মায়ের খোঁজে ঢাকার উদ্দেশ্যে শিশু, যেভাবে পৌঁছালো মামার কাছে

|

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি:

বাবার সাথে বিচ্ছেদ হয়েছে মায়ের। দুই সন্তানের মধ্যে রুমি (৮) বাবার কাছে আর কামরুলের (৬) ঠাঁই হয়েছে মায়ের কাছে। ছেলেকে নিয়ে মা কাজলী বেগম ঢাকায় গার্মেন্টেসে কাজ করতে চলে গেছেন, আর বাবা এরশাদুল হক শিশু মেয়েকে দিনমজুর ছোট ভাই মমিনুলের কাছে রেখে কাজের সন্ধানে চলে গেছেন চট্টগ্রাম। এমন পরিস্থিতিতে মানসিকভাবে ভেঙে পড়া ছোট্ট শিশু রুমি চাচার বাড়ি চিলমারী থেকে মায়ের সন্ধানে ঢাকার উদ্দেশ্যে একাই বেরিয়ে পড়ে।

দীর্ঘ ১৫ কিলোমিটার পথ অভুক্ত অবস্থায় হেঁটে ক্লান্ত শিশুটি দিশা না পেয়ে আশ্রয় নেয় রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংকের বারান্দায়। সেখানে অনেক লোকজন দেখে ভয়ে কাঁদতে শুরু করে সে। কৌতুহলী লোকজন জিজ্ঞাসাবাদের পর জানতে পারে, মায়ের কাছে যাওয়ার জন্য সে চাচার বাড়ি থেকে বের হয়েছে। ঢাকা কতদূর জানে না সে। কিন্তু অদম্য বাসনা যেভাবে পারে মায়ের কাছে যাবে। স্থানীয়রা শিশু রুমিকে মায়ের কাছে পৌঁছে দিতে না পারলেও উলিপুর থানা হেফাজতে পৌঁছে দেয়।

উলিপুর থানা পুলিশ আন্তরিক চেষ্টার চার দিন পর রুমির আত্মীয়দের খুঁজে পায়। পরে গত ৪ জুলাই স্বজনদের উপস্থিতিতে রুমিকে তার মামা সফিকুল ইসলামের কাছে হস্তান্তর করা হয়।

সফিকুল ইসলাম জানান, এরশাদুল হক ও কাজলী বেগমের ৯ মাস আগে বিবাহ বিচ্ছেদ হয়। এরশাদুল কন্যার কোন খোঁজখবর নিতো না। ফলে চাচার বাড়িতে ভালো ছিল না রুমি। অবহেলা আর নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে মায়ের কাছে যাওয়ার জন্য চাচার বাড়ি থেকে বের হয়েছিল সে।

এদিকে স্বজনদের খোঁজ না পেয়ে উলিপুর থানায় নারী, শিশু, বয়স্ক ও প্রতিবন্ধী ডেস্কের তত্ত্ববধায়নে থাকতে হয়েছে রুমিকে। এসময় থানার সকল পুলিশ সদস্য রুমির খোঁজখবর নিত। বিদায়ের সময় সবাই মিলে কিছু নগদ অর্থ আর জামা কাপড় কিনে দিয়ে ভালবাসা জানিয়েছে রুমিকে।

উলিপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) ইমতিয়াজ কবির জানান, রুমির কাছ থেকে পাওয়া তথ্যের সূত্র ধরে তার চাচা ও মামাসহ স্বজনদের খবর দেয়া হয়। এরপর মোবাইলে তার মায়ের সম্মতিতে মামা সফিকুল ইসলামের কাছে রুমিকে হস্তান্তর করা হয়।


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply