এবারের ডেঙ্গুর প্রকোপে আক্রান্তদের বেশিরভাগই কমবয়সী। রাজধানীর শিশু হাসপাতালে ডেঙ্গু ইউনিটে ৭ দিনে প্রাণ গেছে ৪ শিশুর। ডেঙ্গুর আক্রমণে ছোট্ট নাজুক শরীর যেন আরও দুর্বল হয়ে পড়েছে। কথা বলা শিখলে হয়তো মাকে কষ্টের কথা জানাতে পারতো। মায়ের কণ্ঠেও তাই অসহায়ত্ব, সাথে আরেকটু সচেতন থাকতে না পারার অপরাধবোধ।
ডেঙ্গু আক্রান্ত এক শিশুর মা জানান, আমার শিশুর এই অবস্থার জন্য আমিই দায়ী। কারণ আমি যদি আর একটু সচেতন থাকতাম তাহলে আজকে ওর এই কষ্ট করতে হয় না।
সমীক্ষা বলছে গেল বছরের তুলনায় এবারের ডেঙ্গু আক্রান্তের হার অনেক বেশি। গেল ৭ দিনে কেবল মাত্র শিশু হাসপাতালেই ভর্তি হয় ৬৩ শিশু। চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয়েছে ৪ শিশুর। ডেঙ্গুর ধরনেও এসেছে নতুনত্ব। করোনার প্রকোপ চলায় অনেক ক্ষেত্রে ডেঙ্গু শনাক্তে কেটে যাচ্ছে অনেক সময়। আক্রান্তদের মধ্যে এবার শিশুরাই বেশি।
চিকিৎসকরা বলছেন, এবারের ডেঙ্গু আরও মারাত্মক। জ্বরের ধরন বুঝে ওঠার আগেই কমে যাচ্ছে রক্তের প্লাটিলেট। দেরি হয়ে যাচ্ছে হাসপাতালে পৌঁছাতে। তাই লক্ষণ টের পেলেই দ্রুত চিকিৎসকের কাছে যাওয়ার পরামর্শ দেয়া হয়েছে।
শিশু হাসপাতালের উপ-পরিচালক ডা. প্রবীর কুমার সরকার, অবস্থা খুবই জটিল এবং নিয়ন্ত্রণের বাহিরে। যে শিশুটিকে আমরা সকালে দেখছি পালস ও বিপি ঠিকঠাক সেই শিশুই বিকেলের দিকে নিস্তেজ হয়ে যাচ্ছে। এমনকি চিকিৎসার জন্য আমরা যেসব তরল ব্যবহার করি সেগুলো দিয়েও এই অবস্থা কাটানো যাচ্ছে না।
অন্যদিকে, শিশু বিশেষজ্ঞ ডা. ফারহানা আহমেদ বলছেন, ডেঙ্গুটা আমাদের নিয়ন্ত্রণে আছে। তবে এর জন্য প্রয়োজন সঠিক সময়ে ডাক্তার এর কাছে আসা। বেশিরভাগই দেখা যাচ্ছে দেরিতে আসে, ততক্ষণে শিশুর নিস্তেজ অবস্থা হয়ে যায়।
তাই সচেতনতা এবং সঠিক সময়ে ডাক্তার এর কাছে শিশুকে নিয়ে যাওয়ার উপদেশ দিচ্ছেন ডাক্তার ও বিশেষজ্ঞরা।
Leave a reply