করোনায় হঠাৎ মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় মরদেহ দাফনে হিমশিম খেতে হচ্ছে ইন্দোনেশিয়াকে। দেশটির রাজধানী জাকার্তার কবরস্থানগুলোতে দাফনের জন্য রীতিমতো সিরিয়াল দিতে হচ্ছে। বৃহত্তম মুসলিম দেশটিতে এখন সংক্রমণ এবং প্রাণহানি বাড়ছে লাফিয়ে লাফিয়ে। এক মাসেই মৃত্যু হয়েছে প্রায় ৩০ হাজার মানুষের। অধিকাংশই মারা গেছে হাসপাতালে নেয়ার আগে।
কে কোন কবরে শায়িত হবে সে বিষয়ে নিশ্চিত হওয়ার সুযোগ নেই স্বজনদের। আগে গোরখোদকরা কোদাল দিয়ে কবর প্রস্তুত করলেও এখন আর তা সম্ভব হচ্ছে না। কারণ ইন্দোনেশিয়ায় দৈনিক দাফন করতে হচ্ছে হাজারের বেশি মরদেহ। তাই স্কেভেটর দিয়ে আগে ভাগেই খুঁড়ে রাখা হচ্ছে সারি সারি কবর।
বিশ্বের চতুর্থ বৃহৎ জনসংখ্যার দেশটিতে করোনায় প্রতিঘণ্টায় গড়ে প্রায় ৮৪ জনের মৃত্যু হচ্ছে। পাল্লা দিয়ে বাড়ছে সংক্রমণও। তাই দাফনের সব আনুষ্ঠানিকতা পালনের সুযোগ মিলছে না অধিকাংশ ক্ষেত্রে।
করোনায় মৃত এক ইন্দোনেশিয়ার অধিবাসীর স্বজন উইদোদোর কণ্ঠে ঝরে পড়ে আর্তনাদ। তিনি বলেন, আমরা সবাই এখন এই ভয়াবহ পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যাচ্ছি। সংক্রমণের ভয় সবসময় কাজ করছে। পরিবারের সদস্যের মৃত্যু হলেও তার দাফন করতে পারছি না। একটু ছুঁয়ে দেখতে পারছি না। তবে আমাদের সরকার বেশ উদ্যোগী হয়ে পরিস্থিতি সামাল দেয়ার চেষ্টা করছে।
সংক্রমণের লাগামহীন পরিস্থিতির জন্য সাধারণ মানুষের উদাসিনতাকে দায়ী করছেন অনেকে।
করোনায় মৃত আরেক ইন্দোনেশিয়ার অধিবাসীর স্বজন মোহাম্মাদ মাহমুজি বলেন, করোনায় মৃত্যুর হার কমার কোনো লক্ষণই দেখছি না। প্রতিদিনই ছাড়িয়ে যাচ্ছে আগের দিনের রেকর্ড। কারণ আমাদের অনেকেই সচেতন না এখনও। কেউ কেউ তো করোনা আছে বলে বিশ্বাসই করতে চায় না। জানি না কোথায় গিয়ে থামবে।
লাশের মিছিল বাড়তে থাকায় ব্যস্ততা বেড়েছে কফিনের দোকানগুলোতেও। চাহিদা মেটাতে দিনে ৩০ থেকে ৪০টা পর্যন্ত কফিন বানাতে হচ্ছে প্রত্যেক প্রতিষ্ঠানকে।
Leave a reply