নোয়াখালী প্রতিনিধি:
নোয়াখালীর বিচ্ছিন্ন দ্বীপ উপজেলা হাতিয়ার নিঝুমদ্বীপ ইউনিয়নে সড়ক থেকে তুলে নিয়ে এক গৃহবধূকে (২৪) গণধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। ঘটনায় ভুক্তভোগীর স্বামী সোহেলসহ ৪ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
বুধবার বিকেলে ভুক্তভোগী গৃহবধূ বাদী হয়ে ৭ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাতনামা আরও ৩ জনকে আসামি করে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে হাতিয়া থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। গ্রেফতারকৃতরা হচ্ছে, নিঝুমদ্বীপ এলাকার সোহেল, হক সাব, রাশেদ ও আক্তার হোসেন।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, ২৪ বছর বয়সী ওই গৃহবধূ কাজ করার সুবাদে চট্টগ্রামে বসবাস করতেন। মঙ্গলবার নিজ এলাকা নিঝুমদ্বীপ যাওয়ার উদ্দেশে তার দুই বছরের বাচ্চাকে নিয়ে হাতিয়ার মুক্তারিয়াঘাট থেকে ট্রলারযোগে রওনা করেন। সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে তিনি বন্দরটিলাঘাটে গিয়ে পৌঁছেন। ঘাটে নেমে একটি ভাড়া চালিত মোটরসাইকেল নিয়ে বাড়ির দিকে যাচ্ছিলেন তিনি। কিছু পথ যাওয়ার পর তার স্বামী সোহেলসহ কয়েকজন মোটরসাইকেলটি গতিরোধ করে তাকে নামিয়ে হাত ও মুখ বেঁধে ফেলে। পরে তারা ওই গৃহবধূকে সিডিএসপি বাজারের পার্শ্ববর্তী বান্ধাখালি এলাকার মেঘনা নদীর তীরে নিয়ে যান। নদীর তীরে তাকে আটকে রেখে সন্ধ্যা ৭টা থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত সোহেল, হক সাব, রাশেদ ও আক্তারসহ ৭ জন তাকে পালাক্রমে গণধর্ষণ করে। পরে মুখের বাঁধন খুলে গেলে চিৎকার করেন গৃহবধূ। এ সময় স্থানীয় লোকজন এগিয়ে আসলে ধর্ষণকারী অন্যরা পালিয়ে গেলেও স্বামী সোহেলকে আটক করে স্থানীয় লোকজন। খবর পেয়ে নিঝুমদ্বীপ পুলিশ ফাঁড়ির এসআই সৌরজিৎত এর নেতৃত্বে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে গৃহবধূকে উদ্ধার করে।
স্থানীয় সূত্র জানায়, রাতে বিষয়টি হাতিয়া থানায় অবগত করলে নিঝুমদ্বীপে অতিরিক্ত পুলিশ পাঠিয়ে বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে হক সাব, রাশেদ ও আক্তার হোসেনকে আটক করে পুলিশ। ভুক্তভোগী নারী সোহেলের দ্বিতীয় স্ত্রী। গত কয়েকদিন ধরে গৃহবধূর কাছ থেকে তালাক নেওয়ার জন্য বিভিন্নভাবে চাপ দিতে থাকে সোহেল। কিন্তু তাতে তিনি রাজি না হওয়ায় ক্ষিপ্ত হয় সোহেল।
হাতিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনোয়ারুল ইসলাম জানান, ভুক্তভোগী নারীকে তার বাচ্চাসহ উদ্ধার করা হয়েছে। ঘটনায় তিনি বাদী হয়ে একটি মামলা দায়ের করেছেন। মামলায় এজাহারভুক্ত ৪ আসামিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার গ্রেফতারকৃতদের বিচারিক আদালতের মাধ্যমে কারাগারে ও ভুক্তভোগীকে ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হবে। মামলার অপর আসামিদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।
ইউএইচ
Leave a reply