রাজধানীর বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হওয়া করোনায় সংক্রমিত ও মৃতের প্রায় ৭০ শতাংশ রোগীই ঢাকার বাইরের। বিভিন্ন জেলা শহর থেকে আক্রান্ত হয়ে রাজধানীতে আসছেন এসব করোনা রোগী। চিকিৎসকরা বলছেন, ঢাকার বাইরে থেকে আসা রোগীদের বেশিরভাগেরই আইসিইউ প্রয়োজন। আর তুলনামূলক স্বাস্থ্যবিধি মানা, ভ্যাকসিনেশন ও আগে সংক্রমণের প্রভাবে ঢাকায় সংক্রমণ কিছুটা কম বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
করোনা আক্রান্ত রোগীতে সয়লাব রাজধানীর বেশিরভাগ হাসপাতাল। আইসিইউ ও এইচডিইউতে ফাঁকা নেই কোনো শয্যা। চিকিৎসাধীন রোগীর বেশিরভাগই ঢাকার বাইরের।
মৃতের সংখ্যায়ও বাইরের রোগীর সংখ্যাই বেশি। কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে ৩০ জন মৃতের ঠিকানা যাচাইয়ে দেখা যায়, মোট রোগীর প্রায় ষাট শতাংশই ঢাকার বাইরে থেকে আসা। মুগদা হাসপাতালে ১৮ জুলাই থেকে ২৫ জুলাই পর্যন্ত মারা গেছে ৩১ জন। যার ২১ জনই রাজধানীর বাসিন্দা নন।
মুগদা হাসপাতালের পরিচালক অসীম কুমার নাথ বলেন, প্রায় ৭০ ভাগ রোগী আসছে ঢাকার বাইরে থেকে। স্বাভাবিকভাবেই যারা ঢাকার বাইরে থেকে আসছে তাদের অবস্থা তুলনামূলক খারাপ থাকে এবং মৃত্যুও ওদের বেশি হচ্ছে। সিটি কর্পোরেশন এলাকার চেয়ে করোনার প্রভাব গ্রামে বেশি পড়ছে।
ঢাকার অন্যান্য হাসপাতালের চিত্রও প্রায় একই রকম। চিকিৎসাধীন ও মৃতের ২০ থেকে ৪০ শতাংশ রাজধানীর বাসিন্দা। বাকিরা বিভিন্ন জেলা থেকে আসা। তবে সংখ্যায় কম হলেও ঢাকাবাসীর স্বস্তির সুযোগ নেই বলছেন বিশেষজ্ঞরা।
জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডা. বেনজীর আহমেদ বলেন, ঢাকায় করোনা সংক্রমণ একটু কম হচ্ছে। কিন্তু এ নিয়ে স্বস্তিতে থাকার কোনো সুযোগ নেই। আগে অনেকেই সংক্রমিত হয়েছে, আবার অনেকেই ভ্যাকসিনও পাচ্ছে। তাই বলে, স্বস্তিবোধের সুযোগ নেই। এখনও সচেতন থেকে স্বাস্থ্যবিধি যথাযথভাবে মেনে চলতে হবে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বলছে, প্রান্তিক পর্যায়ে চিকিৎসার পরিসর বাড়ানো হয়েছে। দিনে দিনে চাপ কমবে রাজধানীর ওপর। তবু আরও ভালো চিকিৎসার আশায় মানুষ ঢাকা আসছে।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের মুখপাত্র অধ্যাপক ডা. রোবেদ আমিন বলেন, চিকিৎসার জন্য আগেও মানুষ ঢাকায় আসছে এখনও আসবে এটিই স্বাভাবিক। কিন্তু, প্রান্তিক পর্যায়ে অন্তত করোনার জন্য হলেও যেন মানুষ ভাল চিকিৎসা পায় সেজন্য আমরা কাজ করেছি, সুযোগ সুবিধা বাড়িয়েছি। সামনেও তা অব্যাহত থাকবে।
দেশে করোনার সংক্রমণ ঠেকাতে টিকা ও স্বাস্থ্যবিধি মানার কোনো বিকল্প নেই বলছেন চিকিৎসকরা।
/এস এন
Leave a reply