ঋণের চাপে পুলিশ সদস্যের আত্মহত্যা!

|

ময়মনসিংহ ব্যুরো:

ঋণের চাপে জর্জরিত এক পুলিশ সদস্য আত্মহত্যা করেছেন। মারা যাওয়ার আগে লিখে গেছেন সুইসাইড নোট। যেখানে লেখা, বিভিন্ন মানুষের কাছ থেকে তিনি টাকা ধার নিয়েছিলেন। পাওনাদাররা টাকার জন্য চাপ দিচ্ছিলো। অন্যদিকে, তিনিও দু’জন ব্যক্তির কাছে টাকা পেতেন। তারা টাকা না দেয়ায় ঋণ শোধ করতে পারছিলেন না। অপমানের জ্বালা সইতে না পেরেই এমন কঠিন সিদ্ধান্ত!

আত্মহত্যা করা এই পুলিশ সদস্যের নাম নূরে আলম। ময়মনসিংহ শহরের তিনকোনা পুকুরপাড় এলাকার নিজ বাসা থেকে শনিবার রাতে নূরে আলমের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। এসময় তার স্ত্রী ও পরিবারের লোকজন বাসায় ছিলেন না।

পুলিশ জানায়, নূরে আলম কোতোয়ালী মডেল থানার পুলিশ কনস্টেবল। শুক্রবার থেকে ডিউটিতে না আসায় খোঁজখবর নিতে কোতোয়ালী মডেল থানা পুলিশ তার বাসায় যায়। অনেক সময় ধরে ডাকাডাকির পরও কোনো সাড়া না পেয়ে তাদের সন্দেহ হয়। একপর্যায়ে রাত ৮ টার দিকে ফায়ার সার্ভিস এসে দরজা ভেঙে ভিতরে প্রবেশ করে নূরে আলমের ঝুলন্ত লাশ দেখতে পায়। এসময় ঘরের ভিতর আর কেউ ছিল না।

লাশের পাশ থেকে তিনটি হাতে লেখা চিঠি উদ্ধার করে পুলিশ। প্রথম চিঠিটি মা, দ্বিতীয় চিঠিটি ময়মনসিংহ ডিবি পুলিশে কর্মরত এস আই আকরাম ও তৃতীয় চিঠিটি ময়মনসিংহ পুলিশকে উদ্দেশ্য করে লিখা। চিঠিগুলোতে নূরে আলম জানিয়ে গেছেন, বিভিন্ন সময় মানুষজনের কাছ থেকে তিনি টাকা ধার নিয়েছেন। পাওনাদাররা টাকার জন্য চাপ দিচ্ছিলো। অন্যদিকে, ময়মনসিংহের রায়হান নামে এক বালু ব্যাবসায়ীর কাছ থেকে ১ লাখ ৮৫ হাজার টাকা এবং মোশারফ হোসেন নামের আরেক ব্যক্তির কাছ থেকে ১ লাখ টাকা পেতেন তিনি। এই টাকা পেয়ে তার ঋণ শোধ করার কথা ছিল। বারবার চাওয়ার পরও তারা এই টাকা দিচ্ছিলো না।

মৃত্যুর জন্য এই দুই ব্যক্তিকে দায়ী করে গেছেন নূরে আলম। চিঠির সূত্র ধরে বালু ব্যবসায়ী রায়হানকে আটক করেছে পুলিশ।

নূরে আলমের বাড়ি জামালপুর জেলা সদরের রঘনাথপুরে। ঘটনার সময় তার স্ত্রী ও দুই সন্তান জামালপুরে ছিলেন।

খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে ছুটে যান ভারপ্রাপ্ত পুলিশ সুপার এসএ নেওয়াজিসহ পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। ভারপ্রাপ্ত পুলিশ সুপার জানান, প্রাথমিকভাবে মনে হচ্ছে এটি আত্মহত্যা। তবে পোষ্টমর্টেম শেষে বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া যাবে।

যমুনা অনলাইন: এইচএস/টিএফ


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply