কোটিপতি কবুতর! এটা কি সম্ভব! রাতের ঘুম হারাম করে, মাথার ঘাম পায়ে ফেলে, গোসল খাওয়া-দাওয়া ভুলে রাত দিন উপার্জন করেও কোটিপতি হওয়া ভারতের বেশিরভাগ মানুষের কাছেই আকাশ কুসুম কল্পনা। অথচ টাকার মূল্য না বুঝেই কোটিপতি এক কবুতরে দল!
ভারতে এমন এক জায়গা আছে যেখানে সব কবুতরই কোটিপতি। তাদের নামে আছে বিঘা বিঘা জমি, ব্যাংকে সেভিংস অ্যাকাউন্ট এবং সেই অ্যাকাউন্টে লাখ লাখ টাকাও আছে।
রাজস্থানের নাগৌর জেলার একটি শহর যশনগর। কোটিপতি কবুতরে বসবাস ওই যশনগরেই।
৪০ বছর আগে যশনগরের এক শিল্পপতি কবুতরের নামে একটি ট্রাস্ট চালু করেন। ট্রাস্টের নাম রাখেন ‘কবুতর ট্রাস্ট’। সামর্থ্য অনুযায়ী যে কেউ স্বেচ্ছায় এই ট্রাস্টে দান করতে পারেন।
এই ৪০ বছর ধরে পাখিপ্রেমী শিল্পপতি থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষ নিজেদের সামর্থ্য অনুযায়ী দান করে আসছেন এই ট্রাস্টে। অল্প অল্প করে টাকা জমতে জমতে কোটিপতি হয়ে উঠেছে ওখানকার কবুতরগুলো।
কবুতরের প্রতি ভালোবাসা থেকে ওই ট্রাস্ট প্রথম চালু করেছিলেন শিল্পপতি সজ্জনরাজ। তার পর বংশ পরম্পরায় প্রতিষ্ঠানটির দায়িত্ব নিয়ে কাজকর্ম এগিয়ে নিয়েছে তার পরিবার। সজ্জনরাজ এই কাজে পাশে পেয়েছিলেন সে সময়ের পঞ্চায়েত প্রধান রামদিন চোটিয়া এবং তার গুরু মরুধর কেশরীকে। কবুতরের গুরুত্ব বুঝিয়ে তাদের দেখভাল করার জন্য গ্রামবাসীদের অনুপ্রাণিত করেছিলেন প্রধানত এই দু’জন।
গ্রামবাসী কেউ কবুতরের জন্য খাবারের ব্যবস্থা করতেন, কেউ সামর্থ্য অনুযায়ী টাকা দিতেন কবুতর ট্রাস্টে। পাশাপাশি শিল্পপতিদের বড় অঙ্কের দান তো আছেই।
এ ভাবে একটু একটু করে জমতে জমতে কবুতর ট্রাস্টের টাকার পরিমাণ কোটির অঙ্ক ছাড়িয়ে গেছে। কবুতরের নামে ২৭টি দোকান রয়েছে। সেই দোকান ভাড়া দিয়েই প্রতি মাসে ট্রাস্টের আয় ৮০ হাজার রুপি।
এর পাশাপাশি আছে ১২৬ বিঘা জমি। ১০ বিঘা জমিতে প্রতিষ্ঠিত ৪০০টি গোশালার মালিকও এই কবুতরগুলো। ৩০ লাখ রুপি রয়েছে ব্যাংকে। এই টাকা থেকে প্রতি দিন তিন বস্তা খাবারের ব্যবস্থা করা হয় কবুতরগুলোর জন্য।
সূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা
Leave a reply