উইকেট নাকি বুঝতেই পারেনি স্বাগতিক বাংলাদেশ, কিন্তু টস জিতে নিয়েছিল ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত! অথচ ম্যাচের আগে পিচ রিপোর্টে পারভেজ মাহরুফ ধারণা দিয়েছিলেন, মিরপুরের এই শক্ত উইকেটে ১২০ রানই চ্যালেঞ্জিং স্কোর। এই উইকেটেই সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে অস্ট্রেলিয়ার দেয়া ১২১ রানের লক্ষ্য তাড়া করে ৫ উইকেটের জয় পায় বাংলাদেশ। এ দিন স্বাগতিকরা ৩ উইকেটে হারলেও অতিথি অস্ট্রেলিয়া উইকেট বুঝে পরিকল্পনা করেই দেখেছে প্রথম জয়ের মুখ। অবশ্য নিজেদের দুর্বলতা ধরিয়ে দিলেন বাংলাদেশ অধিনায়ক।
মাহমুদউল্লাহ বলেন, এই মাঠে রান তাড়া করা সব সময়ই কঠিন। তাই আমরা আগে ব্যাট করেছি। আমরা উইকেট ভালোমতো বুঝতে পারিনি। এই উইকেটে ১২০ রান হলে ভালো হতো। আমরা ১০-১৫ রান কম করেছি।
গোটা ম্যাচে কখনও হাল ছাড়েনি বাংলাদেশ। ব্যাটিংয়ে সাকিব, রিয়াদ, সোহান অল্প ব্যবধানে ফিরলে চাপে পড়ে টাইগাররা। তবে মেহেদী-আফিফের কল্যাণে শতরান পেরোয় স্বাগতিকরা। সেই পুঁজি নিয়ে লড়াইয়ে নেমে ভালো শুরুর পরও সাকিবের ১ ওভারে ৫ ছক্কায় ৩০ রানই ম্যাচ থেকে কার্যত ছিটকে দেয় বাংলাদেশকে। তবে নাসুম-মোস্তাফিজদের কল্যাণে টাইগাররা ম্যাচে ফিরলেও সেই ক্ষতি আর পোষানো যায়নি।
মাহমুদউল্লাহ বলেন, সাকিবের ওভারটা গুরুত্বপূর্ণ ছিল। ওই ওভারে উইকেট পেলে পরিস্থিতি পাল্টে যেত। ড্যান ক্রিশ্চিয়ান ক্রিজে এসেই দ্রুত রান করেছে, টানা ৪ ছক্কা মেরেছে। টি-টোয়েন্টি ম্যাচে এমন হতে পারে। আমরা জানি, সাকিব চ্যাম্পিয়ন বোলার। সে ভালোভাবেই ঘুরে দাঁড়াবে।
সিরিজের শুরু থেকে ৩ নম্বরে ব্যাটিং করছিলেন মিচেল মার্শ। ব্যাট হাতে তিন ম্যাচে খেলেন ৪৫, ৪৫ ও ৫১ রানের ইনিংস। তবে মার্শের চেয়ে বেশি স্ট্রাইক রেটের কাউকে ৩ নম্বরে নামানোর সিদ্ধান্ত নেয় অস্ট্রেলিয়া। ৩ নম্বরে নেমে পাওয়ার প্লেতে কুইক ফায়ার করেন ড্যান ক্রিশ্চিয়ান। ১৫ বলে ৩৯ রান করা ক্রিশ্চিয়ান একাই বদলে দিয়েছেন ম্যাচের গতিপথ।
এখানেও দলের পরিকল্পনায় কিছুটা ফাঁক রয়ে গেছে। কারণ বিগ ব্যাশ ক্রিকেটে ড্যান ক্রিশ্চিয়ানকে ব্যাটিং অর্ডারে উপরে নিয়া আসা হয় কেবলই তার বিগ হিটিংয়ে পারদর্শিতার জন্য। বাংলাদেশের দুই পেসার মোস্তাফিজ ও শরিফুলের ইকোনমি রেট পুরো সিরিজ জুড়েই সমীহ জাগিয়েছে। তাই ক্রিশ্চিয়ানের ব্যাটিংয়ের সময়ে এই পেসারদের বোলিংয়ে আনা গেলে অজিদের পরিকল্পনাকে ভেস্তে দেয়া যেতে পারতো। কিন্তু তা হয়নি। ক্রিশ্চিয়ান কেন্দ্রীক অজিদের পরিকল্পনার কাছেই মার খেয়ে গেলো আজ টাইগাররা।
সিরিজে সবচেয়ে ধারাবাহিক ব্যাটার মিচেল মার্শের ব্যাটিং অর্ডারের পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত কীভাবে এসেছে, জানালেন অজি অধিনায়ক ম্যাথু ওয়েড। তিনি বলেন, মিরপুরের উইকেটে স্পিন কিছুটা স্কিড করে। তাই পাওয়ার প্লেতে দ্রুত রান তোলা জরুরি ছিল। এ দিন সকালে আমরা সিদ্ধান্ত নিই যে, ড্যান ক্রিশ্চিয়ানকে ৩ নম্বরে ব্যাটিংয়ে নামাবো। তার ইনিংসই বদলে দিয়েছে সব কিছু। পার্থক্য গড়ে দিয়েছে দুই দলের মধ্যে।
টানা ৩ ম্যাচ জয়ে সিরিজ নিজেদের করে নেয়া বাংলাদেশ চতুর্থ ম্যাচে হারলেও সিরিজের শেষ ম্যাচে অনেক কিছুই প্রমাণের সুযোগ আছে।
Leave a reply