নজিরবিহীন বিক্ষোভে উত্তাল সমাজতান্ত্রিক দেশ কিউবা। মার্কিন সরকারের মদদেই কয়েক দশকের সবচেয়ে বড় এ আন্দোলন বলে দাবি হাভানার। অভিযোগ অস্বীকার করে যুক্তরাষ্ট্রের দাবি, দীর্ঘ স্বৈরশাসনে অতিষ্ঠ জনগণের স্বতঃস্ফূর্ত বিক্ষোভ এটি। কিউবার জনগণের এই মুক্তির আন্দোলনে সংহতি জানিয়েছে ওয়াশিংটন। কয়েক দশকের সবচেয়ে বড় এ প্রতিবাদকে ক্যাস্ত্রো পরবর্তী সরকারের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখা হচ্ছে।
দেশজুড়ে ছড়িয়ে পড়া বিক্ষোভে একনায়কতন্ত্রের ইতি চাওয়ার দাবিতে শ্লোগান উঠেছে। বিপর্যস্ত অর্থনীতি, খাদ্য সংকট, মেডিকেল সামগ্রীর স্বল্পতাসহ নানা বিষয়ে নাগরিকদের ক্ষোভ প্রকাশিত হচ্ছে। এমনকি কোভিড মোকাবেলায়ও সরকারকে ব্যর্থ আখ্যা দিচ্ছেন আন্দোলনকারীরা। তারা বলছেন, জীবনধারণ অসম্ভব হয়ে পড়েছে তাদের। সেনা দিয়ে ঘিরে রাখা হয়েছে হাভানা।
আন্দোলন ঠেকাতে রাজপথে টহল দিচ্ছে বিশেষ বাহিনী। বিক্ষোভকারীদের দমনে লাঠিচার্জ, পিপার স্প্রে ব্যবহার করছে পুলিশ। ইতোমধ্যে গ্রেফতার করা হয়েছে প্রায় একশো জন আন্দোলনকারীকে। বিক্ষোভ ছড়ানো ঠেকাতে ইন্টারনেট বন্ধ করে রাখারও অভিযোগ রয়েছে। এমনকি নিয়ন্ত্রণ আরোপ করা হয়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও।
বিরল এ আন্দোলনকে ঘিরে সোচ্চার কিউবার পক্ষ-বিপক্ষের শক্তিগুলো। টুইটবার্তায় বিক্ষোভকারীদের প্রতি সমর্থন জানান ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট বোলসোনারো, সমর্থন জানিয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়নও। পাশাপাশি দেশটির পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ জানিয়ে, জনগণের মুক্তির আন্দোলনে পাশে থাকার ঘোষণা দিয়েছে কিউবার দীর্ঘদিনের শত্রু যুক্তরাষ্ট্র।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলছেন, কিউবার জনগণ একনায়কতন্ত্রের হাত থেকে মুক্তি চায়। এমন প্রতিবাদ বহু বছর দেখা যায়নি। দেশটির জনগণের পাশে আছে যুক্তরাষ্ট্র। তাদের আন্তর্জাতিক অধিকার ফিরে পাওয়ার আন্দোলনে সংহতি জানিয়ে তিনি বলেছেন, জনগণের কণ্ঠরোধ করতে সরকারের সহিংস আচরণে নিন্দা জানাই।
তবে কিউবার অভ্যন্তরীণ বিষয়ে নাক না গলাতে বলছে রাশিয়া-মেক্সিকো। দেশটির সহিংস পরিস্থিতির জন্য যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি দোষারোপ করে প্রেসিডেন্ট মিগুয়েলের পাশে থাকার অঙ্গীকার ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্টের।
ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরো বলছেন, যুক্তরাষ্ট্র আর উগ্রবাদী শত্রুরা যদি সত্যিই কিউবার জনগণের পাশে দাঁড়াতে চায় তবে এখনই দেশটির ওপর থেকে সব অবরোধ তুলে নেয়া হোক। ভেনেজুয়েলার পক্ষ থেকে কিউবার সরকারের প্রতি পূর্ণ সমর্থন জানাচ্ছি।
কিউবার প্রেসিডেন্ট মিগুয়েল দিয়াজ ক্যানেল মার্কিন উদ্বেগকে আখ্যা দিয়েছেন ভণ্ডামি বলে। প্রেসিডেন্ট বলছেন, এটা কি ভণ্ডামি নয় যে, ৬০ বছরের বেশি সময় ধরে যারা কিউবার প্রতি মানবাধিকার বিরোধী নীতি পরিচালনা করছে, তারাই আবার জনগণের পাশে দাঁড়াতে চাইছে? তিনি যুক্তরাষ্ট্রকে উদ্দেশ্য করে বলেছেন, ত্রাণকর্তার ভূমিকায় আসতে চান? তবে অবরোধ তুলে নিন।
Leave a reply