বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক প্রদত্ত মুক্তিযুদ্ধ মৈত্রী সম্মাননাপ্রাপ্ত ব্রিটিশ সাংবাদিক সাইমন ড্রিংয়ের মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক এমপি। আজ (২০ জুলাই) মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র তথ্য কর্মকর্তা সুফি আব্দুল্লাহিল মারুফের প্রেরিত এক শোক বার্তায় মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রী বিদেহী আত্মার শান্তি কামনা করেন ও শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।
শোকবার্তায় মন্ত্রী বলেন, মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পাকিস্তান হানাদার বাহিনীর বর্বরতার চিত্র সাইমন ড্রিং প্রথম বিশ্ববাসীর কাছে তুলে ধরেন। ফলে পাকিস্তানি বর্বর বাহিনী কর্তৃক নিরস্ত্র বাঙালিদের গণহত্যার প্রকৃত ঘটনা বিশ্ববাসী জানতে পেরেছিল। বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতার ইতিহাসে বাংলাদেশের অকৃত্রিম বন্ধু সাইমন ড্রিংয়ের অবদান চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে। উল্লেখ্য, মহান মুক্তিযুদ্ধে বিশেষ অবদানের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে বাংলাদেশ সরকার সাইমন ড্রিংকে ২০১২ সালে ‘মুক্তিযুদ্ধ মৈত্রী সম্মাননা’ প্রদান করে।
১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ এর কালরাতের চাক্ষুস সাক্ষী ছিলেন সাইমন ড্রিং। পাকিস্তানী সৈন্যদের চোখ ফাঁকি দিয়ে হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল থেকে বেরিয়ে পড়েন ২৭ মার্চ সকালে। লিখেন, ট্যাংক ক্র্যাশ রিভোল্ট ইন পাকিস্তান শিরোনামে এক বিস্ফোরক প্রতিবেদন। তার পরপরই প্রকাশিত কয়েকটি প্রতিবেদনে উঠে আসে বাংলাদেশে পাকিস্তানী বর্বরতার চিত্র। বিশ্ব জনমত চলে আসে মুক্তিকামী বাঙালির পক্ষে।
জীবনের ঝুঁকি ছিলো নিঃসন্দেহে, কিন্ত সাইমন ড্রিং তোয়াক্কা করেননি। ১৯৭১ এর ৩০ মার্চ লন্ডনে ফিরে গেছেন। আবারও ফিরে এসেছেন নভেম্বরে। কলকাতা থেকে প্রচার করেছেন মুক্তিযুদ্ধের সংবাদ।
ত্রিশ বছর পর আবারও বাংলাদেশে আসেন সাইমন ড্রিং। এ দেশের প্রথম আধুনিক বেসরকারি টিভি একুশে টেলিভিশন গড়ে তোলেন নিজ হাতে। তবে ২০০২ সালে সে সময়ের সরকার তাকে বাংলাদেশ ত্যাগে বাধ্য করে। এরপর আবার ২০১৩ সালে বাংলাদেশে আসেন সাইমন।
সাইমন ড্রিংয়ের জন্ম ইংল্যান্ডে, ১৯৪৫ সালে। তিনি সংবাদপত্র ও টেলিভিশনের সাংবাদিক হিসেবে কাজ করেছেন ১৮ বছর বয়স থেকে। দেখেছেন ২২টি যুদ্ধ,অভ্যুত্থান ও বিপ্লব। শুক্রবার চিরবিদায় নিয়েছেন বাংলাদেশের অকৃত্রিম বন্ধু সায়মন ড্রিং।
Leave a reply