ইতালিতে ভোট নিয়ে দেশটির নাগরিকদের যতোটা আগ্রহ, তার চেয়ে বেশি দুশ্চিন্তায় অভিবাসীরা। কারণ, নির্বাচনের প্রচারণায় অনেক রাজনৈতিক দলেরই মূল পুঁজি ছিলো অভিবাসনবিরোধী মনোভাব।
নির্বাচনী প্রচারণায় এবার ঘুরেফিরেই আসছে, অর্থনীতির দৈন্যদশা। একটি পক্ষ শুরু থেকেই, নিজেদের দুর্দশার দায় চাপাচ্ছে অভিবাসীদের ওপর।
নানা কেলেঙ্কারিতে বিতর্কিত সাবেক প্রধানমন্ত্রী সিলভিও বারলুসকোনিও, রাজনীতিতে ফিরে আসার মঞ্চ হিসেবে ব্যবহার করছে অভিবাসনবিদ্বেষকে। কট্টরপন্থি দুই দলের সাথে জোট বেঁধে, ঘোষণা দিয়েছেন, অবৈধ অভিবাসীদের বিদায় করার।
নির্বাচনী প্রচারণায় ফোরজা ইতালিয়া সভাপতি বারলুসকোনি বলেন, “নির্বাচনে জয় পেলে সবচেয়ে গুরুত্ব দেবো জাতীয় নিরাপত্তায়। এক্ষেত্রে ৬ লাখ অবৈধ অভিবাসীর ব্যাপারে যা করা দরকার, সবই করা হবে। প্রয়োজনে তাদের নিজ দেশে ফেরত পাঠানো হবে। আর তাদের এদেশে অবৈধ অভিবাসনে সহযোগিতা করেছে যারা, সেই অপরাধীদেরও বিচারের আওতায় আনা হবে।”
সাধারণ জনগণেরও একটি অংশের মধ্যে অভিবাসী বিদ্বেষ প্রবল। এদের একজন বলেন, “সব অভিবাসীকে তো আমরা আশ্রয় দিতে পারি না। কেউ চোরাই পথে এদেশে ঢুকে সব সুবিধা ভোগের চেষ্টা করলে তা আমরা কেন মেনে নেব?”
জনমত জরিপ বলছে, জনসমর্থনের দিক থেকে একক বা জোটগতভাবে অভিবাসনবিরোধী বারলুসকোনির পাল্লাই ভারি। জরিপে তার বিপুল জনসমর্থনে শঙ্কিত দেশটিতে অবস্থান করা অভিবাসীরা। যাদের মধ্যে আছেন লক্ষাধিক বাংলাদেশিও।
এমনই এক উদ্বিগ্ন অভিবাসী জানান, “নির্বাচনের পর নাকি আমাদের আর এদেশে থাকতে দেয়া হবে না। ইতালি সরকারের কাছে সাহায্য চাচ্ছি। সুন্দর ভবিষ্যৎ গড়তে ভিন দেশে পা রেখেছিলাম। আর কোথাও যাওয়ার জায়গা নেই আমাদের।”
“নির্বাচনে জিতলে কি লাখো মানুষের স্বপ্ন ভেঙে দেয়ার অধিকার পাওয়া যায়? মানুষ অভিবাসীদের এতো ভয় পায়, যেন এটাই তাদের একমাত্র সমস্যা।”
বরাবরই ‘অভিবাসীবান্ধব’ হিসেবে পরিচিত ইতালিতে বর্তমানে বৈধভাবে বাস করছে ৫০ লাখের বেশি অভিবাসী; যা দেশটির মোট জনসংখ্যার ৮ ভাগ। বিশ্বের বিভিন্ন সংঘাত কবলিত অঞ্চল থেকে পলায়নরত মানুষের অন্যতম গন্তব্যও ইউরোপের এ দেশটি। পরিসংখ্যান বলছে, গেল চার বছরে অবৈধ পথে ইতালি পৌঁছেছে ছয় লাখ মানুষ।
Leave a reply