কেন্দ্রীয় কবরস্থানে শ্মশানের পুকুরের মাটি ফেলাকে কেন্দ্র করে গতকাল থেকেই উত্তপ্ত নারায়ণগঞ্জের রাজনৈতিক অঙ্গন। সাংসদ শামীম ওসমান গতকাল তারা পরিবারের সদস্যদেরসহ মুক্তিযোদ্ধা ও অন্যান্যদের কবরের ওপর শ্মশানের পুকুরের মাটি ফেলার ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন। এর মাধ্যমে নারায়ণগঞ্জের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টের অভিযোগ করেন তিনি।
এ ঘটনার প্রেক্ষিতে ‘সাংসদ শামীম ওসমান তার বক্তব্যে প্রকৃত সত্যকে আড়াল করছেন’-মর্মে আজ মঙ্গলবার (১০ আগস্ট) একটি প্রেস বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেন নারায়ণগঞ্জের সিটি মেয়র ড. সেলিনা হায়াত আইভী। তিনি বলেন, সত্যকে আড়াল করে জনাব সংসদ সদস্য সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টের হীন উদ্দেশ্যে এ অভিযােগ ও বিতর্কিত মন্তব্য করেছেন। কিন্তু প্রকৃত সত্য হল, নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য জনাব শামীম ওসমানের স্বজনদের কবরে শ্মশানের মাটি ফেলা হয়নি। যে মাটি দিয়ে কবরস্থান ভরাট করা হয়েছে তার রং সাদা আর শ্মশানের পুকুরের মাটির রং লাল।
বিজ্ঞপ্তিটি নীচে যমুনা নিউজের পাঠকদের জন্য হুবহু তুলে ধরা হলো।
কেন্দ্রীয় কবরস্থানে মাটি ফেলাকে কেন্দ্র করে প্রচার/অপ্রচারের বিষয়ে নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের বক্তব্য নিন্মরূপ:
গতকাল নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সম্মানিত সংসদ সদস্য জনাব এ.কে.এম. শামীম ওসমান সাহেব তাঁর পিতা ও মাতাসহ স্বজনদের কবর জিয়ারত শেষে অভিযােগ করেন যে, তার স্বজনদের কবর শ্মশানের মাটি দিয়ে ঢেকে দেয়া হয়েছে। তিনি আরও বলেন, এটা ইবলিশের কাজ।
কিন্তু প্রকৃত সত্য হল, নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য জনাব শামীম ওসমানের স্বজনদের কবরে শ্মশানের মাটি ফেলা হয়নি। প্রয়াত সংসদ সদস্য নাসিম ওসমানের কবর অপেক্ষাকৃত নিচু। সেখানে পানি জমে থাকার আশংকা করে জনাব পারভীন ওসমান তাঁদের পারিবারিক আত্মীয় জনৈক নাসিরকে মাটি ফেলার জন্য পাঠায়। জনাব নাসির বাইরে থেকে মাটি এনে জনাব শামীম ওসমানের ভাই’সহ স্বজনদের কবর ভরাট করে। এ কাজে নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন কর্তৃক নিযুক্ত কেয়ারটেকার সামসুদ্দিন সহযােগিতা করেছে মাত্র। এখানে বিশেষভাবে উল্লেখ্য যে, জনাব নাসির যে মাটি দিয়ে কবরস্থান ভরাট করেছে, তার রং সাদা। কিন্তু শ্মশানের পুকুরের মাটির রং লাল।
উপরােক্ত সত্যকে আড়াল করে জনাব সংসদ সদস্য সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টের হীন উদ্দেশ্যে এ অভিযােগ ও বিতর্কিত মন্তব্য করেছেন। ইতিপূর্বেও একটি প্রভাবশালী মহল হেফাজতে ইসলামের মাধ্যমে একই ভাবে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট করার অপচেষ্টা করেছে, যা নারায়ণগঞ্জবাসী অবগত রয়েছেন। নারায়ণগঞ্জের কেন্দ্রীয় কবরস্থান এলাকায় পাশাপাশি ৪টি ধর্মের অনুসারীদের দাফন/শেষকৃত্য সম্পন্ন করা হয়; যা সারা বিশ্বে বিরল এবং নারায়ণগঞ্জবাসীর সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির স্বাক্ষর বহন করে। এখানে উল্লেখ্য যে, কবরস্থান ও শ্মশানের জন্য বিশাল এ ভূমি দান করেছেন শ্রী হরকান্ত ব্যানার্জী, পরবর্তীতে সময়ের প্রয়ােজনে এর আয়তন বৃদ্ধি করা হয়েছে। নারায়ণগঞ্জবাসী সবসময় সত্য আর ন্যায়’কে সমর্থন করেছেন। আজকেও আমি পূনরায় সত্য ও ন্যায়ের পক্ষে থেকে মিথ্যা, অপপ্রচার, অন্যায়’কে রুখে দেয়ার উদার্ত আহ্বান জানাচ্ছি এবং এই মিথ্যা, বানােয়াট, ভীত্তিহীন ও উদ্দেশ্য প্রনােদিত অপপ্রচারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ, ঘৃণা ও নিন্দা জ্ঞাপন করছি। নারায়ণগঞ্জবাসীকে আমাদের পাশে থেকে সহযােগীতা করার অনুরােধ জানাচ্ছি।
/এসএইচ
Leave a reply