পটুয়াখালী প্রতিনিধি:
দুইদিনের ব্যবধানে কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকতে ভেসে এলো ৩ টি মৃত ডলফিন। এর আগে গত ৯ই মে কুয়াকাটা সৈকতে ভেসে এসেছিল আরও একটি মৃত ডলফিন।
আজ সোমবার (৯ আগস্ট) দুপুর ১২ টার দিকে কুয়াকাটা সৈকতের পশ্চিম পাশে
কম্পিউটার পয়েন্ট সংলগ্ন স্থানে মৃত ডলফিন দুটি দেখতে পান প্রাণীরক্ষা বিষয়ক সংগঠন ব্লু গার্ডের সদস্যরা। পরে কুয়াকাটা সৈকতের দায়িত্বে থাকা ব্লু গার্ডের সদস্যরা মৃত ডলফিনটিকে মাটিচাপা দেন বলে টুরিজ্যাম ব্যবসায়ী কেএম বাচ্চু মিয়া নিশ্চিত করেন।
ইকোফিশ-২ প্রকল্পের পটুয়াখালী জেলার সহকারী গবেষক সাগরিকা স্মৃতি জানান, কুয়াকাটা সৈকতে আমাদের (ব্লু গার্ড) টিম নিয়ে কাজ করছিলাম, হঠাৎ আমাদের এক গার্ডের চোখে পরে সৈকতে ২টি মৃত ডলফিন।
গত ৭ আগষ্ট কুয়াকাটা সৈকতে আরো একটি মৃত ডলফিন ভেসে আসে। ডলফিন দুটির মুখে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। এর আগেও কয়েকটি মৃত ডলফিন ও তিমি এ সৈকতে ভেসে এসেছিল। তিনি আরও বলেন, আজকে যে দুটি ডলফিন সৈকতে ভেসে এসেছে সেগুলো জোয়ারের পানিতে ভেসে এসেছে। এদের মুখে রক্ত দেখা গেছে।
ডলফিন দুটি ৫ থেকে ৬ ফুট লম্বা হবে।
এর আগেও বিভিন্ন ধরনের ডলফিন কুয়াকাটা সৈকতে ভেসে এসেছে। বছরের প্রায় সময় সৈকতে বিভিন্ন ধরনের মৃত ডলফিন উঠে আসে। এগুলোর বেশিরভাগ জালে আটকে বা ট্রলারের সঙ্গে ধাক্কা লেগে মারা যেতে পারে বলে ধারণা করা হয়।
প্রত্যক্ষদর্শী জেলে সোহাগ জানান, গত শুক্রবার (৭ আগষ্ট) বিকালে সৈকতের খাজুরা এলাকায় জেলেরা নৌকা তীরে উঠানোর সময় মৃত ডলফিনটিকে সৈকতের একটি মরা গাছের নীচে আটকে থাকতে দেখে। পরে স্থানীয়দের খবর দেয়া হয়। তিনি জানান, কুয়াকাটা সৈকতে জোয়ারের পানির সাথে ডলফিনটি ভেসে আসছে, এটির মুখ ছিলো রক্তাক্ত। এটি লম্বায় প্রায় ৬-৭ ফুট মত হবে। ডলফিনটির মুখে আঘাতের চিহ্ন ছিলো।
ধারণা করা হচ্ছে, জেলেদের জালের আঘাতে ডলফিনটির মৃত্যু হয়েছে। মৎস্য অধিদপ্তর বরিশালের সাসটেইনেবল কোস্টাল অ্যান্ড মেরিন ফিশারিজ প্রকল্পের উপ-পরিচালক মো. কামরুল ইসলাম জানান, বঙ্গোপসাগরে দুই প্রজাতির ডলফিন পাওয়া যায়। একটি হলো বটল নোজ (বোতলের মতো মুখ) এবং আরেকটি হলো হাম্পব্যাক ডলফিন (পিঠের দিকটা সামান্য ভাঁজ ও কুঁজো থাকে)। কুয়াকাটা সৈকতে ভেসে আসা মৃত ডলফিনগুলো হলো হাম্পব্যাক ডলফিন। ভারত মহাসাগর ও বঙ্গোপসাগরের অগভীর অঞ্চলে এই প্রজাতির ডলফিনের আধিক্য লক্ষ করা যায়। এদের সামনের চোয়াল বেশ লম্বা এবং ৩০-৩৪টি দাঁত যুক্ত।
কলাপাড়া উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা অপু সাহা বলেন, ঠিক কি কারণে ডলফিনগুলো মারা যাচ্ছে তা সঠিকভাবে বলা যাচ্ছেনা। এ ধরনের ডলফিনগুলো মাছ খেয়ে বেঁচে থাকে। তাই বেশিরভাগ সময় জেলেদের মাছ ধরার জালে আটকে পড়ে মারা যায়। আবার বয়সের কারণেও অনেক সময় এদের মৃত্যু হয়। মৃত্যুর পর ওরা জোয়ারের পানিতে তীরে চলে আসে। এগুলোর কালার নষ্ট হয়ে গেছে, পঁচে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে তাই তাৎক্ষণিক সেগুলো মাটি চাপা দেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
কুয়াকাটা পৌরসভার মেয়র আনোয়ার হাওলাদার জানান, সৈকতে ভেসে আসা মাছগুলো কুয়াকাটা পৌরসভার অধীনে মাটিতে পুঁতে রাখার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
/এসএইচ
Leave a reply