কিনা, তা যাচাই করা হয় একেবারে রাস্তায় দায়িত্ব পালন করতে দিয়ে কিংবা বিভিন্ন অ্যাসাইনমেন্টের মাধ্যমে। এক গ্রুপ ব্যবহারিক প্রশিক্ষণ কার্যক্রমে অংশ নেয়, অন্য গ্রুপের সদস্যরা তা প্রত্যক্ষ করে ভুলত্রুটি শুধরে নেন।
ভিন্নধর্মী এ কার্যক্রম প্রসঙ্গে এএসপি আনোয়ার হোসেন শামীম জানান, প্রতি থানায় সপ্তাহে একটি ক্লাস নেয়া হয়। মূলত: পুলিশ সদস্যদের মানসিকতায় ইতিবাচক পরিবর্তন আনা, পেশাদারিত্বের মান বৃদ্ধি করাই এ উদ্যোগের মূল লক্ষ্য।
Leave a reply