সারি সারি কফিন হাসপাতালের সামনে। হাসপাতাল থেকে নিয়ে যাওয়ার লোকেরও সংকট। সমাধিক্ষেত্রে পৌঁছার পরও সৎকারের জন্য অপেক্ষা করতে হয় ঘণ্টার পর ঘণ্টা।
প্রকট আকার ধারণ করেছে মিয়ানমারের করোনা পরিস্থিতি। জান্তা প্রশাসন আর বিদ্রোহীদের সংঘাতে ভেঙে পড়েছে স্বাস্থ্যসেবা। অক্সিজেন, মেডিকেল সরঞ্জাম, ওষুধের তীব্র সংকট। পরীক্ষার নিম্নহার, হাসপাতালে চিকিৎসা না পেয়ে মৃত্যু, মরদেহ সৎকারেও জটিলতা।
ইয়াঙ্গুনের এক অক্সিজেন সরবরাহ কেন্দ্রে দুশোরও বেশি মানুষের লাইন। একটি সিলিন্ডার রিফিলের জন্য ঘণ্টা, কখনও দিনও পার হয়ে যায়।
জাতিসংঘ আশঙ্কা করছে, দুই সপ্তাহের মধ্যে দেশটির সাড়ে ৫ কোটি জনগোষ্ঠীর অর্ধেকই আক্রান্ত হতে পারে ভাইরাসে।
জান্তার দেয়া তথ্য অনুযায়ী মিয়ানমারে করোনায় মৃত্যু সাড়ে ৮ হাজার, সংক্রমণ প্রায় ৩ লাখ। তবে হাসপাতাল আর সৎকারের চিত্র বলছে প্রকৃত সংখ্যা এরচেয়ে অনেক বেশি।
পাশাপাশি ওষুধ-মেডিকেল সরঞ্জাম-অক্সিজেন সবকিছুর সংকট হাসপাতালগুলোতে। নেই পর্যাপ্ত সুরক্ষা পোশাক। সেনা শাসনের প্রতিবাদে হাসপাতালে চিকিৎসা দেন না অনেক স্বাস্থ্যকর্মী। কেউ কেউ হামলার শিকার, অনেকে আটকও হচ্ছে। চিকিৎসা না পেয়ে বাড়িতেই প্রাণ দিচ্ছে অনেকে। সব মিলিয়ে ধসে গেছে স্বাস্থ্যখাত। এ পরিস্থিতিতে চরম উদ্বেগ জানিয়েছে জাতিসংঘ।
জাতিসংঘের যুক্তরাজ্যে প্রতিনিধি বারবারা উডওয়ার্ড জানান, সেনাশাসনে স্বাস্থ্য ব্যবস্থা বিপর্যস্ত। স্বাস্থ্যকর্মীরা প্রায়ই হামলা-আটকের শিকার হচ্ছে। খুব দ্রুত ছড়াচ্ছে ভাইরাস। তথ্য উপাত্ত বলছে, আগামি দু’সপ্তাহের মধ্যে মিয়ানমারের অর্ধেক জনগোষ্ঠীই আক্রান্ত হতে পারে।
নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকে টিকা সরবরাহ ও প্রয়োগে আন্তর্জাতিক তদারকির আহ্বান জানান জাতিসংঘে মিয়ানমারের প্রতিনিধি।
জাতিসংঘে মিয়ানমারের প্রতিনিধিত্ব করা তিয়াও মো তুন জানান, কার্যকর টিকা কর্মসূচি ও মানবিক সহায়তার জন্য আন্তর্জাতিক তদারকি জরুরি। জাতিসংঘ, বিশেষ করে নিরাপত্তা পরিষদের প্রতি আমাদের আহ্বান, শিগগিরই যাতে একটি তদারকি কমিটি গঠন করা হয়। যাতে টিকা কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা করা সম্ভব হয়।
সম্প্রতি চীন থেকে ২০ লাখ ডোজ টিকা পেয়েছে মিয়ানমার। রয়টার্স বলছে এ পর্যন্ত দেশটিতে টিকার আওতায় এসেছে মাত্র ৩ দশমিক ২ শতাংশ মানুষ।
Leave a reply