প্রথমবারের মতো মহাশূন্যে হাঁটলেন চাইনিজ নভোচারীরা

|

মহাকাশ স্টেশন থেকে বের হয়ে প্রথমবারের মতো মহাশূন্যে হাঁটলেন চীনের দুই নভোচারী। মূলত স্টেশনের মডিউলের বাইরে ক্যামেরা স্থাপন এবং বিভিন্ন যন্ত্র স্থাপনের জন্য মহাকাশযানের বাইরে পা রাখেন দুই নভোচারী।

মহাকাশ স্টেশনে তিনমাস অবস্থান করবেন নভোচারীরা। এই ঘটনাকে মহাকাশ গবেষণার ক্ষেত্রে বড় অর্জন বলে আখ্যা দিয়েছে বেইজিং। গেল মাসে লং মার্চ টু-এফ রকেটে করে তিয়ানগং নামের স্পেস স্টেশনে পৌঁছান তিন নভোচারী। স্থানীয় সময় রোববার (৪ জুলাই) স্টেশন থেকে মহাশূণ্যে বেরিয়ে আসেন ২ জন।

প্রথমে স্টেশনের যান্ত্রিক হাতের মাধ্যমে লিউ বমিং নামের এক নভোচারীকে কেবিনের বাইরে নেয়া হয়। পরে কেবিনের বাইরে আসেন ট্যাং হংবো নামের অপর নভোচারী। মিশনে মডিউলের বাইরে ক্যামেরা স্থাপনের পাশাপাশি রোবটিক হ্যান্ডসের কার্যক্ষমতা পরীক্ষা করেন তারা। এই সাফল্যে বেশ উচ্ছ্বসিত চাইনিজ এই নভোচারীরা।

লিউ বমিং স্পেস স্টেশনে যাওয়ার অভিজ্ঞতা বর্ণনা করে বলেছেন, দম বন্ধ করা সুন্দর চারপাশে। পুরো মহাকাশটাকে মনে হচ্ছে বিস্তীর্ণ এক সাগরের মাঝে দাঁড়িয়ে আছি।

তবে মহাশূন্যে হেঁটে বেড়ানোর জন্য কম কাঠখড় পোড়াতে হয়নি চাইনিজ নভোচারীদের। মডিউল থেকে বের হওয়ার আগে বিভিন্ন স্বাস্থ্য পরীক্ষায় দিতে হয়েছে সক্ষমতার প্রমাণ। এই মহাকাশ স্টেশনে তিন মাস অবস্থান করবেন তারা। এটিই এখন পর্যন্ত নভোচারীদের নিয়ে চীনের সবচেয়ে দীর্ঘ মিশন। বিশেষ এই অভিযানের আগে একেকজন নভোচারীকে ছয় হাজার ঘণ্টা প্রশিক্ষণ নিতে হয়েছে।

চাইনিজ মহাকাশ গবেষক ইয়্যাং লিইউই বলেন, এটা আমাদের জন্য অনেক বড় অর্জন। আমাদের এই সাফল্য চীনের মহাকাশ গবেষণাকে অনেক দূরে এগিয়ে নেবে। যেসব জায়গায় আমাদের ঘাটতি ছিল এই পদক্ষেপে সফলতা পাওয়ার মাধ্যমে তা দূর হয়েছে।

আরেক চাইনিজ মহাকাশ গবেষক ইউয়ান জুডং বলেন, এই মিশনে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ ছিল স্পেস স্যুট মহাকাশে কতটুকু কার্যকর এটা পরীক্ষা করা। সেই সাথে রোবটিক আর্ম সঠিকভাবে কাজ করতে পারে কি না, কিংবা ভারী কিছু তুলতে কতটুকু সক্ষম সেটার নিশ্চয়তা পাওয়া। এই দুই পরীক্ষাতেই আমরা সফল হয়েছি।

নিজেদের মহাকাশ স্টেশন নির্মাণ সম্পন্ন করতে চাইনিজ মহাকাশ গবেষণা সংস্থার সময় প্রয়োজন আরও দেড় বছর। ধারণা করা হচ্ছে আগামী ২০২২ সালের মধ্যে নিজেদের মহাকাশ স্টেশন নির্মাণ সম্পন্ন করবে চীন। স্টেশনের নির্মাণ কাজ শেষ হবার আগে আরও ১১ বার মহাকাশ যাত্রা করার পরিকল্পনা চীনের। এরমধ্যে তিনবার নভোচারীসহ মিশন পরিচালনা করা হবে। ৭০ টন ওজনের স্টেশনটি তৈরিতে যুক্ত করা হবে বিশেষ আরও দুটি পরীক্ষাগার মডিউল। পাশাপাশি থাকবে সাপোর্ট ও ক্রু মডিউল।


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply