প্রায় দুই দশক পর আফগানিস্তানের বাগরাম বিমান ঘাঁটি ত্যাগ করেছে পর যুক্তরাষ্ট্র ও ন্যাটো জোটের সৈন্যরা। যুক্তরাষ্ট্রের একজন প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞের সূত্রে জানা গেছে, ন্যাটো সামরিক জোটের আর কোনো সেনা সদস্য নেই বাগরাম বিমানঘাঁটিতে।
বিবিসি জানিয়েছে , গত বিশ বছর ধরে এই ঘাঁটি থেকে যুক্তরাষ্ট্র ও ন্যাটো বাহিনী তালেবান এবং আল কায়েদার ওপর অভিযান চালিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র ও ন্যাটো সামরিক জোটের সৈন্যদের বাগরাম ছেড়ে যাওয়ার অর্থ হচ্ছে আফগানিস্তান থেকে বিদেশি সৈন্য সম্পূর্ণ প্রত্যাহারের প্রক্রিয়া খুব শীঘ্রই শেষ হচ্ছে।
২০০১ সালে আমেরিকার টুইন টাওয়ারে হামলার পর সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট জর্জ ডব্লিউ বুশ ২০০১ সালে আফগানিস্তানে সন্ত্রাস বিরোধী অভিযান শুরু করেন। তখন থেকেই বাগরাম বিমান ঘাঁটিতে অবস্থান করছে যুক্তরাষ্ট্র ও ন্যাটো সামরিক জোটের সৈন্যরা।
সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্র ইতি টানতে চলেছে প্রায় দুই দশক ধরে চলা আফগান যুদ্ধের। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন গত এপ্রিলে আফগান যুদ্ধ সমাপ্তির ঘোষণায় বলেন, ২০২১ এর ১১ সেপ্টেম্বরের আগে আফগানিস্তান থেকে মার্কিন সেনা প্রত্যাহার শেষ হবে। বাইডেন এই ঘোষণা দেয়ার সময় আফগানিস্তানে অবস্থান করছিল ২ হাজার ৫০০ মার্কিন সেনা।
আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুল থেকে ৫০ কিলোমিটার উত্তরে বাগরাম বিমান ঘাঁটি অবস্থিত। গত শতকের আশির দশকে সোভিয়েত ইউনিয়ন এটি নির্মাণ করে। এটি আফগানিস্তানের সবচেয়ে বড় বিমানঘাঁটি। ২০০১ এর পর থেকে বাগরাম ছিল আফগানিস্তানে যুক্তরাষ্ট্রের প্রধান বিমানঘাঁটি। কারাগার হিসেবেও এটি ব্যবহৃত হয়েছে দীর্ঘদিন।
ন্যাটো জোটের সৈন্যরা চলে গেলেও আফগানিস্তানের আকাশ দেখা দিয়েছে নতুন দূর্যোগের মেঘ। কাবুলের অদূরে অবস্থিত এই ঘাঁটি থেকে যতক্ষণে বিদেশি সেনা প্রত্যাহার করা হচ্ছে ততক্ষণে তালেবান নামক জঙ্গীগোষ্ঠীটি দেশটির ৮০টি জেলায় তাদের নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করে ফেলেছে। সামরিক বিশ্লেষকরা বলছেন, কাবুলকে সুরক্ষিত রাখতে এবং তালেবানকে দূরে রাখতে আফগান সরকার কতটা সফল হয়, তা নির্ভর করবে দেশটির সরকার বাগরামের নিয়ন্ত্রণ কতটা বজায় রাখতে সক্ষম হয় তার ওপর।
Leave a reply