লাশ নিলো না পরিবার, দাফন করলাে ছাত্রলীগ

|

আত্মীয় স্বজনরা লাশ না নেয়ায় বৃদ্ধার লাশ দাফন করলেন স্থানীয় ছাত্রলীগ নেতারা।

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি:

হাসপাতাল চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি, লাশ নিচ্ছিলো না তার পরিবার ও স্বজনরা। সেই বৃদ্ধার মরদেহ দাফন করলেন কয়েকজন ছাত্রলীগ সদস্য।

ঘটনাটি ঘটেছে শনিবার (১৭ জুলাই) রাত সাড়ে দশটার দিকে কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে।

হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, মৃত বৃদ্ধার নাম ফাতেমা বেওয়া। দেড় মাস আগে কেউ একজন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করান তাকে। বার্ধক্যজনিত নানা রোগে ভুগছিলেন এই বৃদ্ধা। ভর্তির পর থেকে মৃত্যুর আগ পর্যন্ত বৃদ্ধার আত্মীয়-স্বজনরা কেউ তার খোঁজ খবর রাখেনি, মৃত্যুর পর নেয়নি লাশও।

গতকাল শনিবার বিকাল ৫ টার দিকে ফুলবাড়ি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের বিছানায় তার মৃত্যু হয়। মৃত্যুর পর তার মরদেহ কেউ নিতে আসেনি। রাত দশটার দিকে উপজেলা ছাত্রলীগের সদস্যরা খবর পেয়ে স্বাস্থ্য
কমপ্লেক্সে আসেন। এসময় উপজেলা ছাত্রলীগ সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মেহেদী হাসান বৃদ্ধার পরিবারের সাথে যোগাযোগ করেন। বৃদ্ধার তিন ভাই মরদেহ নিতে গড়িমসি করেন। দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করা হলেও তারা মরদেহ নিতে আসেননি। বৃদ্ধার ছেলে-মেয়েরা ঢাকায় থাকেন। তারাও কোনো সাড়া দেননি।

পরে ছাত্রলীগ নেতা মেহেদী হাসানের নেতৃত্বে উপজেলা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা বৃদ্ধার মরদেহ দাফনের দায়িত্ব গ্রহণ করেন। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মসজিদ প্রাঙ্গনে জানাজা নামাজের আনুষ্ঠানিকতা শেষে রাত ১১টার দিকে ফুলবাড়ী কেন্দ্রীয় কবর স্থান বৃদ্ধার লাশ দাফন করেন তারা।

স্থানীয়রা জানান, মৃত. ফাতেমা বেওয়ার স্বামী আজাহার আলী প্রায় এক বছর আগে মারা যান। স্বামীর মৃত্যুর পরে বৃদ্ধা কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার বিলুপ্ত ছিটমহল দাসিয়ারছড়ার সমন্বয়পাড়ায় তার ভাইয়ের বাড়িতে চলে আসেন। বৃদ্ধার এক ছেলে ও এক মেয়ে অনেকদিন থেকে পরিবার নিয়ে ঢাকায় থাকেন। ফাতেমার তিন ভাই অতিদরিদ্র হওয়ায় চিকিৎসার জন্য ফুলবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করায়। ভর্তির পরে দেড় মাসেও বৃদ্ধার আপনজন ও কোনো আত্মীয়-স্বজন হাসপাতাল খোঁজ-খবর নিতে আসেনি।

উপজেলা ছাত্রলীগর সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মেহেদী হাসান জানান, বৃদ্ধা দেড় মাস ধরে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। এই দেড় মাসে তার কোনো আত্মীয়-স্বজন দেখতে আসেনি। মৃত্যুর পর মরদেহটিও কেউই না নেয়ায় আমরা মৃত দেহের দাফনের দায়িত্ব গ্রহণ করি।

ফুলবাড়ি উপজলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরী বিভাগের চিকিৎসক ডা.উম্মে হাফসা জানান, ওই বৃদ্ধা প্রায় গত দেড় মাস ধরে এখানে চিকিৎসাধীন ছিলেন। কেউ একজন ভর্তি করে দিয়ে গেছেন। বৃদ্ধা নানা রোগে ভুগছিলেন। শনিবার বিকেলে সাড়ে পাঁচটার দিকে তিনি মারা যান।


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply