ইন্দোনেশিয়ায় ভয়াবহ করোনা: মানুষের উপকারে কাজ করছে হোপ

|

ইন্দোনেশিয়ায় করোনা বাস্তবতায় মৃতদেহ সৎকারে কাজ করছে প্রজেক্ট হোপ। ছবি: সংগৃহীত

দিন দিন ভয়াবহ হচ্ছে ইন্দোনেশিয়ায় করোনা পরিস্থিতি। সংক্রমণ ও মৃত্যুর ঊর্ধ্বগতির কারণে মরদেহ সৎকারে নেই স্বজনদের উপস্থিতি। কঠিন এ বাস্তবতায় মানবসেবায় কাজ করছে বেশ কিছু স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন। বাড়ি বাড়ি গিয়ে মরদেহ সংগ্রহের পর করছেন দাফন।

ইন্দোনেশিয়ার রাজধানী জাকার্তার বাসিন্দা অরদি নোভরিয়ানসে পেশায় ট্যাক্সি চালক। মহামারীর এই কঠিন সময়ে এখন যাত্রী নয়, মরদেহ পরিবহন করেই কাটছে পুরো সময়।

ইন্দোনেশিয়ায় করোনা পরিস্থিতি খারাপ হতে শুরু করলে তিনি যোগ দেন হোপ নামের একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনে। বাড়ি বাড়ি গিয়ে সংগ্রহ করছেন আইসোলেশনে থাকা রোগীর মরদেহ। এরপর ধর্মীয় রীতি মেনে করছেন সৎকার।

এই বিপজ্জনক কাজে যোগ দেয়া প্রসঙ্গে অরদি নোভরিয়ানসে বলেন, সবই আল্লাহর ইচ্ছা। মানবিক দিক বিবেচনায় আমি এই সংগঠনে যোগ দিয়েছি। আমার একটাই প্রার্থনা, মানুষের উপকারের যে আশা নিয়ে আমি এই কাজে যোগ দিয়েছি সেই মানসিকতা যেন ধরে রাখতে পারি।

শুধু অরদি নন, তার মতো আরও ৩৫ জন স্বেচ্ছাসেবী আছেন এই সংগঠনে। প্রতিনিয়ত সহায়তা দিতে ছুটে চলেছেন তারা শহরের বিভিন্ন প্রান্তে।

কঠিন এই সময়ে প্রিয়জনদের সাথেও যোগাযোগ নেই স্বেচ্ছাসেবীদের। ঘুম কিংবা খাওয়া দাওয়া সবকিছুতেই অনিয়ম। এর মাঝেও মানবতার ডাকে ক্লান্তিহীন কাজ করে যাচ্ছেন তারা। প্রতিদিন মৃতের সংখ্যা বাড়াচ্ছে শঙ্কা।

রিনো ইন্দিরা গুস্তিয়াওয়ান নামক একজন স্বেচ্ছাসেবক বলেন, জীবনের ঝুঁকি নিয়ে প্রতিদিন কাজ করছি। পরিবারও চিন্তায় রয়েছে। কিন্তু যতদিন পর্যন্ত সম্ভব কাজটি চালিয়ে যেতে চাই।

ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের প্রভাবে মর্মান্তিক পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে ইন্দোনেশিয়ায়। কান পাতলেই শুধু প্রিয়জন হারানোর কান্না। রোগীর চাপে হাসপাতালে মিলছে না শয্যা, দেখা দিচ্ছে অক্সিজেন সংকট।

প্রজেক্ট হোপের কার্যনির্বাহী পরিচালক ইধি রহমত জানান, করোনার প্রকোপ যেভাবে ছড়িয়েছে তাতে কোনো জেলাই হয়তো আর বাকি নেই। ইন্দোনেশিয়ার পরিস্থিতি এখন অনেকটা ভারতের মতো, কিংবা তার থেকেও খারাপ।

এখনও পর্যন্ত দেশটিতে করোনায় মৃতের সংখ্যা ৭৪ হাজারের বেশি। আর শনাক্ত হয়েছে অন্তত ২৯ লাখ।


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply