সম্প্রতি পদ্মা সেতুর পিলারের সাথে ফেরির ধাক্কা লাগার বেশকটি ঘটনা সামনে এসেছে। এতে অনেকেই উদ্বিগ্ন হলেও কোনো প্রতিক্রিয়া নেই সেতু কর্তৃপক্ষের। বুয়েটের অধ্যাপক ও দুর্ঘটনা-গবেষণা ইনস্টিটিউটের সাবেক পরিচালক ড. এম শামসুল হক বারবার ঘটতে থাকা এরকম দূর্ঘটনায় হতাশা প্রকাশ করেছেন।
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) এর পুরকৌশল বিভাগের অধ্যাপক ও বুয়েটের দুর্ঘটনা গবেষণা ইনস্টিটিউটের সাবেক পরিচালক ড. এম শামসুল হক বলেন, পদ্মা সেতুর সাথে বারবার এমন ফেরির ধাক্কা লাগার ঘটনা একই সাথে খুবই আশঙ্কাজনক ও দুঃখজনক।
ড. এম শামসুল হক ফেরিচালকদের ব্যাপারে আরও সতর্ক হওয়া উচিত বলে মনে করেন। তিনি বলেন, আমাদের এত বড় ও গুরুত্বপূর্ণ জাতীয় একটি স্থাপনার সাথে লোডেড ফেরির বারবার সংঘর্ষ হচ্ছে এবং তার পুনরাবৃত্তি ঘটছে। এ ব্যাপারটিকে ডেফিনেটলি খতিয়ে দেখতে হবে। কারণ প্রতিটা ধাক্কাই ব্রিজের জন্য ক্ষতির কারণ হতে পারে। যদিও ব্রিজটি যেকোনো ধাক্কা সহনশীল করেই তৈরী করা হয়েছে, তবুও এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি আমাদেরকে মনে করিয়ে দেয় যে এখানে কোনো না কোনো গাফিলতি নিশ্চয়ই আছে।
এসব ঘটনায় ফেরিচালকদের সতর্কতার অভাব আছে বলে মনে করেন ড. এম শামসুল হক। তার মতে, এটা খুবই অবিশ্বাস্য যে এই ঘোর বর্ষা মৌসুমে যেখানে নদীর নাব্যতার কোনো সঙ্কট নেই সেখানে একটা ফেরি দুইটা পিলারের মাঝখান দিয়ে যেতে পারছেনা। এক্ষেত্রে হয় ফেরি চালকের দক্ষতা অথবা নজরদারী বা উভয়েরই অভাব আছে বলে আমি মনে করি।
ফেরিচালকদের পর্যাপ্ত দিকনির্দেশনা দেয়ার ওপর গুরুত্ব দিয়ে ড. এম শামসুল হক বলেন, আমরা যদি সিস্টেম অরিয়েন্টেড ডেভেলপমেন্ট চাই তাহলে, ফেরিচালক ও তাদের সহকারীদের প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণসহ দুটি পিলারের মাঝখান দিয়ে সংঘর্ষবিহীন যাতায়াতে তাদেরকে পর্যাপ্ত দিকনির্দেশনা দিতে হবে। আমি খুবই অবাক হচ্ছি এটা ভেবে যে, এই ফেরি চালকদের জন্য এই রুট মোটেও অপরিচিত নয়। তারা প্রায় প্রতিদিনই এই রুটে একাধিকবার যাতায়াত করে, এরকম পরিচিত জায়গায় বারবার এরকম সংঘর্ষ ঘটানো খুবই আশঙ্কা ও হতাশাজনক।
উল্লেখ্য যে, এই নৌপথে একাধিক ফেরি পদ্মা সেতুর পিলারে এর আগেও ধাক্কা দিয়েছে। গত ২৩ জুলাই সকাল সাড়ে ৯ টায় ফেরি শাহজালাল পদ্মা সেতুর ১৭ নম্বর পিলারে এবং গত ২০ জুলাই ফেরি শাহ মখদুম পদ্মা সেতুর ১৬ নম্বর পিলারে ধাক্কা দেয়। এসব ঘটনায় বিআইডব্লিটিসি তদন্ত কমিটি করেছে, এমনকি শিবচর থানায় জিডি ও করা হয়েছে।
/এসএইচ
Leave a reply